1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন সাজে ইসলামি শিল্পকলার মিউজিয়াম

১২ অক্টোবর ২০১০

বার্লিনের পারগামন মিউজিয়ামের ভেতরে রয়েছে বিষয়ভিত্তিক ছোট ছোট কয়েকটি মিনি মিউজিয়াম৷ তার মধ্যে একটি ইসলামি শিল্পকলার মিউজিয়াম৷ এটিকে নবরূপ দেবার তোড়জোড় চলছে এখন৷

https://p.dw.com/p/PcLE
ইসলামি শিল্পকলার দেখা মিলে এই যাদুঘরেছবি: MWNF

ইসলামি সংস্কৃতির প্রাচীন নিদর্শনগুলি ২০১৯ সালের মধ্যে মিউজিয়াম ভবনের উত্তরাংশে নিয়ে যাওয়া হবে৷ এর ফলে শুধু যে জায়গাই বাড়বে তা নয়, ইসলামি সংস্কৃতিকে নতুনভাবে তুলেও ধরা হবে৷

নতুন রূপে, নতুন সাজে

মিউজিয়ামের নতুন পরিচালক শ্টেফান ভেবার এই বিশেষ উদ্যোগটা নেওয়াতে খুশি৷ কেননা শিল্পসামগ্রীগুলো সেই গত শতকের গোড়ার দিকের ধ্যানধারণায় সাজানো রয়েছে আজও৷ অন্যদিকে জার্মানির সমাজ ব্যবস্থা ইতোমধ্যে অনেকটাই বদলে গেছে, সেই সাথে দর্শকদের চাহিদাও৷ শ্টেফান ভেবার'এর ভাষায়, ‘‘তাঁরা ইসলামি দুনিয়ার সাংস্কৃতিক ইতিহাস আরো ভাল করে জানতে ও বুঝতে চান৷ তাই ইসলামি ইতিহাসের প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক যুগের নিদর্শনগুলিকে আমরা কালানুক্রমে সাজাব, বংশানুক্রমে নয়৷''

মিউজিয়াম পরিচালক ভেবার ব্যাখ্যা করে বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য সরলীকরণ নয়৷ বরং ইসলামি শিল্পকলার জটিল বিষয়গুলি এমনভাবে তুলে ধরা, যাতে তা সবাই বুঝতে পারে৷ ভেবার জানান, ‘‘যেমন অষ্টম শতাব্দীর এক খলিফার প্রাসাদের সামনের অংশটা আরো বড় করে পুনর্নির্মাণ করা হবে৷ স্পেনের গ্রানাডার আলহামব্রা প্রাসাদের চূড়াকেও দেয়া হবে নবরূপ৷'' ভেবার আরো জানান, ‘‘ইসলামের খলিফা বা রাজাদের সাম্রাজ্যের চেয়ে আমরা তাঁদের দেশ বা রাজধানীর নাম তুলে ধরতে বেশি আগ্রহী৷ যেমন, নাম করা যায় দামাস্কাস, কায়রো, বাগদাদ, দিল্লি বা তেহরানের৷ বংশপরিচয়ের চেয়ে এসব নামই মানুষের মনে দাগ কাটে বেশি৷''

বিষয়ের গভীরে যাবার সুযোগ

যে সব দর্শকের সময় কম, ভবিষ্যতে তাঁরা মিউজিয়ামের বিশেষ বিশেষ অংশগুলো দেখে মোটামুটি একটা ধারণা করতে পারবেন তৎকালীন ইসলামি শিল্পকলা সম্পর্কে৷ কিন্তু যাদের সময় নিয়ে দেখার সুযোগ রয়েছে, তাঁরা তিনটি তলায় সাজানো প্রাচীন ইসলামি শিল্পের নিদর্শনগুলি উপভোগ করতে পারবেন প্রাণভরে৷ ভেবার বলেন, ‘‘আমাদের মিউজিয়ামের শিল্প-সামগ্রীগুলির মধ্যে প্রায় সবই মধ্যপ্রাচ্যের, যেমন তুরস্ক, মিশর, ইরাক এবং সিরিয়া থেকে আনা৷ এসব ঘুরে ফিরে দেখলে বোঝা যাবে, এগুলোর মধ্যে কোথায় মিল এবং কোথায়ই বা পার্থক্য রয়েছে৷''

দর্শকরা যাতে মিউজিয়ামটিতে এসে খেই হারিয়ে না ফেলেন, এজন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনার ব্যবস্থা করা হবে৷ যাদুঘরের পরিচালক শ্টেফান ভেবার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারেন যে, মানুষ ইতিহাসের গল্প শুনতে ভালবাসে৷ ইসলামি শিল্পের প্রদর্শনীটিতে এই দিকটাও বিবেচনা করা হবে৷ শ্টেফান ভেবার'এর ভাষায়, ‘‘এজন্য প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের পরিচিত নগর ও খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরা হবে৷ যেমন, হারুন আল-রশিদ, কার্ল দ্য গ্রেট ও দ্বিতীয় ফ্রিডরিশ সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে পারবেন দর্শকরা৷ জানা যাবে জার্মান সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রিডরিশ যে ভাল আরবি বলতে পারতেন, সে কথাও৷''

অতীত ও বর্তমানের সেতুবন্ধ

ইসলামি সংস্কৃতি তুলে ধরার পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও একটা বিশেষ ভূমিকা রাখতে চায় ইসলামি শিল্পকলার মিউজিয়ামটি৷ ইদানীং জার্মানিতে বসবাসরত মুসলমান ও তাঁদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সম্পর্কে লোকের আগ্রহ বাড়ছে৷ এ প্রসঙ্গে ভেবার বলেন, ‘‘কোনো একটি প্রতিষ্ঠান যখন বলে, আমরা তোমাদের সংস্কৃতির দেখাশোনা করব আর রাষ্ট্র যখন এ ব্যাপারে সুযোগ সুবিধা করে দেয়, তখন মুসলমানরাও এই দেশটিকে নিজেদের স্বদেশ বলেই ভাবতে পারেন৷ মুসলমানরা যখন বলতে পারবেন, আমরা জার্মানির একাংশ, আমাদের এখানে গ্রহণ করা হয়েছে, তখন আমরাও বলতে পারব সম্পৃক্তকরণ প্রক্রিয়ায় একটা বড় রকমের পদক্ষেপ রাখা হয়েছে৷''

আর তাই তো ইসলামি মিউজিয়ামটি ঈদ বা মুসলমানদের নানা ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কনসার্ট, ছায়াছবি ও সাহিত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে, যেখানে অংশ নিতে পারেন মুসলমান ও অমুসলমান সকলেই৷ এর মাধ্যমে কাছাকাছিও আসতে পারেন তাঁরা৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন