1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১২ নভেম্বর ২০১৩

বাংলাদেশে হিজরারা ‘হিজড়া’ বা ‘হিজরা’ হিসেবেই পরিচিত হবেন৷ তাঁদের নারী অথবা পুরুষের পরিচয় ধারণ করতে হবেনা৷ মন্ত্রিসভা হিজরাদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন হিজরারা৷

https://p.dw.com/p/1AG16
In this Tuesday, April 23, 2013 photo, a temple priest ties a holy string to a eunuch as a ritual signifying her marriage to warrior-God Aravan at the annual eunuch festival in Koovagam, in the southern Indian state of Tamil Nadu. Eunuchs from all over India gather in this village to re-enact a story adopted from the Indian epic Mahabharata, in which they symbolically marry Aravan, believed to be the patron god of transgender communities. Aravan sacrificed himself to ensure the victory of the Pandava brothers. (AP Photo/Arun Sankar K.)
ছবি: picture alliance/AP Photo

বাংলাদেশে এখন শুধু নারী-পুরুষ নয়, হিজরারাও আলাদা একটি লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃত পেলেন৷ আর প্রচলিত ধারণাকে ভেঙে এই তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতির ব্যাপারে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় সোমবার, যা হিজরাদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে তুলেছে৷ তাঁরা মনে করেন, এখন তাঁরা দেশের সব নাগরিক মতো অধিকার ভোগ করতে পারবেন৷ সমাজে মানুষের মত বাঁচতে পারবেন৷

সাধারণ হিসেবে দেশে প্রায় ১০ হাজার হিজড়া রয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷ কিন্তু হিজরাদের নেতা আবুল হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, সারা দেশে তাঁদের সংখ্যা ৪০ হাজারের কম হবেনা৷ তিনি আরও জানান, এতদিন তাঁরা লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হয়েছেন৷ নারী বা পুরুষের বাইরে আর কোন লিঙ্গের আইনি স্বীকৃতি না থাকায় তাঁরা মৌলিক এবং নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত৷ চাকরি, স্কুলে পড়াশুনা এমনকি ভোটাধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত৷ কারণ এসব সুবিধা পেতে হলে প্রচলিত আইনে পুরুষ অথবা নারী হতে হয়৷ কিন্তু হিজড়ারা নারী বা পুরুষ – এর কোনোটিই নয়৷ তাই তাঁদের লিঙ্গের স্বীকৃতি তাদের বঞ্চনা থেকে বাঁচাবে বলে মনে করেন আবুল হোসেন৷

আরেকজন হিজরা দীপালি ডয়চে ভেলেকে বলেন, তাঁদের লিঙ্গের স্বীকৃতি না থাকায় তাঁরা বেঁচে থাকার তাগিদেই কখনো পুরুষ আবার কখনো নারীর পরিচয় ধারণ করেন৷ আর তাঁদের শুধু বঞ্চনা নয়, নির্যাতনেরও শিকার হতে হয়৷ তাঁরা নির্যাতনের শিকার হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়না৷ এমনকি তাঁরা মারা গেলে তাদের জানাজা বা সত্‍কার নিয়েও হয় জটিলতা৷ তিনি মনে করেন, তাঁদের লিঙ্গের স্বীকৃতি এখন তাদের মানুষ এবং নাগরিক হিসেবে অধিকার আদায়ের সুযোগ করে দেবে৷

এদিকে মানবাধিকার নেতা নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ৷ তবে এই স্বীকৃতিই যথেষ্ট নয়৷ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে রাষ্ট্রকে তাঁদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে৷ তাঁদের শিক্ষা, চিকিত্‍সা এবং কর্মসংস্থানের জন্য করতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা৷ যাতে তাঁরা ক্রমান্বয়ে সক্ষমতা অর্জন করে মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে৷ আর তাঁদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে৷ বুঝতে হবে মানুষ ৩ লিঙ্গের – পুরুষ, নারী এবং হিজড়া৷ তিনি বলেন, এখন বিভিন্ন সরকারি কাগজপত্র, পাসপোর্টসহ সব ক্ষেত্রে লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াও থাকতে হবে৷ প্রয়োজনে তাঁদের জন্য কোটা চালু করতে হবে৷ আর এই কাজ যত দ্রুত হবে ততই হিজরাদের জন্য মঙ্গল৷

সামাজিক কারণে হিজরারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন৷ লোকলজ্জার ভয়ে হয় বাবা-মা হিজরাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেন৷ অথবা তাঁরাই অপমান সইতে না পেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান পরিবার থেকে৷ বাস করেন হিজরাদের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে৷ বাংলাদেশে হিজরাদের নিয়ে বেশ কিছু এনজিও কাজ করে৷ সরকারের উদ্যোগে একটি প্রকল্পও আছে৷ সেই প্রকল্পের পরিচালক এস এম এবাদুর রহমান মনে করেন, ‘‘হিজরাদের উন্নয়নে এবং মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে এখন প্রয়োজন সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ৷ আর পরিবর্তন হতে হবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য