1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধ্রুপদী সংগীত জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র রবার্ট শুমান

৯ জুন ২০১০

২০০ বছর আগে ১৮১০ সালের ৮ জুন জন্ম গ্রহণ করেন তিনি৷ অসাধারণ প্রতিভাশালী এই শিল্পী তাঁর স্বল্প পরিসরের জীবনে রেখে গেছেন বিশাল এক সৃষ্টি সম্ভার৷ ছোট পিয়ানো সংগীত থেকে শুরু করে রচনা করেছেন বড় বড় সিম্ফনিও৷

https://p.dw.com/p/NlsJ
রবার্ট শুমানছবি: ullstein bild

সংগীত ও সাহিত্যের প্রতি ভালবাসা রবার্ট শুমানের যেন জন্মসূত্রেই পাওয়া৷ বাবা ছিলেন সাহিত্যানুরাগী আর মা ছিলেন সংগীতমনা৷ ছেলেবেলাতেই লেখালিখি শুরু করেন রবার্ট৷ সময় কাটাতেন বাবার বিশাল গ্রন্থাগারে৷ মাত্র সাত বছর বয়সে পিয়ানোতে হাতে খড়ি হয় তাঁর৷ সংগীত লেখাও শুরু করেন প্রায় তখন থেকে৷ ভাষা শেখার ক্ষেত্রেও তাঁর আগ্রহ কম ছিলনা৷ আয়ত্ত করেছেন ল্যাটিন, গ্রিক ও ফ্রেঞ্চ ভাষা৷ অল্প বয়সেই বাবাকে হারান রবার্ট৷ তাই পাকাপোক্ত একটা পেশা বেছে নেয়ার কথা চিন্তা করতে হয়েছে তাঁকে তরুণ বয়সেই৷ এজন্য তিনি জন্মস্থান সিকাউ ছেড়ে লাইপসিগ শহরে যান আইন পড়তে৷ বই'এর শহর লাইপসিগে নামকরা বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা ও সাহিত্যিকদের সংস্পর্শে আসেন শুমান৷ আকৃষ্ট করতে থাকে তাঁকে সংগীতের নানা কনসার্ট৷ তাই সংস্কৃতি জগৎ থেকে দূরে সরে যাওয়া তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হয়নি৷ অবশেষে আইন পড়াকে একপাশে রেখে আবার তিনি পিয়ানো শিখতে শুরু করেন৷ মনোযোগী হন সংগীত রচনার কৌশলের দিকে৷

Robert und Clara Schumann
স্ত্রী ক্লারা শুমানের সঙ্গে রবার্ট শুমানছবি: PA/dpa

১৯৪০ সালে বিয়ে করেন পিয়ানো শিক্ষক ফ্রিডরিখ ভিকের কন্যা প্রতিভাশালী পিয়ানো শিল্পী ক্লারাকে৷ নব উদ্দীপনায় সৃষ্টি করতে থাকেন তিনি কোয়ারটেট সংগীত, পিয়ানো সংগীত ও সিম্ফনি৷ অংশ গ্রহণ করেন নানা কনসার্টে৷ ইয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধি দেয়া হয় তাঁকে৷ লাইপসিগ শহরে সংগীত বিদ্যালয়ের শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হন তিনি৷ সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছান শুমান৷ ইতোমধ্যে নানা রকম শারীরিক অসুস্থতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকে তাঁর৷ যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সংগীতের ক্ষেত্রেও৷ অন্য দিকে দক্ষ পিয়ানো শিল্পী হিসাবে স্ত্রী ক্লারার নাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিশ্বব্যাপী৷ বিভিন্ন দেশে কনসার্ট ট্যুরের সময় ক্লারার স্বামী হিসাবে পরিচিতি পেতে থাকে শুমান৷ যা তাঁকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলতো৷ এই সময় ড্যুসেলডর্ফ শহরে নগর সংগীত পরিচালকের দায়িত্বটি হাতে আসায় অনেকটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পান রবার্ট শুমান৷

সংগীত পরিচালক পদে প্রথম দিকের উচ্ছ্বাস খুব শিগগিরই স্তিমিত হয়ে আসে শুমানের৷ ড্যুসেলডর্ফ শহরের জন্য একজন সংগীত নির্দেশক খোঁজা হয়েছিল কিন্তু পাওয়া গেলো একজন সংগীত রচয়িতা৷ কনসার্টে নির্দেশনা দেয়া শুমানের পক্ষে দুরূহ হয়ে ওঠে৷ মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও বিষাদ পেয়ে বসে তাঁকে৷ তবে সংগীত রচনা থেকে বিরত থাকেননি তিনি৷ বেশ কিছু বিখ্যাত কনসার্ট সংগীত রচনা করেছেন তিনি এই সময়৷ অন্যদিকে মানসিক অস্থিরতাটা এতই বেড়ে যায় যে, এক সময় আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন শুমান৷ তাই জীবনের শেষ দুটি বছর তাঁকে বন শহরের এক মানসিক স্যানাটোরিয়ামে কাটাতে হয় তাঁকে৷ ১৮৫৬ সালে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন কৃতিমান এই শিল্পী রবার্ট শুমান৷

তাঁর ২০০ বছরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে জন্মস্থান সিকাউ শহরে আয়োজন করা হয়েছে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার৷ এ ছাড়া লাইপসিগ ও ড্যুসেলডর্ফসহ যে সব শহরে বসবাস করেছেন শুমান, সে সব শহরেও তাঁর স্মরণে করা হচ্ছে নানা রকম কনসার্ট, সংগীত প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী ৷

প্রতিবেদন : রায়হানা বেগম

সম্পাদনা : আব্দুস সাত্তার