1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পথ ছেড়ে আঁকার ক্লাসে করাচির পথশিশুরা

১২ জুলাই ২০১০

পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচিতে প্রায় বিশ হাজার দরিদ্র দুঃস্থ পথশিশুর বাস৷ পরিবারের ভিতরেই অথবা স্কুলে, মাদ্রাসায় তারা নির্যাতনের শিকার৷ তাদের জীবন অভ্যস্ত হয়ে পড়ে মাদক ও নানান অপরাধের সঙ্গে৷ তাদেরই একজন তানভির আহমেদ৷

https://p.dw.com/p/OHER
করাচির পথশিশুরাছবি: picture alliance / landov

তানভিরের বয়স যখন ১১ তখন সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়৷ এবং করাচির রাস্তাঘাটে এক যৌনকর্মী হিসেবে শুরু হয় তার জীবন৷ কিন্তু এখন সে ছবি আঁকা শিখছে এবং স্বপ্ন দেখছে সুন্দর এক ভবিষ্যতের৷ একটি আর্ট স্টুডিওতে বসে তানভির জানায়, করাচির রাস্তায় চার বছর অত্যন্ত কদর্য জীবনযাপন করেছে সে৷ যা ছিল জীবনেরই অবমাননা৷ সে বলে, আমি জানতাম না কী হবে৷ আমি পড়ালেখা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার পরিবার আমাকে কাজ করার জন্যে চাপ দিতে থাকে৷ তাদের অত্যাচারে পালিয়ে যাই আমি৷

রানা আসিফ হাবিবের দেখা পাবার আগে, তানভিরের জীবন ছিল লাগামহীন৷ দুঃস্থ শিশুদের পুনর্বাসনের জন্যে রানা একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন৷ দাতব্য সংস্থাটি শুধু দুঃস্থ শিশুদের পুনর্বাসনই করে না, ধীরে ধীরে তাদের পরিবারের সঙ্গেও পুনর্মিলনের ব্যাবস্থা করে৷

তানভির বললো, আমি এখন ছবি আঁকি এবং ছবি তুলি৷ রাতের স্কুলে পড়ালেখা শিখছি এবং দিনে একটি দোকানে কাজ করছি৷ সে জানালো, বাবা-মা এবং তিনটি ছোট ভাইবোনের সঙ্গে সে এখন ভালোই আছে৷ তানভির তার অতীতের অবমাননাকর জীবন নিয়ে জনসমক্ষে কথা বলতে চায় না৷ রানা বলেন, যৌন ব্যবসার অনেক ভয়াবহ স্মৃতি এখনও তার জীবনের ওপর ছায়াপাত করে৷ তিনি বলেন, বহু দুঃস্থ শিশুর জীবনই এই ব্যবসার ফাঁদে পড়ছে৷ তিনি জানান, তানভির তাদেরই একজন, যারা আমাদের উপদেশ গ্রহণ করেছে৷ এরকম অনেকেই রয়েছে যারা সহজে এই পথ ছেড়ে আসেনি৷ তবে শেষ পর্যন্ত তানভির নিজেকে সৃষ্টিশীল মানুষ হিসেবে প্রমাণ করেছে৷ রানা বলেন, অপরিকল্পিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, যুদ্ধ, দারিদ্র্য, অভ্যন্তরীণ সংঘাত, এবং স্কুলে মাদ্রাসায় সহিংসতার শিকার হয়েছে এই শিশুরা৷ তাদের স্থান হয়েছে রাস্তায়৷

করাচি শহরের হাজার হাজার পথশিশু নিরক্ষরতা, অশিক্ষা এবং পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকার কারণেই পরিণত হচ্ছে সত্যিকার অপরাধীতে৷ হচ্ছে মাদকাসক্ত এবং পড়ে যাচ্ছে ইসলামি জঙ্গিদের কবলে৷ রানা আসিফ হাবিবের আইএইচডিএফ দাতব্য প্রতিষ্ঠান তাদের জন্য সুস্থ এক জীবনের সম্ভাবনা তুলে ধরেছে৷ এই ফাউন্ডেশনেই ১৫ জন পথশিশু আঁকা আর ফোটোগ্রাফির শিক্ষা পাচ্ছে৷ তানভির তাদেরই একজন৷

প্রতিবেদনঃ ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনাঃ আব্দুল্লাহ আল-ফারূক