নিশ্চিত হলো আকুপাংচারের কার্যকারিতা
৩১ মে ২০১০নিউইয়র্কের রচেস্টার মেডিকেল সেন্টার এর বিজ্ঞানীরা পরীক্ষাগারে একটি ইঁদুরের দেহে আকুপাংচার করে এর প্রমাণ পেয়েছেন৷ বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে ‘নেচার নিউরোসায়েন্স' নামক সাময়িকীতে৷ ইঁদুরটির সামনের দিকের ডান পা'য়ে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রদাহ বাড়িয়ে দেয় এমন একটি রাসায়নিক পদার্থ প্রবেশ করানো হয়৷ এরপর তার হাঁটুর মধ্যভাগের অল্প নিচে সূক্ষ্ম সুঁচ ঢুঁকানো হয়৷ আকুপাংচার পদ্ধতির ভাষায় এই পয়েন্টটি ‘সুসানলি পয়েন্ট' নামে পরিচিত৷
বিজ্ঞানীরা এই সুঁচটিকে প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর আলতোভাবে ঘোরাতে থাকেন৷ ঠিক আকুপাংচারের পদ্ধতি অনুসারে এটি ৩০ মিনিট ধরে ঘোরানো হয়৷ এই অপারেশন চলাকালীন এবং এর পরের মুহূর্তে দেখা যায় যে, ঐ কলাসমূহের আশপাশে অ্যাডেনোসিনের মাত্রা ২৪ গুণ বেশি ছড়িয়ে পড়তে থাকে৷ পরীক্ষা চলাকালে ইঁদুরটির দেহে ব্যথার মাত্রা যন্ত্রের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়৷ দেখা গেছে, অপারেশনের পর ইঁদুরটির নির্দিষ্ট অঙ্গের প্রদাহ দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে৷
জিনগতভাবে অ্যাডেনোসিন বিহীন ইঁদুরের দেহেও একই পরীক্ষা চালানো হয়৷ এক্ষেত্রে ব্যবহৃত ইঁদুরটির দেহে অ্যাডেনোসিন উপাদানটি না থাকায় আকুপাংচারের ফলে কোন লাভ হয়নি৷ ফলে তার দেহের নির্দিষ্ট অঙ্গের ব্যথাও কিছুমাত্র কমেনি৷ এরপর বিজ্ঞানীরা একটি ইঁদুরের দেহে প্রবেশ করান অ্যাডেনোসিন বর্ধক উপাদান ডিঅক্সিকোফর্মিসিন৷ এবার এই ইঁদুরটির দেহে একই পরীক্ষা চালান তাঁরা৷ যেহেতু এই উপাদানটি কলা থেকে অ্যাডেনোসিন সহজে বের হতে দেয় না, তাই প্রথম পরীক্ষার মতো ফল পেতে তিনগুণ বেশি সময় ধরে চালাতে হয়েছে আকুপাংচার প্রক্রিয়া৷
এই গবেষক দলের প্রধান মাইকেন নেডেরগার্ড বলেন, ‘‘পৃথিবীর বেশ কিছু অঞ্চলে প্রায় চার হাজার বছর ধরে আকুপাংচারই প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে প্রচলিত রয়েছে৷ কিন্তু এটা পুরোপুরি বোঝা যায়নি বলেই অনেকেই এই পদ্ধতির ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেন৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়