1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সরকার ইঙ্গিত দিলেই পাক সেনাদের তদন্ত

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৩ জানুয়ারি ২০১৭

যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সেনাদের অপরাধ তদন্তে প্রস্তুত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ সরকার ইঙ্গিত দিলেই শুরু হবে তদন্ত৷ তবে এখনও সরকারের কাছ থেকে সে ধরনের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি বলে জানান অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত৷

https://p.dw.com/p/2WGIv
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি
ছবি: DW/M. Mamun

তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, দেশি যুদ্ধাপরাধীদের তদন্ত করতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের অপরাধের কিছু তথ্য-উপাত্ত তাদের হাতে চলে এসেছে, যা তারা সংরক্ষণ করছেন৷ তবে এ মুহূর্তে তদন্ত শুরু হয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বাঙালি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে৷

আব্দুল হান্নান খান জানান, অন্তত দু'জন বাঙালি সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে৷ এদের মধ্যে শহীদুল্লাহ নামে একজনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে৷ এছাড়া আরো একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হচ্ছে৷ তার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে৷ তাদের বাড়ি রংপুরে৷

আব্দুল হান্নান খান

বলা বাহুল্য একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে সাতবছর আগে ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর, এই প্রথম কোনো সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলো৷ একাত্তরের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালি নিধন শুরুর পর প্রতিরোধ যুদ্ধে বাঙালি অনেক সেনা সদস‌্য যুক্ত হয়েছিলেন৷ তবে পাকিস্তানেও আটকা পড়েন অনেক সেনা কর্মকর্তা৷ একাত্তরে বেসামরিক রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর পাশাপাশি বাঙালি সেনা সদস‌্যদের কেউ কেউ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হয়ে স্বজাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিলেন৷

আব্দুল হান্নান খানের কথায়, ‘‘একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি কর্মকর্তাদের সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি৷ এদের অনেকেই পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মিলে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত হন৷'' তিনি বলেন, একটি ঘটনা আমরা জেনেছি....ঐ সময় রংপুরে একটি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল৷ সেখানে কয়েকজন বাঙালি অফিসারের সম্পৃক্ততা ছিল৷ এ বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ হয়েছে জানিয়ে হান্নান খান জানান, দু'জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, অপরজন পলাতক৷

বিষয়টি তদন্তাধীন বলে এ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি তদন্ত সংস্থার প্রধান৷ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার নিষ্পত্তির পর এ পর্যন্ত ছ'জনের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে৷ এরা সবাই রাজনীতিক – পাঁচজন জামায়াতে ইসলামীর নেতা, একজন বিএনপির৷ এছাড়া আর যারা দণ্ডিত, তারাও জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগের নেতা৷

রানা দাশগুপ্ত

অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত এ বিষয়ে বলেন, ‘‘আমাদের ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী শুধু ১৯৫ জন নয়, আরো যদি কোনো সেনা কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা উঠে আসে, তাদের বিচারও এখানে করা সম্ভব৷ কিন্তু এই বিচার করার জন্য সরকারের ইঙ্গিত প্রয়োজন৷ সেই ধরনের কোনো ইঙ্গিত আমরা এখনও পায়নি৷  কারণ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপার আছে৷ তবে সরকার চাইলে আমাদের সেই ধরনের প্রস্তুতি আছে৷ আমরা যে কোনো সময় শুরু হতে পারব৷''

জামায়াতের নতুন আমির মকবুল আহমাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে জানিয়ে আব্দুল হান্নান খান বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, এ বিষয়ে উপযুক্ত তথ্য-উপাত্ত আমরা পাবো৷''

অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের নিয়েও তদন্ত চলছে৷ বাগেরহাটের এমন ১৪ জনের বিরুদ্ধে গত রবিবার প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত সংস্থা৷ বাগেরহাটের কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ থানায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে এই ১৪ জনের বিরুদ্ধে প্রস্তুত প্রতিবেদনটি ট্রাইব্যুনালের ৪৫তম প্রতিবেদন৷ এই ১৪ জনের মধ্যে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন৷ বাকি ১০ জন পলাতক৷ এরা হলেন – খান আশরাফ আলী, সুলতান আলী খান, রুস্তম আলী মোল্লা, মকছেদ আলী দিদার, শেখ ইদ্রিস আলী, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, মনিরুজ্জামান হাওলাদার, হাশেম আলী শেখ ও আজহার আলী শিকদার৷ এছাড়া যে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, তারা হলেন – খান আকরাম হোসেন, শেখ উকিল উদ্দিন, আব্দুল মকবুল মোল্লা ও ইদ্রিস আলী মোল্লা৷

এ বিষয়ে আপনার মতামত জানান, লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান