1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান পত্রিকায় দক্ষিণ এশিয়া

২০ জুন ২০১০

আফগানিস্তানে তালেবান জঙ্গিদের অব্যাহত হামলা, ভারতের একাধিক রাজ্যে ‘অনার কিলিং’, এই বিষয় দুটি জার্মান পত্রপত্রিকায় স্থান করে নিয়েছে নানা বিষয়ের মধ্যে৷

https://p.dw.com/p/NxoY
আফগানিস্তানের কান্দাহারে বিয়ের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয় গত সপ্তাহেছবি: AP

তালেবান জঙ্গিরা যে এখনও বড় রকমের হামলা চালাতে সক্ষম তার প্রমাণ পাওয়া গেছে গত কয়েকদিনের দুটি খবরে৷ হেলমন্দ্ এলাকায় তারা গুলি চালিয়ে একটি মার্কিন হেলিকপ্টার ভূপাতিত করলে চারজন মার্কিন সৈনিক নিহত হয়৷ অসামরিক মানুষরাও তাদের সন্ত্রাস থেকে রেহাই পাচ্ছেনা৷ কান্দাহার অঞ্চলে সন্দেহভাজন এক আত্মঘাতী হামলাকারী এক বিয়ের আসরে তার দেহের সঙ্গে বাঁধা বোমায় বিস্ফোরণ ঘটালে বহু শিশু আর নারী সহ ৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়৷ পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা দপ্তর আইএসআই প্রতিবেশী দেশে তালেবান জঙ্গিদের সমর্থন যোগাচ্ছে বলে মনে করে দৈনিক ‘ডি ভেল্ট' পত্রিকা৷ পত্রিকা লিখছে:

আফগানিস্তানে লড়াই তুঙ্গে উঠছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধি করেছে এবং তার কৌশলও পাল্টে ফেলেছে৷ তবে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতার কারণে নতুন কৌশল আদৌ কাজ করছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ক্রমেই জোরদার হচ্ছে৷ কেননা জঙ্গিরা তাদের প্রতিরোধের প্রবল ক্ষমতার পরিচয় দিয়ে চলেছে৷ প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান থেকে ব্যাপক সমর্থনও তার একটি কারণ৷ লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স-এর সদ্য প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এই তথ্য ফাঁস হয়েছে যে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা দপ্তর আইএসআই তালেবান জঙ্গিদের সমর্থন যোগাচ্ছে, যতটা জানা যায়, তার চেয়ে অনেক বেশি৷ এলএসআই-এর এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আইএসআই জঙ্গিদের অর্থ, অস্ত্র আর প্রশিক্ষণ সরবরাহ করছে, দিচ্ছে সুরক্ষা৷ সমীক্ষার প্রণেতা, অ্যামেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাট ওয়াল্ডম্যান মনে করেন, জঙ্গিদের কৌশলী সিদ্ধান্ত আর অপারেশনের ওপর পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সার্ভিস আইএসআই ‘‘বড় রকমের প্রভাব'' রাখছে৷

ভারতে বিশেষ করে ঐ দেশের উত্তরাঞ্চলে এখনও ঘটে থাকে ''অনার কিলিং'' - পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে হত্যা৷ প্রতি বছর পাঞ্জাব, হরিয়ানা আর উত্তর প্রদেশে পরিবারের সম্মান নষ্ট করার দায় তুলে বহু তরুণ যুগলকে হত্যা করে তাদের পরিবারের লোকরাই, লিখেছে দৈনিক ফ্রাংকফুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং৷ বিষয়টির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে পত্রিকা লিখছে:

বহু ক্ষেত্রে গ্রামের পঞ্চায়েতই এ ধরণের কাজ অনুমোদন করে অথবা নি:শব্দে তা মেনে নেয়৷ বহুকাল বিষয়টি সমাজে টাবু হয়ে ছিল৷ তবে আজকের দিনে মিডিয়ায় এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের খবর বেশি প্রকাশ পায়৷ বিশেষ করে দিল্লি শহরে কিছু অনার কিলিং-এর ঘটনার ওপর দৃষ্টি পড়েছে অনেকের৷ সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, সঙ্কীর্ণতামুক্ত জীবনধারা এবং পিছিয়ে থাকা সনাতন ঐতিহ্যের মধ্যকার সংঘাতই এর কারণ৷ সমাজের শত শত বছরের পুরনো মূল্যবোধগুলোকে চ্যালেঞ্জ করছে নবীন প্রজন্ম৷ এতদিন পরিবারের প্রধানরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সব ব্যাপারে৷ কিন্তু তরুণ ভারতীয়রা আজ সুশিক্ষিত৷ নিজেদের জীবনে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তগুলো নিতে চান তাঁরা নিজেরাই৷ অনার কিলিং সনাতন মূল্যবোধ ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার মুখে একটি পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থার অসহায় প্রত্যুত্তর যেন৷

ভাষান্তর: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন