1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কীটনাশক মেশানো মশারি

মিরিয়াম গ্যারকে/এপিবি৮ আগস্ট ২০১৩

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সবচেয়ে কাযর্কর মশারি৷ আর তানজানিয়ায় এসব মশারি স্থানীয়ভাবেই তৈরি হয়৷ তবে জনগণের মাঝে এগুলো বিতরণের জন্য তারা নিভর্র করে বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর উপর৷

https://p.dw.com/p/19Lji
ছবি: picture-alliance/dpa

দুমবুয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে চারটি ঘর৷ এর ছাদে গেলে চোখে পড়বে নারী ও তাঁদের সন্তানদের ভিড়৷ এরা সবাই এখানে এসেছে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা নিতে৷ ত্বয়ারা কেনিয়ার সীমান্তবর্তী তানজানিয়ার দক্ষিণের একটি প্রদেশ৷ এখানে ছয় বছরের কম বয়সি শিশুদের ম্যালেরিয়া সংক্রমণের হার প্রায় ১৭ ভাগ৷

এমনই একজন ম্যালেরিয়া রোগী দু'বছরের সামলি হিয়া, যে এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসেছে৷ তানজানিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা উইলহেলমিনা রিমশু জানালেন, তিনি ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কমর্সূচির দায়িত্বে আছেন৷ তাঁর কাজ হলো, দুমবুয়ের প্রত্যন্ত এলাকায় এইডস, যক্ষ্মা এবং ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময়ে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো কিভাবে কাজ করছে, তা দেখা৷

ম্যালেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি

দুমবুয়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ম্যালেরিয়ার দ্রুত পরীক্ষা ইউনিটটি কাজ করছে না৷ তাই সামলির ডাক্তার শুধুমাত্র রোগের লক্ষণের উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করছেন, যেমন জ্বর, ডায়রিয়া এবং পেটে ব্যথা৷ রিমশু জানালেন, তাঁরা ছেলেটির জন্য সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছেন৷ তবে সে এখনো অসুস্থ৷ তাই তাকে আবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে৷

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা ম্যালেরিয়া পরীক্ষার জন্য নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি এনেছেন, যাতে রক্তের নমুনা নিয়ে তা পরীক্ষা করে সংক্রমণের ব্যাপারটি নিশ্চিত হওয়া যায়৷

Tigermücke
মশার কামড় থেকে বাঁচতে কীটনাশক মেশানো মশারির চল শুরু তানজানিয়ায়ছবি: picture-alliance/dpa

নাইজেরিয়া এবং ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোর পর তানজানিয়া তৃতীয় দেশ, যেখানে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ হয়৷ ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষের এই দেশে ৪ কোটি মানুষই ম্যালেরিয়া ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে৷

প্রতিবছর ১ কোটি থেকে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ এখানে সংক্রমণের শিকার হয়৷ ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী অ্যানোফেলিস মশার কামড়ে এ পযর্ন্ত ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নবজাতক এবং গর্ভবতী মহিলা৷ তবে আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তায় তানজানিয়ায় এখন ম্যালেরিয়া সংক্রমণের হার ১৮ ভাগ থেকে ৯ ভাগে নেমে এসেছে৷ ১০ জন রোগীর মধ্যে ৮ জনই এখন সুচিকিৎসা পেয়ে থাকে৷

প্রতিরক্ষা হিসেবে প্রতিরোধ ব্যবস্থাই সর্বোত্তম

এখনও ম্যালেরিয়ার ভ্যাকসিন বের হয়নি৷ তাই প্রতিরোধই হলো এর থেকে রক্ষার প্রথম উপায়৷ গ্লোবাল ফান্ডের ক্রিস্টফ বেন জানালেন, তানজানিয়ায় এখন শতকরা ৮০টি বাড়িতে মশারি আছে৷ এ সব মশারিতে কীটনাশক দেয়া আছে, যার ফলে মশারির সংস্পর্শে এলে মশারা মরতে বাধ্য৷

এই মশারিগুলো উৎপাদন করে তানজানিয়া স্বয়ং৷ মশারি উৎপাদনকারী কোম্পানিটির স্লোগান ‘বাই আফ্রিকানস, ফর আফ্রিকানস, ইন আফ্রিকা'৷ কোম্পানিটির মালিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিনাশ হরিয়া৷ তিনি জানালেন, প্রতি বছর সেখানে ৩ কোটি মশারি তৈরি হয়৷

ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা করাতে ব্যক্তি প্রতি তানজানিয়ায় প্রতিদিন গড়ে ১ ইউরো খরচ পড়ে৷ সেখানে মশারির দাম ৫ ইউরোর কম৷ তাই আন্তর্জাতিক অর্থ সাহায্যের প্রয়োজন তানজানিয়ার৷ তবে ক্রিস্টফ বেন জানালেন, কোনো দেশ নিজেদের উন্নয়নে কাজ করলে তাদের জন্য তহবিল জোগাড় করাটা খুব কঠিন কিছু নয়৷

তানজানিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা উইলহেলমিনা রিমশু জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পযর্ন্ত ৩ কোটি ৪০ লাখ মশারি দেশটিতে বিতরণ করা হয়েছে এবং এখনও এই কাজ চলছে৷ এসব মশারিতে কীটনাশক দিলে সেই কীটনাশকের কাযর্কারীতা থাকে অন্তত পাঁচ বছর৷ তাই ম্যালেরিয়া থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকার নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে৷ আর তা হলো, স্কুলগুলোতে মশারি বিতরণ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য