1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধূমপানে ‘না’ নিউ ইয়র্কেও

১০ জুলাই ২০১০

কর বাড়ানোর পর এখন নিউ ইয়র্কের পার্ক বা সৈকতে ধূমপান নিষিদ্ধ হয়েছে৷ এতে বেশ চটেছেন ধূমপায়ীরা৷ তবে রাজ্য সরকার বলছে, স্বাস্থ্য সচেতনতা থেকেই এই পদক্ষেপ৷

https://p.dw.com/p/OFhW
ছবি: AP

বেজায় খেপেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা টম রুবি৷ একমুখ ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বললেন, ‘‘সব নির্যাতন আমাদের ওপরই৷ ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র হতে আর খুব একটা বাকি নেই৷'' তাঁর খেপার কারণ ধূমপান প্রতিরোধে নিউ ইয়র্ক রাজ্য কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ৷ গত মাসেই সিগারেটের ওপর কর বাড়ানো হলো৷ এক প্যাকেট সিগারেট কিনতে এখন ১১ থেকে ১৫ ডলার গুণতে হয়৷ এরপর এই সপ্তাহে নিউ ইয়র্কের মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গের আদেশ এসেছে, পার্ক কিংবা সৈকতে ধূমপান নিষিদ্ধ৷ ‘‘পাগলের দেশ নাকি'', ক্ষোভ ঝরে পড়লো টমের বন্ধু অ্যারন উইলিয়ামসের কণ্ঠে৷ বললেন, ‘‘এখন সিগারেট নিয়ে যাই কোথায়, বলুন তো?''

নিউ ইয়র্কের ধূমপায়ীরা আসলেই বড় বিপদে আছেন৷ অফিস-আদালত, রাস্তা-ঘাট সব স্থানেই গুঞ্জন-ফিসফাস৷ গলা বেশি উঠছে না, কারণ ধূমপান তো আসলেই ক্ষতিকর৷ এখন তাঁরা ভাবছেন, ধূমপান করবেনটা কোথায়? কর্তৃপক্ষ অবশ্য সিগারেটের ওপর কর বাড়িয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাচ্ছেন৷ এক, এতে রাজস্ব আদায় ৪৪ কোটি ডলার বাড়বে৷ যা চাঙ্গা করবে ভঙ্গুর অর্থনীতি৷ আর দুই, এতে অনেকেই ধূমপান ছাড়বেন৷ তাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমে বাঁচবে সরকারের অনেক অর্থ৷

ব্লুমবার্গ নিজে ধূমপানবিরোধী শিবিরের লোক৷ তবে ধূমপানের বিরুদ্ধে এই ‘ক্রুসেড' ব্লুমবার্গের মাথায় ঢুকিয়েছেন তাঁর স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনার টমাস ফার্লে৷ তাঁর হিসেবে, ধূমপানের কারণে প্রতি বছর শুধু নিউ ইয়র্কে মারা যায় ৭ হাজার ৫০০ জন৷ যা এইডস, আত্মহত্যা আর হানাহানিতে মৃতের সংখ্যার চেয়ে বেশি৷ ব্লুমবার্গ বলেন, ‘‘আমরা স্বাস্থ্যকর বাতাস চাই৷ সেজন্যই পার্ক ও বিচে ধূমপানের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা৷ জনগণও এইসব স্থানে ধূমপান দেখতে চায় না৷''

শুধু নিউ ইয়র্কই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানেই ধূমপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে৷ সম্প্রতি জার্মানির বাভারিয়াতে একটি গণভোট অনু্ষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে ভোটাররা বাভারিয়ার সব রেঁস্তোরা, বার, ক্যাফে ও বিয়ার গার্ডেনে ধূমপান বন্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ মোট ৬১ শতাংশ ভোট পড়ে এর পক্ষে৷ বাংলাদেশেও পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ৷ তা করলে ৫০ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে৷ পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ ইউরোপেরও বিভিন্ন দেশে৷ অস্ট্রেলিয়ায় সব সরকারি দপ্তরসহ বিমানবন্দরগুলোতে ধূমপান নিষিদ্ধ৷

ব্লুমবার্গের পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোর মধ্যে এখন নিউ ইয়র্কেই সিগারেটে করের হার সবচেয়ে বেশি৷ সমালোচকরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে সিগারেটের কালোবাজারির পথটিই খুলে দেওয়া হলো৷ যাতে পুলিশের কাজ বাড়বে৷ ধূমপায়ীদের অনেকে আবার বলছেন, নিষেধাজ্ঞার মধ্য দিয়ে তাঁদের ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা হলো৷ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া আসছে, দেখার বিষয় ব্লুমবার্গের ভবিষ্যতে মেয়র হতে তা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কি না৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক