পরকীয়ার জন্য অধিনায়কত্ব খোয়ালেন টেরি
৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০গত কয়েকদিন ধরেই ব্রিটিশ গণমাধ্যমে বেশ রসের জোগাড় দিয়েছে জন টেরির পরকীয়ার কাহিনী৷ দুই সন্তানের পিতা টেরি এতদিন ধরে গোপনে গোপনে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন অন্তর্বাসের মডেল কন্যা ভানেসা পেরোনসেলের সঙ্গে৷ একে তো পরকীয়া, তার ওপর ভানেসা হচ্ছেন ইংলিশ ফুটবল দলের খেলোয়াড় ওয়েইন ব্রিজ এর সাবেক বান্ধবী৷ দুজনের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার কারণ টেরি কিনা সেটি এখনও জানা যায়নি৷ কারণ টেরি-ভানেসা কাহিনী যাতে খবরওয়ালারা জানতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই টেরি আদালতের নিষেধাজ্ঞা আদায় করে নিয়েছিলেন৷ কিন্তু গত সপ্তাহে হাইকোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর আর সামলে রাখা যায়নি সাংবাদিকদের৷ একের পর এক সচিত্র টেরি-ভানেসা কাহিনীতে তোলপাড় হয়ে যায় গোটা ইংলিশ ফুটবল জগত৷ স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার প্রভাব পড়েছে ফুটবল দলের ড্রেসিং রুমেও৷ তবে এখন পর্যন্ত কোন কিছু প্রকাশ পায়নি মূলত খেলোয়াড়দের কোড অব কন্ডাক্ট এর কারণেই৷
এদিকে আর মাত্র পাঁচ মাস পর বিশ্বকাপ ফুটবল৷ এই সময়ে খোদ দলের অধিনায়কের এই ধরণের অনৈতিক কর্মকান্ড মেনে নিতে পারেনি ভক্তরা, একইসঙ্গে ফুটবল কর্মকর্তারাও৷ টেরিকে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ক্যাপেলোর ওপর গত কয়েকদিন ধরেই চাপ বাড়ছিলো বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়৷
অবশেষে এই চাপের কারণেই টেরিকে সরিয়ে দিলেন ক্যাপেলো৷ গত ২০০৮ সালের আগস্টে টেরিকে অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন তিনি৷ তখন অনেকেই ফার্ডিনান্ড কিংবা জেরার্ডকে অধিনায়ক হিসেবে ধরে নিয়েছিলো৷ কিন্তু টেরির ওপর আস্থা রেখেছিলেন ক্যাপেলো৷ জানা গেছে, শুক্রবার ওয়েম্বলিতে ফুটবল এসোসিয়েশনে টেরির সঙ্গে একান্তে কথা বলেন ক্যাপেলো৷ মাত্র ১২ মিনিটের আলাপ শেষে ইংলিশ অধিনায়ক যখন বের হন তখন তাঁর চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কি ঘটতে চলেছে৷ এবং তাই হলো, ক্যাপেলো জানিয়ে দিলেন, দলের ভালোর কথা বিবেচনা করেই টেরিকে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন তিনি৷ যদিও অধিনায়ক হিসেবে টেরির প্রশংসা করেছেন ইংল্যান্ড দলের প্রধান কোচ৷ এদিকে পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে ফার্ডিনান্ডের দিকে ইঙ্গিত করেছেন ক্যাপেলো৷
ভারতে যেমন ক্রিকেট, তেমনি ইংল্যান্ডে ফুটবল, যাতে নাক গলান সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত৷ ইংলিশ অধিনায়ককে সরিয়ে দেওয়ার পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন সমর্থন করেছেন এই সিদ্ধান্তকে৷ তিনি বলেছেন, আমি আশা করি মানুষ এটা মেনে নেবে৷ তবে মানুষ মানুক আর না ই মানুক জন টেরি কিন্তু ঠিকই মেনে নিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, আমি ক্যাপেলোর সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সম্মান করি৷ ইংল্যান্ডের জন্য আমি সবই দিয়ে দেব৷ অন্যদিকে টেরির নতুন বান্ধবী ভানেসা মর্মাহত হয়েছেন টেরির অধিনায়কত্ব চলে যাওয়ায়৷ তবে তিনি জানিয়েছেন যে এই প্রেমের কাহিনী তিনি ব্রিটিশ মিডিয়ার কাছে বিক্রি করবেন না৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়