1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংসদে হাতাহাতি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বিতর্কিত তেলেঙ্গানা বিল পেশ করতে গিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো, সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে তা চিহ্নিত হয়ে থাকবে এক কালো দিন হিসেবে৷ লঙ্কার গুঁড়ো ছিটানো, ভাঙচুর, ঘুসোঘুসি, হাতাহাতি কী নয়?

https://p.dw.com/p/1B8BW
ছবি: Uni

বিতর্কিত তেলেঙ্গানা বিল পেশ করতে গিয়ে সংসদের ভেতরে ও বাইরে রীতিমত খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় তেলেঙ্গানাপন্থি এবং সীমান্দ্রপন্থিদের মধ্যে৷ দীর্ঘ দ্বিধাদ্বন্দ্বের পর বৃহস্পতিবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্ডে বিল পেশ করতেই শুরু হয় হৈ হট্টগোল ও হুলুস্থুল কাণ্ড৷ তেড়ে যান তেলেঙ্গানা-বিরোধী সাংসদরা৷ ছিঁড়ে ফেলেন অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য পুনর্গঠন বিল সংক্রান্ত কাগজপত্র৷ ভেঙে ফেলেন টেবিলের মাইক্রোফোন, কাঁচের গ্লাস৷ প্রতি আক্রমণ চালায় তেলেঙ্গানা সমর্থক সাংসদরা৷ শুরু হয় মারপিট, হাতাহাতি, ঘুসোঘুসি৷ তেলেঙ্গানা বিরোধী তেলেগু পার্টির এক সাংসদ লঙ্কার গুঁড়ো স্প্রে করলে সবাই নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে কাশতে শুরু করেন৷ এমনকি জনৈক টিডিপি সাংসদ ছুরিও বার করেন বলে অভিযোগ৷

এরপর মার্শালদের ডেকে যুদ্ধং দেহি সাংসদদের জোর করে বার কোরে দেয়া হয়৷ বাইরে বের করে দেয়ার পরও অবশ্য হাতাহাতি থেমে থাকেনি৷ সংসদ চত্বরের বাইরে যুযুধান দুই পক্ষের মধ্যে আবারো শুরু হয় মারপিট৷ আহত জনা চারেক সাংসদকে সংসদের অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়৷ এই দক্ষযজ্ঞ কাণ্ডের দরুণ ১৭জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়৷ আর সংসদের অধিবেশন স্থগিত রাখা হয় ১৭ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷

Hungama im Parlament
মরিচের গুঁড়া ছিটানোর পর এক সাংসদের দুরবস্থাছবি: Uni

সাংসদদের এই আচরণের নিন্দা করেছে সব দল৷ জনপ্রতিনিধিদের ধিক্কার জানিয়েছে গোটা নাগরিক সমাজ৷ সংসদের বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে না পারার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে বিজেপি৷ তৃণমূল কংগ্রেসের মতে, এই বিল অসাংবিধানিক৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিন্ডে বলেছেন, বিল পেশ করার পর এখন তা সংসদের এক্তিয়ারে৷ স্পিকার যদি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারেন, তাহলে বিলের ওপর আলোচনা হবে৷ স্পিকার মনে করলে ধ্বনিভোটেও তা পাশ করাতে পারেন৷ লোকসভায় তা পাশ হলে উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতে পেশ করা হবে৷ তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, তেলেঙ্গানা বিল পাশ করানো সহজ হবে না৷ মহিলা সংরক্ষণ বিলের মতোই এর দশা হবে৷ প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে মহিলা সংরক্ষণ বিল রাজ্যসভাতে পাশ হবার পর ঝুলে আছে লোকসভাতে৷

তেলেঙ্গানা বিল পাশ নিয়ে কংগ্রেস কেন এত মরিয়া? কতটা লাভ হবে কংগ্রেসের? রাজনৈতিক বিচক্ষণতার অভাব এবং সস্তা রাজনৈতিক চমক বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক৷ একটা সমৃদ্ধ রাজ্যকে ভাঙলে তা ইতিবাচক হতে পারেনা৷ কেউ কেউ আবার মনে করেন, ২০০৯ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার গঠনে অন্ধ্রপ্রদেশের ভূমিকা অনস্বীকার্য৷ রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ৩৭টি আসন৷ এখন অন্ধ্রপ্রদেশকে ভেঙে সীমান্ধ্র এবং তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠিত হলে সীমান্ধ্রের সিংহভাগ যাবে জগন মোহন রেড্ডির পার্টির ঝুলিতে৷ তাই তেলেঙ্গানাই এখন কংগ্রেসের পাখির চোখ৷ কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের মতে, বিলটি নির্বাচনের পরে নতুন সরকারের ওপর ছেড়ে দেয়াই শ্রেয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য