ঢাকার দশটি প্রাচীন মসজিদ
ঢাকাকে বলা হয় মসজিদের শহর৷ মূলত মুঘল আমল থেকেই মসজিদের শহরে পরিণত হয় ঢাকা৷ নতুন নতুন মসজিদের পাশাপাশি প্রাচীন আমলের অনেক মসজিদ এখনো বিদ্যমান ঢাকা শহরে৷ রাজধানীর প্রাচীন দশটি মসজিদ নিয়ে এই ছবিঘর৷
বিনত বিবির মসজিদ
পুরনো ঢাকার নারিন্দা এলাকায় অবস্থিত মধ্যযুগীয় মসজিদ৷ ঢাকার সবচেয়ে পুরাতন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি৷ ৮৬১ হিজরি বা ১৪৫৭ খ্রিস্টাব্দে সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের শাসনামলে মারহামাতের কন্যা মুসাম্মাত বখত বিনত বিবি এই মসজিদটি নির্মাণ করেন৷
চক বাজার শাহী মসজিদ
পুরানো ঢাকার চকবাজারে অবস্থিত মুঘল আমলের মসজিদ৷ মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খান এটিকে ১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেন৷ তিনটি গম্বুজ আর বিশাল মিনার এ মসজিদটির মূল আকর্ষণ৷
কর্তালাব খান মসজিদ
পুরনো ঢাকার বেগম বাজারে অবস্থিত এ মসজিদটি বেগম বাজার মসজিদ নামেও পরিচিত৷ ১৭০১ থেকে ১৭০৪ সালের মধ্যে নির্মিত এই মসজিদটি তৎকালীন দেওয়ান মুর্শিদ কুলি খানের নামে করা হয়৷ মুর্শিদ কুলি খান কর্তালাব খান নামেও পরিচিত ছিলেন৷
তারা মসজিদ
পুরানো ঢাকার আরমানিটোলায় আবুল খয়রাত সড়কে অবস্থিত৷ আঠারো শতকের শুরুর দিকে মির্জা গোলাম পীর নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তি এ মসজিদ নির্মাণ করেন৷ পরে ১৯২৬ সালে ঢাকার ব্যবসায়ী আলী জান ব্যাপারী মসজিদটির সংস্কার করেন৷
মুসা খান মসজিদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে মুসা খাঁর মসজিদ নির্মিত হয় আনুমানিক ১৬৭৯ সালে৷ ধারণা করা হয় যে, মসজিদটি ঈশা খাঁ’র পুত্র মুসা খান নির্মাণ করেন৷ এ মসজিদ প্রাক-মুঘল স্থাপত্যের একটি নিদর্শন৷
হাজী শাহবাজ মসজিদ
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ৷ মুঘল শাসনামলে শাহজাদা আযমের সময়কালে ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মিত হয়৷ হাজী শাহবাজ নামে একজন অভিজাত ধনী ব্যবসায়ী এটি নির্মাণ করেন৷
লালবাগ শাহী মসজিদ
ঢাকার লালবাগ কেল্লার পাশে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ৷ ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ঢাকার উপ-শাসক সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রপৌত্র ফর্রুখশিয়রের পৃষ্ঠপোষকতায় এটি নির্মিত হয়৷
খান মহম্মদ মৃধার মসজিদ
পুরনো ঢাকার লালবাগের আতশখানায় অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ৷ এটি ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে নায়েবে নাযিম ফররুখশিয়ারের শাসনামলে ঢাকার প্রধান কাজী ইবাদুল্লাহ’র আদেশে খান মহম্মদ মৃধা এ মসজিদটি নির্মাণ করেন৷ বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে৷
কসাইটুলি মসজিদ
পুরান ঢাকার কসাইটুলির কে পি ঘোষ রোডের এ মসজিদ ‘কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত৷ এর আরেক নাম ‘চিনির টুকরা মসজিদ’৷ হিজরি ১৩৩৮ সনে জনৈক ব্যবসায়ী আবদুল বারি এ মসজিদটি নির্মাণ করেন৷
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
পুরান ও নতুন ঢাকার মিলনস্থলে ১৯৫৯ সালে এ মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন তৎকালীন ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানি৷ পরবর্তীতে ১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারি এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়৷ এই মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন৷ বায়তুল মোকাররম মসজিদের মূল অবকাঠামো মক্কা শরীফ এর কাবা এর মতো৷ এটি বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ৷