1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানি ইউরোপের প্রেমের সাড়া পেয়ে উচ্ছ্বসিত

৩০ মে ২০১০

প্রায় তিন দশক পরে আবার ইউরোভিশন সং কন্টেস্টে জিতে জার্মানির মানুষ বাজি পুড়িয়ে, রাস্তায় রাস্তায় পার্টি করে উত্তাল৷ এ্যাতোদিনে যেন ইউরোপের মানুষ জার্মানদের ভালোবাসতে শিখেছে৷

https://p.dw.com/p/NdBu
জার্মানি সম্পর্কে ইউরোপের ধারণা পাল্টে দিল এই মেয়েটিছবি: EBU

শনিবার স্থানীয় সময় রাত বারোটা নাগাদ লেনা মায়ার-লান্ডরুটের জয় নিশ্চিত হয়৷ তারপরে জার্মানিতে যে উল্লাসের ঝড় বয়ে যায়, তা একমাত্র জার্মানি বিশ্বকাপ ফুটবল জেতার পরই সচরাচর দেখা যায়৷ অর্ধেক জার্মানি হ্যানোভারের যে ১৯ বছরের তরুণীটির প্রেমে পড়ে গিয়েছে, তার বিজয়ে উল্লাস স্বাভাবিক৷ কিন্তু এই উল্লাসের আর একটা গভীর কারণ হল মনস্তাত্ত্বিক৷

লেনার জয়ে জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় রবিবারের ট্যাবলয়েড ‘বিল্ড আম জোন্টাগ'-এর প্রথম পাতায় শীর্ষক ছিল: ‘‘ইউরোপ আমাদের সত্যিই পছন্দ করে!'' এখন প্রশ্ন হল, ইউরোপ যে জার্মানি অথবা জার্মানদের পছন্দ করে না, এ'ধারণাটা এদেশে হল কি করে? তার একটা মূল কারণ কিন্তু ছিল এই ইউরোপীয় গানের প্রতিযোগিতায় জার্মান প্রতিযোগীদের ব়্যাংকিং৷

২০০৫ সালে জার্মানরা ছিল ২৪ নম্বর স্থানে৷ ২০০৬ সালে ১৫-য়৷ ২০০৭-এ ১৯ নম্বরে৷ ২০০৮-এ ২৩ নম্বরে এবং ২০০৯-এ বিশ নম্বরে৷ এর মধ্যে ২০০৮ সালেই সবচেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছে জার্মানরা, কেননা সে'বছর তারা পাঠিয়েছিল তাদের টপ গার্ল গ্রুপ ‘‘নো এঞ্জেলস''-দের৷ তারাও ভোটে অংশগ্রহণকারী ৪২টি দেশের মধ্যে ৪০টি দেশের কাছ থেকে একটি পয়েন্টও পায়নি৷ ঐ বিল্ড পত্রিকাই তখন তাদের প্রথম পাতায় প্রশ্ন তোলে: ‘‘আমাদের কেউ পছন্দ করে না কেন?''

চেতনে কিংবা অবচেতনে জার্মানদের মনে সে প্রশ্নের উত্তর ছিল: জার্মানিকে দু'দুটি বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত করা হয় বলে; জার্মান ট্যুরিস্টরা অপরাপর দেশে গিয়ে রূঢ় আচরণ করে বলে; জার্মানির সমৃদ্ধির জন্য অন্যরা তাদের হিংসে করে বলে; এক এলাকার, কিংবা এক রাজনৈতিক কি অর্থনৈতিক জোটের দেশগুলি পরষ্পরকে পয়েন্ট দিয়ে থাকে বলে৷

এবার লেনা মায়ার-লান্ডরুটের জয়ই শুধু নয়, সে যে পরিমাণ পয়েন্ট নিয়ে জয়ী হয়েছে, সেটাও জার্মানদের চমকে দিয়েছে৷ আর লেনা শুধু তার গান কিংবা গলার উৎকর্ষেই জেতেনি৷ লেনা জিতেছে সারা ইউরোপের মানুষ তাকে ভালোবেসেছে বলে৷ নয়তো অতীতে সে অল্প নাচ শিখেছে আর স্কুল ব্যান্ডের সঙ্গে একবার দু'বার গেয়েছে৷ তাহলে সেই মেয়ে ইউরোভিশন সং কন্টেস্ট জেতে কিভাবে?

কে জানে, ইউরোপ হঠাৎ জার্মানদের ভালোবেসে ফেলেছে, না এই অসাধারণ সাধারণ মেয়েটিকে, যে তার বয়সসুলভ হাসি, খুশী, উচ্ছলতা, প্রাণচঞ্চলতায় ভরা নাচগান দিয়ে জাতি-দেশ-স্বার্থের সব পার্থক্যকেই ক্ষণিকের জন্য ভুলিয়ে দিতে পেরেছে?

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: জাহিদুল হক