1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এলবে নদীর তীরের ফ্লোরেন্স

২০ জানুয়ারি ২০১৭

ড্রেসডেন, জার্মানির পূর্বাঞ্চলের স্যাক্সনি রাজ্যের রাজধানী৷ শুধু ফ্রাউয়েনকির্শের মতো গির্জা আর সুইঙ্গার প্রাসাদের মতো প্রাসাদই নয়, সেই সঙ্গে আছে অসংখ্য মিউজিয়াম৷ ড্রেসডেন আবার ইউরোপীয় মার্গসংগীতের এক পীঠস্থান৷

https://p.dw.com/p/2W4QG
সন্ধ্যার আলোতে ড্রেসডেন শহর
ছবি: picture-alliance/ZB/Andreas Franke

‘জার্মানির ফ্লোরেন্স’ ড্রেসডেন

এলবে নদীর তীরে ড্রেসডেন শহর৷ রেনেসাঁস, বারোক আর ঊনবিংশ শতাব্দীর স্থাপত্য এই শহরকে তার রূপ দিয়েছে৷ ড্রেসডেনের স্থাপত্য দেখলে নাকি ইটালির কথা মনে পড়ে যায়৷ তাই ড্রেসডেনকে বলা হয় এলবে নদীর তীরের ফ্লোরেন্স৷

ড্রেসডেনের লর্ড মেয়র ডির্ক হিলব্যার্ট বলেন, ‘‘ড্রেসডেনের প্রাচীন অংশটি অতি সুন্দর, নানা ধরনের মিউজিয়ামে ভরা৷ এই সব মিউজিয়ামের সংগ্রহে যে সব সম্পদ আছে, তা অন্য যে কোনো সরকারি মিউজিয়ামের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে৷ একটা দারুণ অপেরা হাউসও আছে, সেম্পারওপ্যার৷''

থিয়েটার চত্বরের সেম্পার অপেরা হাউসকে ড্রেসডেনের মার্গসংগীতের ট্রেডমার্ক বলা চলে৷ জার্মান নির্মাতা গটফ্রিড সেম্পারের নকশা অনুযায়ী ভবনটি তৈরি হয়৷ মাত্র ৬৫০ মিটার দূরেই ড্রেসডেনের সবচেয়ে সুপরিচিত সৌধ: ফ্রাউয়েনকির্শে অর্থাৎ মাদার মেরির গির্জা৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এই গির্জাটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয় – সেটা ছিল ১৯৪৫ সাল৷ পরে সম্পূর্ণ গির্জাটিকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয়েছে শান্তি ও সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে৷ আর্ট হিস্টোরিয়ান ক্লাউস কেমার-এর মতে,  ‘‘ফ্রাউয়েনকির্শেকে শহরের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গণ্য করা চলে৷ ড্রেসডেন যে যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি শহর থেকে আবার একটি মহানগরী হয়ে উঠতে পেরেছে, এই গির্জা তারই প্রতীক৷''

ফ্রাউয়েনকির্শের অদূরে একটা দেয়ালে পাথরে কোঁদা ম্যুরালে স্যাক্সনির রাজ-রাজড়াদের মূর্তি, তাদের মধ্যে ড্রেসডেনের প্রখ্যাত নৃপতিরাও আছেন, যেমন প্রবল পরাক্রমশালী আউগুস্ত৷ ড্রেসডেনকে তিনি একটি সুবিশাল কলা সংগ্রহ ও বহু সুন্দর-সুন্দর প্রাসাদ দিয়ে গেছেন, যেমন সুইঙ্গার প্রাসাদ৷ সুইঙ্গার প্রাসাদটি তৈরি করা হয়েছিল একটি রোমক অ্যাম্ফিথিয়েটারের অনুকরণে৷ কেমার বলেন, ‘‘সুইঙ্গার প্রাসাদ হলো অষ্টাদশ শতাব্দীতে ড্রেসডেনের স্বর্ণযুগের সাক্ষী৷ অগাস্টাস দ্য স্ট্রং শুধু স্যাক্সনির নৃপতি নন, পোল্যান্ডেরও রাজা ছিলেন৷ তিনি সুইঙ্গার প্রাসাদ বানানোর নির্দেশ দেন বড় বড় উৎসব কী পরবে নিজের মাহাত্ম্য প্রদর্শন করার জন্য৷''

মিউজিয়ামের পর মিউজিয়াম

সুইঙ্গার প্রাসাদে একাধিক মিউজিয়ামও আছে, বিশেষ করে অতীতের মহান শিল্পীদের আঁকা ছবির একটি সংগ্রহ৷ সেই সংগ্রহে প্রায় ৩,০০০ ছবি ও অন্যান্য শিল্পকলা আছে, যেমন রাফায়েলের আঁকা ‘‘সিস্টাইন ম্যাডোনা'', ইটালীয় রেনেসাঁসের এক অমূল্য নিদর্শন৷

ড্রেসডেনে দেখার মতো অনেক মিউজিয়াম আছে, যেমন অ্যালবার্টিনাম৷ এখানে আধুনিক শিল্পকলা থেকে শুরু করে একটি নামকরা ভাস্কর্য প্রদর্শনী অবধি অনেক কিছু উপভোগ করা যায়৷ ঠিক উল্টোদিকেই লিপসিয়ুসবাউ ভবনের আর্ট গ্যালারিতে বিভিন্ন ধরনের চিত্রকলা প্রদর্শিত হয়৷ ব্রুগেল বা রুবেন্সের মতো ফ্লেমিশ চিত্রকরদের ছবি নিয়েও এখানে প্রদর্শনী হয়েছে৷ মিউজিয়ামের কিউরেটর উটা নাইডহার্ড বলেন, ‘‘ড্রেসডেন শহরে চিত্রকলার একটি সুপ্রাচীন ও ব্যাপক সংগ্রহ রয়েছে৷ ষোড়শ শতাব্দী যাবৎ ইটালীয়, ওলন্দাজ, ফরাসি, জার্মান ও স্প্যানিশ চিত্রকলার বিভিন্ন নির্শন রয়েছে এই সংগ্রহে৷''

প্রাচীন ঐতিহ্যের ঠিক উল্টো হলো নতুন ড্রেসডেন, যেখানকার ফ্যাশনেবল এলাকায় বহু কাফে, ডিজাইনারদের দোকান ও আর্ট গ্যালারি রয়েছে, যেমন কুন্সটহোফ প্যাসেজের ছোট ছোট দোকানগুলি৷ শহরের কেন্দ্রে আগে যে থার্মাল পাওয়ার স্টেশন ছিল, তা এখন কলারসিক ও শিল্পীদের জন্য একটি নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠবে – উদ্বোধন শীঘ্রই৷ যেখানে এককালে তাপ আর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো, সেখানে আগামীতে শিল্পকলা আর সংস্কৃতির মেলা বসবে৷ ড্রেসডেনের স্টাটসঅপারেট এখানেও পরে শো দিতে পারবে৷

ড্রেসডেনের স্টাটসঅপারেট-এর চিফ কন্ডাক্টর আন্ড্রেয়াস শ্যুলার বলেন, ‘‘ড্রেসডেন শহরে সংগীত চিরকালই বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে৷ শুধু নৃপতির শাসনেই নয়, পরে বুর্জোয়া এবং প্রটেস্টান্ট আমলেও ড্রেসডেন সংগীতের মহানগরী ছিল৷''

কির্স্টিন শুমান/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য