1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঢাকায় হে উত্‍সব

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৬ নভেম্বর ২০১৩

ঢাকায় তৃতীয়বারের মত হে উত্‍সব রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও সাহিত্যানুরাগীদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে৷ এই উত্‍সবে বিশ্বের নানা দেশের সাহিত্যিকরা যোগ দিয়েছেন৷ আর প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে নানা দেশের সাহিত্য কর্ম৷

https://p.dw.com/p/1AImh
Bücher, Lieblingsbuch, Liebesroman, Buchseiten in Herzform ullstein bild - Wodicka
প্রতীকী ছবিছবি: ullstein bild - Wodicka

আড়াই দশক আগে যুক্তরাজ্যের হে শহরের বাসিন্দারা তাদের শহরের নামেই আয়োজন করেছিলেন সাহিত্য উত্‍সবের৷ আর সেই উত্‍সব এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে৷ এমনকি বাংলাদেশেও৷

হে শহরের নামে কেন এই সাহিত্য উত্‍সব? আরও কত শহরতো আছে৷ জানা গেল যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের ছোট এই শহরটিতে হাজার দেড়েক লোকের বসবাস হলেও এখানে বইয়ের দোকান আছে অর্ধশত৷ তাই শহরটি বইয়ের শহর নামেও পরিচিত৷ আর সেই শহরের বাসিন্দারা বইপ্রেমী, সাহিত্যপ্রেমী হবেন এটাই স্বাভাবিক৷ তারা তাই ২৫ বছর আগে তাদের শহরের নামে যে সাহিত্য উত্‍সবের আয়োজন করেছিলেন তা এখন আন্তর্জাতিক সাহিত্য উত্‍সবে পরিণত হয়েছে৷

ঢাকায় প্রথমবারের মত হে উত্‍সব হয় ২০১১ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিলে৷ আর গত বছর তিন দিনব্যাপী এই উত্‍সবের আয়োজন হয়েছিল বাংলা একাডেমিতে৷ আর তারই ধারাবাহিকতায় এবার ১৪ থেকে ১৬ই নভেম্বর এই তিন দিনের হে উত্‍সব আয়োজন করা হয় বাংলা একাডেমিতে৷ আন্তর্জাতিক হে উত্‍সব কমিটির আয়েজনে এর টাইটেল স্পন্সর ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার৷ আর সহ আয়োজক বাংলা একাডেমি৷

Symbolbild Türkische Literatur
চত্বর সাজানো হয় দেশি-বিদেশি প্রকাশক আর লেখকদের বইয়ের স্টল দিয়ে (প্রতীকী ছবি)ছবি: Bulent Kilic/AFP/Getty Images

হে উত্‍সবে অংশ নিয়েছেন এগারোটি দেশের সাহিত্যিকেরা৷ বাংলা একাডেমি চত্বর সাজানো হয় দেশি-বিদেশি প্রকাশক আর লেখকদের বইয়ের স্টল দিয়ে৷ আর প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এই উত্‍সবে ভিড় করেন সাহিত্যানুরাগীরা৷ আলোচনা, স্মৃতিচারণ আর বিশ্ব সাহিত্যের নানা দিক উঠে আসে হে উত্‍সবে৷

হে উত্‍সবে অংশ নিয়ে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘‘এই উত্‍সবের মধ্য দিয়ে বিশ্ব আমাদের আরো কাছে এসেছে৷ উত্‍সবে খ্যাতিমান লেখক, শিল্পী, চিন্তাবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ ও মত বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে৷''

শুধু সাহিত্য আর বইয়ের আলোচনা নয়৷ পালা গান, লোক সংগীতের আসর আর পাপেট শো ঢাকার হে উত্‍সবকে ভিন্ন মাত্রা দেয়৷ পাপেট তৈরির গল্প আর টেলিভিশনে দেখা সিসিমপুরের চরিত্রগুলো মঞ্চে দেখে উল্লসিত হয় শিশুরাও৷

এই উত্‍সবে আসা সাহিত্যানুরাগীদের মধ্যে বিশ্ব সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার প্রবল আগ্রহ দেখা গেছে৷ তারা জানার চেষ্টা করেছেন বিশ্বের কোথায় কি ধরনের সাহিত্য চর্চা হচ্ছে৷ আর সেই আগ্রহীদের মধ্যে তরুণরাও পিছিয়ে নেই৷ ঢাকার তরুণ সাঈদ ইকবাল বলেন, সাহিত্যে তাঁর ঝোক আছে৷ আছে বিশ্ব সাহিত্যে আগ্রহ৷ সেই সাথে বাংলাদেশের সমকালীন সাহিত্যের সঙ্গে বিশ্ব সাহিত্য তিনি মিলিয়ে দেখতে চান৷ তিন দিনের এই আয়োজনে নানা দেশের বই আর আলোচনার মধ্য দিয়ে তিনি তা বোঝার চেষ্টা করেছেন৷ বিদেশি সাহিত্যিকদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে৷ তাদের চিন্তার কথা কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন৷

আলোচনায় বাংলাদেশ ভারত আর পাকিস্তানের ইতিহাস উঠে এসেছে৷ এসেছে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের কথা৷ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পাকিস্তানি সাহিত্যিক তারিক আলি বলেছেন, ‘‘১৯৬৮-৬৯ এর স্বাধীকার আন্দোলন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ নেবে তা তিনি তখনই বুঝেছিলেন৷ আর এখন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারকে তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে৷''

আর হে উত্‍সব নিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান তাঁর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন৷ তিনি জানান, এই ধরনের আয়োজন খুব বেশি প্রয়োজন৷ কারণ এতে সবাই লাভবান হয়৷ দিতে পারেন, নিতে পারেন৷ এর মধ্য দিয়ে নিজেরা যেমন সমৃদ্ধ হওয়ায় যায় তেমনি আন্তর্জাতিক সাহিত্যও সমৃদ্ধ হয়৷ আয়োজকরা জানান, প্রতি বছর এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য