1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুই জার্মানির মিলন আর বাঙালির আবেগ, সঙ্গে মুজতবা আলি

৩ অক্টোবর ২০১০

বার্লিন প্রাচীরের পতন৷ সেই ইতিহাসের দিন যা আমাদের প্রজন্ম প্রত্যক্ষ করেছে৷ কেমন যেন অন্ধকারে ঘেরা গা শিউরানো অনুভূতি থাকত পুবের কথা ভাবলে৷ বলেছেন মিলনের পর অনেক পশ্চিমবাসী৷ বলছি দুই জার্মানির কথা৷

https://p.dw.com/p/PT51
জার্মানির পুনরএকত্রীকরণের দুই দশক পূর্তি

যা আবার ধরা আছে বাঙালির লেখক সৈয়দ মুজতবা আলির লেখাতেও৷

- ‘জার্মানির সঙ্গে আপনার প্রথম পরিচয় কোথায়'?

প্রশ্নকর্তার নাম আবদুল্লাহ আল ফারূক৷ প্রশ্ন তিনি রেখেছিলেন এই সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়কেই৷ প্রথম পরিচয়ে৷ এক সাক্ষাৎকারে৷ এর উত্তরে তাঁকে বলা হয়েছিল,

- ‘কেন, সৈয়দ মুজতবা আলির লেখায়!'

উত্তরের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর শাদাকালো শ্ম্রশ্রুতে ভরা ঋষিপ্রতিম মুখে অনাবিল হাসি৷ তারপরে বাকি সময়টা জুড়ে পুরো আলোচনা বয়ে যায় সেই সাহিত্য থেকে বিশ্বখাতেই৷

সেই জার্মানি, ১৯৯০ সালে যে আবার মিলে গেল৷ বিশ্বে এর চেয়ে বড়ো আবেগেরও দৃষ্টান্ত নেই৷ মানবিকতারও দৃষ্টান্ত নেই৷ এমনটা যে কখনো সত্যিই ঘটতে পারে, তা যেমন স্বপ্নতেও ছিল না, তেমনই সেই এক হয়ে যাওয়ার পর কোনদিকে যে যাবে এই প্রবাহ তাও বোঝা দুষ্কর ছিল৷

কিন্তু চার দশকের বিচ্ছেদের পর যে মিলন, তার তো তুলনা নেই৷ সকলেই খুশি৷ চুরাশি শতাংশ জার্মান সেই ইতিবাচক মতে সামিল৷ সে তো গেল একটা দরকারি পক্ষ৷ যে পক্ষ বা যে ঘটনা গোটা বিশ্বের বিভেদকামী শক্তির নাকে ঝামী ঘষে দিয়েছে৷ আজও দিচ্ছে৷ এই জ্বলজ্বলে উদাহরণটাকে, এই উজ্জ্বল ছবিটাকে ভোলা সম্ভব নয়৷ ভোলা যায় না এর আবেগকেও৷

বাঙালিও আসলে অনেকটাই আবেগ নির্ভর৷ শুধুই আবেগের জোয়ারে ভেসে যাবে অনেক দ্বন্দ্ব৷ বাঙালি জাতটাই যে আবেগের জাত৷ আবেগকে সম্বল করেই এই জাতির বেড়ে ওঠা৷ আবেগেই তার বাঁচা৷ তার রাজনীতি আবেগের, তার দুর্নীতিও বোধহয় ওই আবেগ থেকেই এনার্জি সংগ্রহ করে নেয়৷

সাহিত্য থেকে সংগীত, ভাষা থেকে সম্মানবোধ, বাঙালি আসলে নিজেকেই নিজে অনুকরণের আনন্দে থাকতে চায়৷ সামনে যতই হাতছানি আসুক, দিবানিদ্রা বাঙালির প্রিয় বিষয়, যেমন প্রিয় চর্চার নাম আজও মাছের ঝোল ভাত৷ তাই মিলনের কথায় বাঙালি স্বতই আনন্দিত৷ যেমন আজকের এই জার্মানির পুনর্মিলনের দুই দশক পূর্তির বিশেষ দিনটায়৷ যে দিনটা একটা পথের সন্ধান দেয়৷৷ পথের সন্ধান বাঙালির কাছে সবময়েই সোনালি৷

যে পথের কথাই বলেছিলেন ওই সৈয়দ মুজতবা আলি৷ ঢাকা নোয়াখালি রুটের সারেং বা মাল্লার জীবনকাহিনীকে যে মুজতবা আলি অনায়াসে তুলে এনেছিলেন বার্লিনের রাজপথে৷ কিংবা আমাদের ডয়চে ভেলের ঘরবাড়ি এই বন শহরের আশেপাশে৷ তাঁর কাছ থেকেই তো চেনা, একটু একটু করে বাতাস ফিরে পাওয়া বুকের খাঁচায়৷

জার্মানি সম্পর্কে তাঁর কাছেই আমারও যেমন, বাঙালিরও তেমনই প্রথম পরিচয়৷ সে পরিচয় চাচাকাহিনী থেকে শুরু করে আলি সাহেবের একাধিক লেখায় ছড়িয়ে৷

বাঙালির কাছে জার্মানির পুনর্মিলন তাই নিশ্চয়ই সুখবর!

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম