দুর্নীতি ইস্যুতে আন্না হাজারের আমৃত্যু অনশনের আজ তৃতীয় দিন
৭ এপ্রিল ২০১১আন্দোলনকারীদের মূল দাবি হলো দুর্নীতি রোধে জন-লোকপাল বিলের খসড়া রচনার জন্য এক যৌথ কমিটি গঠন করতে হবে৷ যে কমিটিতে ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব থাকবে নাগরিক সমাজের৷ এই যৌথ কমিটি গঠন করতে হবে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে৷ আন্না হাজারের সমর্থক অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, তা না হলে যৌথ কমিটি হবে নিরর্থক৷ এটা একটা আইনি প্রক্রিয়া৷ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া চিঠির মাধ্যমে সেটা করা হলে, তাতে আইনানুগ গুরুত্ব থাকবেনা৷ সেটা হবে ব্যক্তিবিশেষের বিষয়৷
যৌথ কমিটির চেয়ারম্যান পদে আন্না হাজারেকে দেখতে চাইছে তাঁর সমর্থকরা৷ সরকার চাইছে অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান করতে৷ আন্না হাজারে নিজে চাইছেন ঐ পদে সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে৷
সরকার পক্ষের প্রতিনিধি টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বাল বৃহস্পতিবার সকালে আন্না হাজারের শীর্ষ সমর্থক স্বামী অগ্নিবেশ এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে আলোচনার পর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন যে, দুটি বিষয়ে মতভেদ রয়ে গেছে৷ এক, যৌথ কমিটির চেয়ারম্যান কে হবেন এবং দুই, সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে যৌথ কমিটি গঠন৷ এর সমাধানে সরকারের দরকার আরো কিছু সময়৷ আগামিকাল আবার আলোচনা হবে৷ কপিল সিব্বাল বলেন, সরকার ১০ সদস্যের যৌথ কমিটি গঠনে রাজি৷ তবে তার ৫ জন সদস্য থাকবে নাগরিক সমাজের৷ কমিটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিলের খসড়া তৈরি করবেন, যাতে আগামী বাদল অধিবেশনে সংসদে তা পেশ করা যায়৷
সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আন্না হাজারে বলেন, জন-লোকপাল বিলের খসড়া রচনার জন্য যৌথ কমিটি গঠনে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা না হলে তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন৷ আজ তাঁর অনশনের তৃতীয়দিন৷ নতুনদিল্লিতে সংসদ ভবনের অদূরে আন্নার অনশন মঞ্চের চারপাশে সর্বস্তরের মানুষের ঢল৷ দেশের বিভিন্ন শহরেও আন্নাকে সমর্থন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলেছে৷ আন্না হাজারে সতর্কভাবে রাজনৈতিক দলের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলেছেন৷ ফেসবুক ও ট্যুইটারে হাজার হাজার সমর্থকের মন্তব্য৷ প্রতি মিনিটে ৪০-৫০টি আপডেট৷
জন-লোকপাল বিল কী ? পশ্চিমি ধাঁচে যাকে বলে সিটিজেন ওমবুডসম্যান বিল৷ দুর্নীতির অভিযোগ এলে প্রধানমন্ত্রী, সাংসদ, রাজনীতিক এবং আমলা প্রত্যেকে এর বিচারের আওতায় আসবে৷ যা সরকারের লোকপাল বিলে নেই৷ বিচারের রায় ঘোষিত হবে এক বছরের মধ্যে৷ আন্না হাজারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের পেছনে বিপুল জনসমর্থন, বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত মনমোহন সিং সরকারের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ