1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাগরদোলায় চড়ে স্বপ্নের জগতে

২৮ অক্টোবর ২০১৬

প্রথমে ছিল মেলার নাগরদোলা, তারপর রোলার কস্টার৷ এবার এক জার্মান কোম্পানি সেই রোলার কস্টারে চেপে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির জগতে প্রবেশের প্রযুক্তি বাজারে এনেছে৷ সেই রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা ভোলার নয়৷

https://p.dw.com/p/2RoV0
DW Shift Achterbahnfahrt mit VR-Brille 2
ছবি: DW

রোলার কস্টার নিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের জগতে

জার্মানির রুস্ট শহরে ‘ইউরোপাপার্ক' থিম পার্কে রয়েছে ‘পেগ্যাসাস' নামের রোলার কস্টার৷ শুধু চোখে দেখে তার বৈশিষ্ট্য বোঝার উপায় নেই৷ ১৩ মিটার সর্বোচ্চ উচ্চতা, গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত৷ যাত্রীরা চাইলে স্মার্ট গ্লাস পরে নিতে পারেন৷ তখন নতুন জগত চোখের সামনে খুলে যায়৷ আরও দ্রুত ও চমকপ্রদ সেই জগত৷

মিশায়েল মাক ইউরোপাপার্কের প্রধান৷ তিনি ১০ লক্ষ ইউরোর বেশি বিনিয়োগ করে দুটি রোলার কস্টারে এই প্রযুক্তি বসিয়েছেন৷ ব্রাজিলের এক থিম পার্কের প্রধান আজ তাঁর অতিথি৷ তিনিও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন৷ নতুন কোস্টারের জন্য লক্ষ লক্ষ ইউরো লগ্নি না করে পুরানোগুলিকেই ঘষে-মেজে আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব৷ সঙ্গে একটি বাড়তি আকর্ষণ৷ মিশায়েল মাক বলেন, ‘‘এটা সবচেয়ে বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা৷ লোকে সেটা গ্রহণও করেছে৷ অনেকে নেমে এসে বলেন, আপনি বলেছিলেন উলটে যাবার কোনো ভয় নেই৷ আমাকে বোকা বানিয়েছেন, মিথ্যে কথা বলেছেন৷ আমি লোকজনের সঙ্গে ২-৩ বার রোলার কস্টারে চাপার পর তারা বিশ্বাস করলো যে সত্যি সেটি উলটে যায় না৷''

ভার্চুয়াল রিয়ালিটি চশমার মধ্যে এক স্মার্টফোন লাগানো হয়েছে৷ সেটি ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে সিটের তলায় এক কনট্রোল বক্সের সঙ্গে যুক্ত৷ এভাবে ফিল্ম রোলার কোস্টারের অবস্থান অনুযায়ী চলতে থাকে৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশ ব্রাজিলের থিম পার্কের উপদেষ্টা চেজ ওলসান নিশ্চিত, যে এই ব্যাপারটা তাঁর দেশেও ভালো সাড়া তুলবে৷ তিনি বলেন, ‘‘ভার্চুয়াল রিয়ালিটি সেখানেও বড় বিষয় হয়ে উঠছে৷ অগমেন্টেড রিয়ালিটি তো আছেই৷ ছোট্ট পোকেমন নিয়ে যা হইচই চলছে৷ সবাই প্রযুক্তির এই ক্ষেত্র নিয়ে মেতে উঠেছে৷ আমার মনে হয়, এটা ওদের নিশ্চিতভাবে ভালো লাগবে৷ এমন অভিজ্ঞতা হলে তারা খুব খুশি হবে৷''

থিম পার্কের পেছনে ‘মাক' নামের পারিবারিক কোম্পানি৷ সেখানে রোলার কস্টারের লাইন, কামরাসহ নানা হার্ডওয়্যার তৈরি হয়৷ এবার ভার্চুয়াল রিয়ালিটি নিয়ে ব্যবসা জমে উঠছে৷ এর জন্য স্মার্টফোন ও চশমা কিনতে হয়েছে৷ সেট প্রতি দাম ৮০০ ইউরো৷ ৩০০ সেট কেনা হয়েছে৷ কোম্পানির প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান নিজে কনট্রোল বক্স তৈরি করেছেন৷ কাইজার্সলাউটার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সংস্থার কাছ থেকে থ্রিডি চলচ্চিত্রগুলি এসেছে৷ তবে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো, ফিল্মের ছবি ও বাস্তবের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানো – তাও এমন আঁকাবাঁকা লাইনের উপর৷

এরই মধ্যে উঠে এসেছে নতুন স্বপ্ন৷ শুধু ভার্চুয়াল রিয়ালিটির মধ্যে বিচরণ নয়, যাত্রী সেই জগতে নিজেও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেন৷ ডেভেলপার ইঞ্জিনিয়ার ডেনিস গর্ট বলেন, ‘‘একটি বোতাম টিপে বিভিন্ন বস্তুর দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পয়েন্ট সংগ্রহ করা যায়৷ শেষে পয়েন্ট গুনে স্থির করা যায়, আরও পয়েন্টের প্রয়োজন আছে কিনা৷ কোনো এক সময় ভার্চুয়াল জগতে নিজের হাতও দেখা যাবে, তা দিয়ে কিছু করাও যাবে, বস্তু ছোঁয়া যাবে, হাত বাড়িয়ে তুলে নেওয়া যাবে৷''

কোম্পানির আয়ের সিংহভাগ আসে রোলার কস্টার বিক্রি করে৷ ৯৫ শতাংশ রপ্তানি করা হয়৷ ভবিষ্যতে গোটা বিশ্বে ৪,০০০ রোলার কস্টারের জন্য ভার্চুয়াল রিয়ালিটি প্রযুক্তি ও থ্রিডি ফিল্ম-ও রপ্তানি করা হবে৷ ইউরোপাপার্কের প্রধান মিশায়েল মাক বলেন, ‘‘আগের মতই অ্যামেরিকা মূল বাজার৷ চীনও বড় বাজার৷ সামগ্রিকভাবে এশিয়ার ক্ষেত্রেও এ কথা খাটে৷ দুয়েক বছরে ভারতও উঠে আসবে৷''

মাক মনে করেন, কোনো এক সময়ে যাত্রীরা কয়েক হাজার ফিল্মের মধ্যে একটি বেছে নিতে পারবেন৷ পছন্দ অনুযায়ী কল্পবিজ্ঞান, বিভীষিকা, অথবা রূপকথার জগতে যাওয়া যাবে৷

প্রতিবেদন: পাউলা হোফমান/এসবি

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী