1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ছেপে' নিলেই তো হয়!

মার্টিন রিবে/এসি২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ভেষজ বা প্রসাধন তৈরির জন্য প্রতিবছর পরীক্ষাগারে কোটি কোটি ইঁদুর, খরগোশ ও কুকুর প্রাণ দিয়ে থাকে৷ কিন্তু জীবশরীরের টিস্যু ‘মুদ্রণ' বা ‘প্রিন্ট' করে তার ওপর ঠিক একই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো যায়, বলছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/1EUFm
Tierversuche
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Förster

প্রতিবছর ১০ থেকে ৩০ কোটি মেরুদণ্ডী প্রাণী ল্যাবোরেটরির এক্সপেরিমেন্টে প্রাণ হারায়৷ বিশেষ করে ইঁদুর, সেই সঙ্গে খরগোশ ও কুকুর জাতীয় প্রাণীদের নতুন ওষুধ কিংবা চিকিৎসা পদ্ধতি পরীক্ষা করার কাজে ব্যবহার করা হয়৷ তারপর তাদের মেরে ফেলে, কেটেকুটে অনুসন্ধান করে দেখা হয়৷

জীবজন্তু নিয়ে পরীক্ষা বহুক্ষেত্রে আবশ্যক হতো না, যদি সেগুলি কোষ অথবা হিস্টয়েড, অর্থাৎ জীবশরীরের কোষসমষ্টি নিয়ে করা যেত৷ ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারফেসিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বা আইজিবি-র ড. বর্শার্স বলেন: ‘‘আমরা জীবশরীরের টিস্যু ‘মুদ্রণ' বা ‘প্রিন্ট' করতে চাই৷ কারণ আমরা পরীক্ষাগারে জীবজন্তু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিকল্প সৃষ্টি করতে চাই৷ রাসায়নিক, প্রসাধন দ্রব্য ইত্যাদি আজও প্রায়ই জীবজন্তুদের উপর পরীক্ষা করা হয়৷ তাই কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করা গেলে ভালো হতো৷ এছাড়া যে সব রোগীর টিস্যুতে কোনো খুঁত রয়েছে, ভবিষ্যতে তাঁদের জন্য বিকল্প টিস্যুও তৈরি করা যেতে পারে৷''

Tierversuche
ছবি: imago

‘ছাপার' কালি

‘বিও-টিনটে', মানে ‘বায়োলজিকাল কালার' বা ‘জৈবিক রং'-এর মুখ্য উপাদান হলো জেলাটিন৷ এটি সাধারণত একটি জেলি, যা দিয়ে মুদ্রণ করা সম্ভব নয়৷ তাই একে মুদ্রণের উপযোগী করে তোলার জন্য জেলি করার প্রক্রিয়াটিকে রাসায়নিকভাবে বদলে নিতে হয়, যাতে ছাপার সময়ে জেলাটিন তরলই থাকে৷ এছাড়া জীবন্ত কোষের সঙ্গে এই জেলাটিন যোগ করা হলে, সেটা যাতে কোনো ক্ষতি না করে – সেটাও দেখতে হবে৷ ড. বর্শার্স বলেন:

‘‘‘বায়ো-কালার'-কে কোষগুলোর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে, জীবন্ত কোষগুলি যে পরিবেশে থাকে, তার সঙ্গে মানানসই হতে হবে একে৷ এই জীববিজ্ঞানগত শর্তগুলোর সঙ্গে রয়েছে প্রযুক্তিগত শর্ত: যেমন ঐ ‘জৈবিক রং' প্রিন্টার বা মুদ্রণযন্ত্রে ব্যবহারের উপযোগী হওয়া চাই; তার ঠিক সেই পরিমাণ ঘন হতে হবে, জেলি হয়ে গেলে চলবে না, আবার একেবারে তরল হয়ে গেলেও চলবে না৷''

হাড় থেকে শুরু করে চর্বি

বিজ্ঞানীরা এই জেলাটিনকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে এমনভাবে বদলে নিতে পারেন, যাতে তা থেকে সৃষ্ট জেল বিভিন্ন ঘনত্বের হতে পারে এবং বিভিন্নভাবে সম্প্রসারিত করা চলে৷ জীবশরীরের স্বাভাবিক টিস্যুতেও ঠিক এই দু'টি বৈশিষ্ট থাকে: শক্ত হাড় থেকে শুরু করে নরম চর্বি পর্যন্ত৷ স্টুটগার্টের ল্যাবোরেটরিতে রাখা প্রিন্টারগুলো অফিসে রাখা সাধারণ প্রিন্টারের মতোই: কার্ট্রিজ থেকে শুরু করে নজল অবধি৷ তা সত্ত্বেও কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ তফাৎ আছে৷ ড. বর্শার্স বলেন:

‘‘কার্ট্রিজে হিটিং লাগানো আছে, যাতে কালির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়৷ আর প্রিন্টারে একটা ‘আল্ট্রাভায়োলেট' বা অতিবেগুনি রশ্মির ল্যাম্প লাগানো আছে, যা দিয়ে কালিগুলোর ক্রস-লিংকিং সম্ভব৷ এছাড়া শীততাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়৷ এ সব এমন জিনিস, যা অফিসের প্রিন্টারে কাজে লাগে না৷''

জেলাটিনকে যদি এখন – ধরা যাক – শিরা বা ধমনীর জীবন্ত কোষের সঙ্গে মেশানো হয়, তাহলে এই বায়োকলর বা জৈবিক রং দিয়ে এবার মুদ্রণ করা যাবে৷ মুদ্রিত কোষগুলি মিলে পরে ধমনী অথবা শিরা সৃষ্টি করবে, যা আশেপাশের টিস্যুকে পুষ্টি জোগাবে৷ অতিবেগুনি আলো তরল জেলাটিনকে আবার ঘন জেলির মতো করে তোলে, যা কোষগুলির বৃদ্ধির জন্য একটি স্থান বা কাঠামো সরবরাহ করে৷ ড. বর্শার্স বলেন যে, দীর্ঘমেয়াদি সূত্রে বিজ্ঞানীরা চান:

‘‘কার্টিলেজ বা উপাস্থি গড়তে – যা স্তরের উপর স্তর বসিয়ে তৈরি করতে হয়৷ আমরা হাড় তৈরি করতে চাই – যা একটি অতীব জটিল টিস্যু – এবং একটি রক্তপ্রবাহ প্রণালী৷ আমরা ত্বকের উপরের স্তরগুলিকে সাবকিউটেনাস ফ্যাট, অর্থাৎ ত্বকের নীচের মেদের সঙ্গে সমন্বয় করতে চাই৷''

বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো: একটি কার্যকর ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ প্রক্রিয়া আবিষ্কার করা, যা শরীরের যাবতীয় কোষ সহ এই জেলাটিনকে একাধিক স্তরে ‘মুদ্রণ' বা ‘প্রিন্ট' করতে পারবে৷ পরে যখন জেলাটিন শক্ত হয়ে আসবে, তখন জটিল সব টিস্যু গঠিত হবে – কোষগুলি নিজেদের সেইভাবে সাজিয়ে নেবার ক্ষমতা রাখে বলে৷ এভাবে একদিন পরীক্ষাগারে প্রাণীহত্যার আর কোনো প্রয়োজন পড়বে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান