1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জিন ডোপিং, সে আবার কি?

৪ সেপ্টেম্বর ২০১০

আধুনিক খেলাধুলার সঙ্গে ডোপিং-এর একটা অশুভ সম্পর্ক রয়েছে৷ সর্বাধুনিক ডোপিং এবার জিন বেয়ে আসবে, এবং ডিএনএ’তেই ধরা পড়বে৷ চুরি এবং চোর ধরার পদ্ধতির আবিষ্কার ঘটেছে প্রায় একত্রে৷

https://p.dw.com/p/P460
১৯৮৭ সালে ডোপিং-এর ফলে মারা যান পশ্চিম জার্মান হেপ্টাথলন এ্যাথলীট বির্গিট ড্রেসেলছবি: AP

পার্ফর্মেন্স বাড়ানোর জন্য ডোপিং, সে তো আমরা অনেক দিন ধরে জানি৷ স্টেরয়েডস ছেড়ে ব্লাড ডোপিং, অর্থাৎ ‘ইপো' এবং তার আধুনিকতম সংস্করণ ‘সেরা', সে সব কেলেঙ্কারিও পার হওয়া গেছে৷ কিন্তু সর্ষের মধ্যে ভূত ঢোকানোর পদ্ধতি তো একটা নয়৷

এই ধরুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা পেশীর হানি ঘটায়, এমন সব রোগের জন্য একটি জেনেটিক ট্রিটমেন্টের খোঁজ করছিলেন৷ তাঁরা ফলিস্ট্যাটিন প্রোটিনের জন্য একটি মানব ট্রান্সজিন ছ'টি বাঁদরের পায়ের পেশীতে ইনজেক্ট করেন৷

ফল হয়, বাঁদরদের পায়ের পেশীর আকার, আয়তন এবং শক্তি স্থায়ীভাবে বেড়ে যায়৷ এক ধরণের এ্যাথলীটদের কাছে এ'খবর পৌঁছলে তাদের মাথায় নানা ধরণের কুমতলব আসতে পারে - অর্থাৎ জিন ডোপিং৷ জিন ব্যবহার করে শরীরে ‘ইপো' হর্মোনের উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে, সুগার কিংবা লিপিড মেটাবলিজমের পরিবর্তন ঘটিয়ে দম এবং সহ্যশক্তি বাড়ানো যেতে পারে৷

মুশকিল এই যে, জার্মানির ট্যুবিঙ্গেন এবং মাইঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জিন ডোপিং-এর একটি টেস্ট বার করে ফেলেছেন৷ তাঁরা গত পরশু, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সেই পরীক্ষাটি সরকারিভাবে পেশ করেন এবং টেস্টটিকে ‘জিন থেরাপি' পত্রিকায় অনলাইনে প্রকাশও করেন৷ রক্তের পেরিফেরাল নমুনায় ট্রান্সজিনিক ডিএনএ'র হদিশ আছে কি নেই, তা' থেকেই জিন ডোপিং ধরা পড়বে, বলছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷ এমনকি এই পরীক্ষার দামও খুব বেশী হবে না৷

কাজেই আইওসি'র ভাইস প্রেসিডেন্ট থমাস বাখ খুবই খুশী৷ তিনি বলেছেন যে, ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকেই এই নতুন টেস্টটি ব্যবহৃত হতে পারে৷ - প্রসঙ্গত, বিশ্ব ডোপিং প্রতিরোধী সংস্থা ‘ওয়াডা' ঐ জার্মান গবেষণায় প্রায় দশ লক্ষ ডলার প্রদান করেছে৷

ওদিকে জার্মান ডোপিং বিশেষজ্ঞরা কিন্তু ইতিমধ্যেই আনন্দে আত্মহারা নন৷ কেউ বলছেন, উচ্চ পার্ফর্মেন্স স্পোর্টসে জিন ডোপিং-এর এযাবৎ কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই৷ এবং ঐ এক টেস্টেই সব ধরণের জিন ডোপিং ধরা পড়বে না৷ আবার অন্যরা বলছেন, জিন ডোপিং সম্ভবত ইতিমধ্যেই চলেছে, কিন্তু এ্যাথলীটদের জানা দরকার যে, এর মাধ্যমে তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন৷ জিন ডোপিং হচ্ছে স্টেম সেল থেরাপির মতো: বিশেষজ্ঞরাই একমাত্র স্টেম সেল ইমপ্ল্যান্ট করতে জানেন৷ নয়তো জীবনের ঝুঁকি৷ সেই ভয়টাই হয়তো এ'ধরণের ডোপিং-এর সেরা প্রতিষেধক৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা