1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিষণ্ণতায় সংসদের প্রথম দিন

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৫ জুন ২০১৪

ষোড়শ সংসদের প্রথম দিনের অধিবেশনে ছিল শোকের আবহ৷ দিল্লিতে এক পথ দুর্ঘটনায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গোপীনাথ মুন্ডে প্রাণ হারালে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার কাজ দিনের মত স্থগিত রাখাহয়৷

https://p.dw.com/p/1CBwO
Indien Gopinath Munde
গোপীনাথ মুন্ডে (ফাইল ফটো)ছবি: Prakash Singh/AFP/Getty Images

৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে প্রথমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হবার মাত্র সাত দিনের মাথায় দিল্লিতে এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মোদী সরকারের গ্রামোন্নয়নন্ত্রী গোপীনাথ মুন্ডে৷ বুধবার তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় মহারাষ্ট্রে নিজের গ্রাম বীড-এ, বেলা দুটো নাগাদ৷ মুখাগ্নি করেন তাঁর বড় মেয়ে স্থানীয় বিধায়ক পঙ্কজা মুন্ডে৷ হিন্দু মতে পরিবারের কোনো পুরুষ সদস্য মুখাগ্নি করার অধিকারী হলেও সেই প্রথা ভেঙে পঙ্কজা এক নয়া নজির রাখলেন৷ এইভাবে নিজেকে পিতার রাজনৈতিক উত্তরসূরির দাবিদার প্রমাণ করলেন৷ চিতায় আগুন দেবার সময় মুন্ডের হাজার হাজার সমর্থকের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘‘গোপীনাথ মুন্ডে অমর রহে''৷ বিদায় জানায় তাঁরা চোখের জলে৷ হালের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর সাফল্যে ঐ গ্রামেই তিনি সম্বর্ধনা নিতে যাচ্ছিলেন গত মঙ্গলবার৷ আর বুধবার সেখানে গেল তাঁর মরদেহ৷ একেই কি বলে নিয়তির বিধান?

এর আগে আজ সকালে ষোড়শ সংসদের চেহারায় কত পরিবর্তন৷ ট্রেজারি বেঞ্চ কানায় কানায় ভরিয়ে রেখেছেন বিজেপি-জোট সরকারের ৩৩৫জন সাংসদ৷ আর বিরোধী আসনে টিমটিম করছেন মাত্র ৪৪ জন কংগ্রেস সাংসদ৷ কংগ্রেসের এত কম সাংসদ এর আগে আর কখনো হয়নি৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদে ঢুকতেই সকলে তাঁকে অভিনন্দন জানান৷ অস্থায়ী স্পিকারের আসনে বসেন ন'বারের কংগ্রেস সাংসদ ৬৭ বছরের কমলনাথ৷ রাষ্ট্রপতি ভবনে আগেই তিনি শপথ নিয়েছিলেন৷ অন্যান্য সাংসদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান মুন্ডের প্রয়াণে বৃহস্পতিবারের জন্য পিছিয়ে দেয়া হয়৷ প্রথা অনুযায়ী, মুন্ডের স্বর্গত আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দু'মিনিট নীরবতা পালন করা হয়৷

উল্লেখ্য, বুধবার দিল্লিতে অনুরূপ এক পথ দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পান হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত৷ এর প্রেক্ষিতে কোনো কোনো মহল এর পেছনে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে৷ ব্যাপক তদন্তের দাবি জানিয়েছে৷ তবে চক্রান্ত থাক বা না থাক দিল্লির রাস্তা যে মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠেছে দিনকে দিন সে বিষয়ে সন্দেহ নেই৷ দিল্লির এক কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার অনুপাতে গাড়ির সংখ্যা ৮৬ লাখ৷ প্রতিদিন কেউ না কেউ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে৷ জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর হিসেব মতো, গত বছর দিল্লিতে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ৭৫৬৬, যা মুম্বই ও ব্যাঙ্গালোরের মিলিত সংখ্যার চেয়ে বেশই৷ আর তাতে প্রাণ হারায় ১৮২০ জন৷ আহত হয় ৬০৫০ জন৷

এক ট্র্যাফিক পুলিশ ইনস্পেক্টরের কাছে এত বেশি সড়ক দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, এ বছরের মে মাস পর্যন্ত ট্র্যাফিক নিয়ম ভাঙার জন্য প্রায় ১৬ লাখ চালককে জরিমানা করা হয়৷ ২০১৩ সালে ঐ সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের মতো৷ অন্যান্য কারণ দেখিয়ে উনি ডয়চে ভেলে বলেন, গাড়ি এবং রাস্তার তুলনায় ট্র্যাফিক পুলিশের সংখ্যা খুবই কম৷ সব জায়গায় সিসিটিভি নেই৷ ট্র্যাফিক রুলে লালবাতি লঙ্ঘন করলে জরিমানার পরিমাণ মাত্র ১০০ টাকা৷ তাই সেটা মেটাতে চালকদের অসুবিধা হয় না৷ দ্বিতীয়ত, দিল্লিবাসীরা পাবলিক ট্রান্সপোর্টের বদলে নিজের গাড়িতে যাতায়াত করতে পছন্দ করে বেশি৷ বড় বড় ফ্লাইওভারে ফুটপাত নেই৷ বড় বড় রাস্তায় ফুটপাথ থাকলেও দোকান পসরায় তা ভরা থাকে৷ পথচারীকে রাস্তায় নামতে হয়৷ সর্বোপরি, রোড ডিজাইন এবং ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্টে ত্রুটি আছে৷ সেটা ঠিক করতে পারে একমাত্র সরকার এবং প্রযুক্তিবিদরা৷ ট্র্যাফিক বিভাগ নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য