1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দায়মুক্তি আইনের কথা স্বীকার করল আফগানিস্তান

১৭ মার্চ ২০১০

২০০১ সালের আগে সংঘটিত সকল যুদ্ধাপরাধ এবং মানবাধিকার ল্ঙ্ঘনের ঘটনায় নিঃশর্ত দায়মুক্তি দিয়ে একটি আইন পাসের কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে আফগানিস্তান৷

https://p.dw.com/p/MUx9
ফাইল ফটোছবি: AP

প্রায় দুই বছর আগে আইনটি পাস হলেও মঙ্গলবারই প্রথমবারের মতো বিষয়টি জনসমক্ষে স্বীকার করে আফগান সরকার৷

২০০৭ সালেই বিতর্কিত এই আইনটি আফগান পার্লামেন্টে পাস হয়ে যায়৷ কিন্তু দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে ছিল আফগান সরকার৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই এই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল৷ এমনকী ২০০৭ সালে এই আইনের প্রস্তাব পার্লামেন্টে ওঠার পর খোদ প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, এ আইনে স্বাক্ষর দেবেন না তিনি৷

কিন্তু, তাঁর ওই কথায় যে ফাঁক ছিল বা সবাই যে এতে বোকা বনেছিলেন সে বিষয়টি এতোদিন বোঝা যায়নি৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে এই বছরের শুরুতেই তারা জানতে পারেন যে, আইনটি ইতোমধ্যেই পার্লামেন্টে পাস হয়ে গেছে এবং তা কার্যকর হওয়ার বিষয়ে সরকারি গেজেটও প্রকাশ করা হয়ে গেছে৷

কারজাইয়ের মুখপাত্র ওয়াহিদ ওমর মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি পরিষ্কার করে জানান, ‘‘বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে৷ কেননা পার্লামেন্টের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যই এতে সমর্থন দিয়েছিলেন এবং আমাদের সংবিধান অনুসারে দুই তৃতীয়াংশ সমর্থন পেলে এতে আর প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয় না৷'' আফগান সরকারের কোনো কর্মকর্তার পক্ষ থেকে এ আইন পাসের কথা এই প্রথম জানানো হল৷

‘জাতীয় স্থিতিশীলতা এবং সংহতি আইন' নামের ওই আইনে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানে তালেবান সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত প্রায় দুই দশক ধরে আফগান গৃহযুদ্ধের সময়কালে সংঘটিত সকল যুদ্ধাপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বা নিপীড়ন নির্যাতনের সকল ঘটনার বিষয়ে নিঃশর্ত দায়মুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে৷

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' এর এশীয় অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস এ আইনটি রদ করতে আফগান সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, এই আইন পাসের প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও রহস্য রয়ে গেছে৷ কেন এই বিষয়টি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে আফগান সরকার দুই বছর সময় নিল তা খতিয়ে দেখা দরকার৷

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে অ্যাডামস বলেন, ‘‘এই আইন পুরোপুরি ন্যাক্কারজনক৷ বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধাপরাধের শিকার এবং যুদ্ধনেতাদের হাতে নিপীড়িত সকল আফগান জনগণের মুখে চড় মারার চেয়েও বেশি এটা৷''

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে এই মানবাধিকার কর্মী বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিৎ যে তারা যুদ্ধাপরাধের শিকার জনগণের সঙ্গে থাকবেন না যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে এবং নিজেদের অবস্থান প্রকাশে জানানো উচিৎ যুক্তরাষ্ট্রের৷

প্রতিবেদক: মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন