1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দশ বছর ধরে অনশনে শর্মিলা

৫ নভেম্বর ২০১০

ভারতের মনিপুরে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করার দাবিতে ২০০০ সাল থেকে অনশন করছেন ভারতীয় মানবাধিকার সংগ্রামী নারী ইরম শর্মিলা৷ ‘আয়রন লেডি’ নামে খ্যাত এই নারীর অনশন ১০ বছরে পা রেখেছে৷

https://p.dw.com/p/PzCK
সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন তুলে নেওয়ার দাবিতে অনশন (ফাইল ফটো)ছবি: Fotoagentur UNI

উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মনিপুরে তাঁর বাড়ির কাছে একটি বাস স্টপে একেবারে তাঁর চোখের সামনে জঙ্গি সন্দেহে সৈন্যরা দশ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করার পরে, ২০০০ সালের ৪ নভেম্বর অনশন শুরু করেন শর্মিলা৷ মনিপুরের মেয়ে শর্মিলার দাবি একটাই, উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ঐ রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন তুলে নিতে হবে৷

সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা এএফএসপিএ প্রত্যাহারের দাবিতে আরো যারা বিক্ষোভ করে আসছেন, তারা সবাই ইরমের সমর্থক৷ তারাই তাঁর নাম দিয়েছেন ‘আয়রন লেডি'৷ অনশন শুরু করার পরপরই তাঁকে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পাঠিয়ে দেয়া হয় কারাগারের হাসপাতালে৷ সেখানে তাঁকে নাকের ভিতর নল দিয়ে খাওয়ানো হয়েছে জোর করে৷ এইভাবেই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে৷

মাঝে মাঝেই স্থানীয় আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়েছে৷ জেল থেকে বেরিয়েই তিনি আবার অনশন শুরু করেছেন এবং আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ বছরের পর বছর ধরে খাওয়া দাওয়া করছেন না শর্মিলা৷ তবে শরীর শুকিয়ে গেলেও, মনোবল একটুও কমেনি৷ ইরম শর্মিলার ভাই, ইরম সিংহজিৎ বৃহস্পতিবার বলেন যে তাঁর বোন অনশন চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন৷ সেই থেকে এই পর্যন্ত শর্মিলার শরীর হয়ে উঠেছে যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র৷ জামিন প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি, প্রত্যাখ্যান করেছেন অনশন ভেঙে ফেলার অনুরোধ৷

স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যালার্ট'এর সঙ্গে যুক্ত বাবলু লইতংবাম বলেন, ‘‘সরকারের কঠোর ঐ আইন রদ না হওয়া পর্যন্ত তিনি আমরণ অনশন করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘জঙ্গিবাদ বাড়ছে৷ যার অর্থ এই বিশেষ ক্ষমতা আইন সাঙ্ঘাতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে৷''

ইরম চারু শর্মিলার বয়স এখন ৩৮ বছর৷ পাঁচ বছর ধরে শর্মিলার মা তাঁর মেয়ের সঙ্গে দেখা করেন নি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি দুর্বল চিত্তের মানুষ, ওকে দেখলেই কেঁদে ফেলবো৷ আমি ওর দৃঢ়তায় কোনরকম ফাটল ধরাতে চাই না৷ তাই আমি ঠিক করেছি ওর লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ওর সঙ্গে দেখা করবো না৷''

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক