1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেনেভায় মৃত্যুদণ্ড বিরোধী বিশ্ব কংগ্রেস, সমালোচিত চীন

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০

বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য জেনেভায় ‘মৃত্যুদণ্ড বিরোধী বিশ্ব কংগ্রেস’ শুরু হয়েছে বুধবার৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, বিশ্বের ৯৩ শতাংশ মৃত্যুদণ্ডই হয়ে থাকে চীন সহ পাঁচটি দেশে৷

https://p.dw.com/p/MAbK
চীনের প্রায় ৮০ থেকে ৯৫ ভাগ মানুষ মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করেনছবি: AP

চীনের আইনে ৬৮টি অপরাধের কারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে৷ কিন্তু পরিসংখ্যান ছাড়া সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অন্য কিছু বলাটা কঠিন৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আনু কুলতালাথি যেমন ব্যাখ্যা করছিলেন, ‘‘বাকি বিশ্বে মোট মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যার চেয়ে চীনের একক মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা এখনও বেশি৷ এটা সত্যি যে চীনে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি গোপনীয়তার বেড়াজালে মোড়ানো এবং মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টিকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা হিসেবে রক্ষা করা হয়৷''

চীন দাবি করে থাকে, সেদেশে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমে এসেছে এবং এখন এ ধরণের সব রায়কেই সর্বোচ্চ জনআদালতের অনুমোদন পেরিয়ে যেতে হয়৷ কিন্তু এটা যাচাই করা সম্ভব নয়৷

চীনের অনেক জনজরিপেই দেখা গেছে ৮০ থেকে ৯৫ ভাগ মানুষ মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করেন৷ কিন্তু, জার্মানির ‘বিদেশি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিষয়ক মাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট' এর ডিট্রিশ ওবারভিটার বলছেন, তার গবেষণাই চীনে প্রথম নিয়মতান্ত্রিক জনসমীক্ষা এবং এতে ভিন্ন ফলাফল দেখা গেছে৷

ডিট্রিশ বলছিলেন, ‘‘জরিপে অংশগ্রহণকারীরা কেবলমাত্র চারটি অপরাধের কারণেই মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে কথা বলেছেন৷ এই চারটি অপরাধ হল - হত্যা, ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে মারাত্মক আহত করা, মাদক ব্যবসা এবং নারীর ওপর যৌন নিপীড়ন৷ এছাড়া অন্যান্য যে বহু অপরাধের কারণে চীনে এখনও মৃত্যুদণ্ড প্রচলিত রয়েছে সেগুলোকে যথাযথ মনে করেন না সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণই৷ তাই বিষয়টি এমন নয় যে সব চীনারাই অত্যন্ত রুঢ়, বরং এ বিষয়ে তাদের ভিন্ন অভিব্যক্তি রয়েছে৷''

China Todesstrafe
চীনের আইনে ৬৮টি অপরাধের কারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান আছেছবি: picture-alliance/dpa

চীনের তিনটি প্রদেশে প্রায় ৪,৫০০ মানুষের ওপর এই জরিপ চালানো হয়৷ ২০০৯ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত এই জরিপের ফল অনুযায়ী সাধারণভাবে চীনে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে ৫৮ ভাগ মানুষের সমর্থন রয়েছে৷

ডিট্রিশ জানান, ‘‘আপনি এটা বলতে পারেন না যে, এটা পশ্চিমা বিশ্বের যে কেনো দেশ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা৷ যেমন আমরা সবসময়ই শুনি যে এশীয় মানুষরা অন্যরকম, তারা অনেক বেশি কঠিন শাস্তির পক্ষে৷ এই ফলাফল বলছে তা পশ্চিমা বিশ্বের জনগণের ওপর চালানো অন্যান্য জরিপের মতো কমবেশি একই রকম৷''

‘চীনে মৃত্যুদণ্ড: ইতিহাস, আইন এবং বর্তমান চর্চা' শিরোনামে একটি বইয়ের লেখক এবং সমাজকর্মী টন হং বলছিলেন, ‘‘এর পক্ষে সমর্থনের বিষয়টি আসলে ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক কারণে৷ অনেকাংশে তা এমন যে, চীনা সমাজ বরাবরই ছিল একটি সামষ্টিক সমাজ৷ সবসময়ই তারা ব্যক্তির অধিকারের চেয়ে সমষ্টির স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছে৷ অন্য একটি কারণ হয়তো এমন যে, চীনা সমাজ এখন যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেখানে স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রশ্নে তারা কঠোর আইন চায়৷''

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক