1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জীবন্ত বাঁধ'

ক্রিস্টিয়ান উলিশ/এসি১১ ডিসেম্বর ২০১৪

দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ডের চাষিরা ধানচাষ ছেড়ে ফলচাষি হয়েছেন৷ মোটর সাইকেলে চড়ে ফলের বাগানে যান৷ নদী থেকে সেঁচের জল তোলার জন্য তারা দেন ‘জীবন্ত বাঁধ', যা কিনা বাঁশ গোত্রীয় নানা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি৷

https://p.dw.com/p/1E27z
Pflaumenbaum
ছবি: imago/blickwinkel

নাখোন সি থামারাত শহরে সকাল হয়েছে৷ শহরের প্রখ্যাততম মন্দিরটির মাথায় এখনও পাণ্ডুর চাঁদ লেগে রয়েছে৷ বৌদ্ধ মন্দিরটিতে ভগবান বুদ্ধের একটি দাঁত রাখা রয়েছে – বৌদ্ধ ভিক্ষুরা সেটিকে পাহারা দেন৷ ঠিক একই সময় শহরের কাছের একটি গ্রামে চাষি ওয়ানচার্ট সামদাং নিজের কাজে বেরোচ্ছেন৷ বাড়ি থেকে তাঁর ফলের বাগানটির দূরত্ব সাত কিলোমিটার৷

দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ডের চাষিদের মধ্যে খুব কমজনই আজকাল ধানচাষ করেন৷ তাঁরা সকলেই মোটামুটি সবজি আর ফলের চাষে মন দিয়েছেন৷ সামদাং বলেন: ‘‘এখানে আমি যে সব ফলের চাষ করি, তার মধ্যে দু'টি হলো এই ম্যাঙ্গোস্টিন আর ডুরিয়ান – খেতে খুব ভালো, কিন্তু একটু গন্ধ আছে৷ দু'টোই খুব ভালো বিক্রি হয়৷ ম্যাঙ্গোস্টিন-এর দাম কিলো প্রতি ১২০ বাট, ডুরিয়ান-এর ৬০ বাট৷'' অর্থাৎ কিলো প্রতি তিন কিংবা দেড় ইউরো৷

পরিবেশ-বান্ধব বাঁধ

ওয়ানচার্ট-এর আসল সমস্যা হলো সেচের পানি৷ গরমের শেষে জল পাওয়া শক্ত৷ ওয়ানচার্ট দেখালেন: ‘‘এটা আমার পানি ধরে রাখার চৌবাচ্চা৷ বর্ষায় নিজে থেকেই পানিতে ভরে যায়৷ ঢাল বেয়ে পানি নেমে ফলের গাছগুলোতে পানি দেয়৷ গরমের সময় আমাকে নদী থেকে পানি তুলতে হয়৷ সেই পানি নল দিয়ে এখানে নিয়ে আসা হয়৷''

সেচের পানির প্রয়োজন সব চাষির, কাজেই গাঁয়ের চাষিরা সবাই মিলে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন৷ তারা জার্মান উন্নয়ন সাহায্য সংগঠন জিআইজেড-এর সহযোগিতায় নদীতে একটি বাঁধ দিচ্ছেন৷ সেই বাঁধে নদীর স্রোত কিছুটা কমবে৷ মাটি ফেলার বস্তাগুলো প্লাস্টিকের নয়, বরং মানিওক ওলের মাড় থেকে তৈরি, কাজেই ওগুলো পরিবেশের হানি করে না৷ ওয়ানচার্ট বলেন: ‘‘আমাদের পানির সমস্যা সমাধানের এই পরিকল্পনা বস্তুত সব গ্রামবাসীর৷ ইতিপূর্বে আমরা সিমেন্ট দিয়েও চেষ্টা করেছি৷ কিন্তু সিমেন্ট তো একটা প্রাণহীন পদার্থ, পানিতে নষ্ট হয়ে যায়৷ সেই কারণে আমরা বাঁশ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক পদার্থ ব্যবহার করি আর আমাদের বাঁধকে বলি ‘জীবন্ত বাঁধ'৷''

বাঁধ দেওয়ার ফলে নদীর স্রোত কমে যায়৷ ফলে আরো বেশি পানি চুঁইয়ে প্রকৃতিকে ভরপুর করে তুলতে পারে৷ বাঁধের কিনারায় কিছু কিছু গাছের চারা লাগানো হয়েছে – পরে তাদের শিকড় নদীর বাঁধটাকে আরো স্থিতিশীল করবে৷

একসঙ্গে কাজ করার ফলে গ্রামের মানুষদের অভ্যন্তরীণ সংহতিও বৃদ্ধি পেয়েছে৷ সবাই খুশি মনেই এখানে কাজ করেন৷ দুপুরের দিকে নদীর বাঁধ খালি হয়ে আসে৷ ওয়ানচার্ট সামদাং ঘুরে ঘুরে দেখছেন, কাজ কতটা এগিয়েছে: ‘‘আমরা গত বসন্তে এই বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করেছি, ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ কাজ হয়ে গেছে৷ বছর শেষ হবার আগেই আমাদের বাঁধও শেষ হয়ে যাবে, বলে আমার ধারণা৷ তখন থাড়ি নদীর তীরের সব গ্রাম আমাদের ‘জীবন্ত বাঁধ' থেকে উপকৃত হবে৷'

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য