1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নর্থ সাউথের ভাঙচুরকারীরা কি ‘জঙ্গি’?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩ মার্চ ২০১৭

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্রকে মারধর এবং তার প্রতিক্রিয়ার খবরে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ছাত্রদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দেয়ায় তা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে৷ কেউ কেউ বলছেন, কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম তাদের স্বার্থেই এভাবে খবর পরিবেশন করেছে৷

https://p.dw.com/p/2Ybjx
Bangladesch Universität North South in Dhaka
ছবি: DW/Harun Ur Rashid

বুধবার রাত ১০টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মধ্যে অ্যাপোলো হাসপাতালের সামনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ-র ছাত্র শাহরিয়ার হাসনাতসহ কয়েকজন একটি মোটর বাইক রাখতে গেলে বসুন্ধরার নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দেন৷ এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে নিরাপত্তারক্ষীরা শাহরিয়ারকে মারপিট করে৷  পরে তাঁকে উদ্ধারে নর্থ সাউথের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে গেলে তাঁরা মারপিটের শিকার হন বলে অভিযোগ৷ তাঁদের মধ্যে আহত শাহরিয়ারকে প্রথমে অ্যাপোলো এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়৷

মারধরের ঘটনায় রাতেই নর্থ সাউথের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে৷ পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা আবারো বসুন্ধরা আবাসিক এলকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ এবং ভাঙচুর করে৷ বেলা আড়াইটা পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ এবং ভাঙচুর অব্যাহত রাখে৷ পরে দায়ীদের শাস্তির আশ্বাস পেলে তারা শান্ত হয়ে চলে যায়৷ বিক্ষোভের সময় তারা প্রগতি সরণি অবরোধ করে৷

Robeyet ferdous - MP3-Stereo

বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি ব্যাংক, বাণিজ্যিক  প্রতিষ্ঠানসহ বসুন্ধরা গ্রুপের কর্পোরেট অজিসে হামলা ও ভাংচুর করে৷ তারা কিছু যানবাহন ভাংচুর করে এবং আগুন দেয়৷ তারা নিরাপত্তাচৌকিতেও ভাঙচুর চালায়৷

এ নিয়ে বাংলাদেশের সব সংবাদ মাধ্যমই খবর পরিবেশন করেছে৷ তবে একই শিল্প গ্রুপের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম খবর পরিবেশনে পেশাদারিত্ব বজায় রাখেনি বলে অভিযোগ করা হচ্ছে৷ আর ওই কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম বসুন্ধরা এলাকায় হামলা ও ভাংচুরের সঙ্গে জড়িতদের ‘জঙ্গি' বলে অভিহিত করেছে৷

আবুল কাসেম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আপনাদের বাজে সাংবাদিকতার নিন্দা জানাই৷ যেখানে 'বসুন্ধরা গ্রুপ' ঘটনার প্রেক্ষিতে 'দুঃখ প্রকাশ' করেছে, সেখানে বিষয়টাকে এত রঙ না দিলে পারতেন৷ আপনাদের মতো সাংবাদিকেরা দিনে দিনে এই মহান পেশাটাকে হাস্যকর করে তুলছেন৷''

মোহাম্মদ হোসেন মারুফ নামের একজন লিখেছেন,‘‘হাজার জঙ্গির হামলা তা-ও আবার খোলা রাস্তায়৷ কোনো জঙ্গিই আটক হইলো না৷ বিদেশি মিডিয়ায় খবর ছাপা হইল না৷ বসুন্ধরা আবার দু:ক্ষও প্রকাশ করল৷ মিলতাছে না তো!''

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক ফজলুল বারি লিখেছেন, ‘‘এসব পরিস্থিতিতে এমন রি-অ্যাকশন না দেখিয়ে চুপ থাকা কি ভালো না? কারণ, পাঠক, দর্শক এখন সাংবাদিকদের চেয়ে সচেতন৷ অস্ট্রেলিয়ায় সাংবাদিকতা পড়তে এসে ঢের বুঝলাম, দেশে যা করতাম এর বেশিরভাগ সাংবাদিকতা ছিলনা৷''

তবে ফেসবুকে আরো কিছু ঢালাও মন্তব্য আছে, যা প্রকাশযোগ্য নয়৷ আর সেসব মন্তব্যে বাংলাদেশের পুরো সাংবাদিক সমাজকেই গালি দেয়া হচ্ছে৷

এ নিয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও নানা মন্তব্য করছেন৷

যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন৷ একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একই গ্রুপের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনায় খবর পরিবেশন নিয়ে পেশাদারিত্বের অভাব আমার চোখে পড়েনি৷ তারা কোনো পক্ষ না নিয়ে খবর পরিবেশন করেছেন৷ তবে একই গ্রুপের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম খবর পরিবেশনে তাদের নিজেদের স্বার্থে কাজ করেছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে৷ তারা বিক্ষোভ এবং হামলাকারীদের জঙ্গি বলেছে তাদের প্রতিবেদনে৷ এটা তাদের প্রতিবেদনে তারা প্রমাণ করতে পারেনি৷ আমার মনে হয়েছে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে জঙ্গি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে৷''

Nadia Sarmeen - MP3-Stereo

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা হচ্ছে সাংবাদিকতার রাজনৈতিক অর্থনীতি৷ যারা মালিক বা বিনিয়োগকারী, তারা এখানে তাদের স্বার্থই দেখবে৷ এবং তাই হয়েছে৷ তারা তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে বজায় রেখেই খবর পরিবেশন করবে এবং এটাই হয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘আর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে জড়িয়ে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগ যেহেতু আগেই আছে, তাই এখানে বিষয়টি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, যা মোটেই পেশাদার বা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নয়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য