1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিকল্প জ্বালানি উৎপাদন

মারিয়া লেসার/এসবি১৯ মে ২০১৫

জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কয়লাখনি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ খনির ফাঁকা গহ্বর ধসে পড়ার ভয়ও থাকছে৷ জার্মানিতে একদল বিজ্ঞানী এমন খালি কয়লাখনির মধ্যেও বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনের স্বপ্ন দেখছেন৷

https://p.dw.com/p/1FRL3
Windpark Nordsee Ost
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Charisius

গোটা এলাকাটিকেও আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের৷

জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কয়লাখনি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ খনির ফাঁকা গহ্বর ধসে পড়ার ভয়ও থাকছে৷ জার্মানিতে একদল বিজ্ঞানী এমন খালি কয়লাখনির মধ্যেও বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনের স্বপ্ন দেখছেন৷ গোটা এলাকাটিকেও আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের৷

গভীর গহ্বর থেকে উপরে ওঠা – কয়লার স্তর থেকে সেই যাত্রা শুরু৷ ভূতত্ত্ববিদ উলরিশ শ্রাইবার যা করতে চান, তার জন্য এই পরিবেশ একেবারে আদর্শ৷ খনি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সেখানে কী করা যায়, তা নিয়েই তিনি ভাবনা-চিন্তা করছেন৷

২০১৮ সালে জার্মানিতে কয়লা উত্তোলনের চূড়ান্ত সমাপ্তির পর সেখানে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি সংরক্ষণ করা হবে৷ তাই বিজ্ঞানীদের একটি দল খতিয়ে দেখছেন, খনির মধ্যে পাম্পড স্টোরেজ হাইড্রো-ইলেকট্রিসিটি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব কিনা৷ ডুইসবুর্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উলরিশ শ্রাইবার বলেন, ‘‘সুবিধা হলো, একটা বড় অংশ খোলা আছে৷ সেখান দিয়ে ট্রাকে করে টার্বাইন, ট্রান্সফর্মার নীচে পাঠানো যাবে৷ অর্থাৎ বড় আকারের বস্তু পরিবহণ করা সম্ভব৷ এটা একটা বড় সুবিধা বটে৷''

বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি বেশ কয়েকবার খনির গভীরে নেমেছেন৷ পরে একই পথে আরও দ্রুতবেগে জল প্রবেশ করবে৷ একমাত্র সূর্য না উঠলে ও বাতাস না বইলেই জল গভীরে পাঠানো হবে৷ তখন সেই জল দিয়ে জ্বালানি উৎপাদন করা হবে৷ টার্বাইন ও ট্রান্সফর্মারের সাহায্যে জলবিদ্যুৎ তৈরি হবে৷ তবে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণ সৌর ও বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে উদ্বৃত্ত শক্তি দিয়ে জল আবার পাম্প করে এক আধারে রাখা হবে৷

কিন্তু বিষয়টা কি সত্যি এতই সহজ? গবেষকরা খনিগহ্বর ভালো করে পরীক্ষা করেছেন৷ ১,২০০ মিটার গভীরেও তাঁরা গেছেন৷ কয়েক বছর পর সেখানে জল জমা রাখা হবে৷ তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন, পাম্পড স্টোরেজ হাইড্রো-ইলেকট্রিসিটি উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য খনির আকার-আয়তন আদৌ উপযুক্ত কিনা এবং জল ও বাতাস ঠিকমতো চলাচল করবে কিনা৷

উলরিশ শ্রাইবার বলেন, ‘‘নীচে জল জমা রাখতে হলে সুড়ঙ্গের মধ্যে বিস্তীর্ণ এক সিস্টেম থাকা প্রয়োজন৷ হয় এমন এক সিস্টেম তৈরি করতে হবে, কিংবা তার অস্তিত্ব থাকলে কোথাও তা বাড়াতে বা কমাতে হবে৷ অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷''

তার জন্য ভিতরে যা আছে, তা বার করে আনতে হবে৷ তারপর পাম্পের দিকে মুখ করা ইস্পাত ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি পাইপ বসাতে হবে৷ জলের প্রবাহের পথে যত কম সম্ভব বাধা থাকতে হবে৷ প্রয়োজনে সেই জল আবার উপরে পাম্প করার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷

গবেষকরা এমন ফাঁপা জায়গার খোঁজ করেছেন, যেখানে টার্বাইন ও ট্রান্সফর্মার রাখা যায়৷ দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে সুড়ঙ্গ ও খনির ভিতরের অংশ কতটা স্থিতিশীল থাকবে, তাও জানা প্রয়োজন ছিল৷ পরীক্ষায় দেখা গেল, এ সব করা সম্ভব৷ কিন্তু এখনো কোনো বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়নি৷

ভূগর্ভে বিশালাকার ব্যাটারি হিসেবে পাম্পড স্টোরেজ হাইড্রো-ইলেকট্রিসিটি উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রবণতা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে – বিশেষ করে যে সব অঞ্চলে কয়লাখনির ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷

এখনো কয়লা উত্তোলন হচ্ছে বটে, কিন্তু উলরিশ শ্রাইবার এখনই ভবিষ্যতের চিত্র দেখতে পাচ্ছেন৷ উলরিশ শ্রাইবার বলেন, ‘‘আরও একবার চারিদিকে তাকালে বুঝবেন, এটা একটা বিশাল এলাকা৷ আমাদের পায়ের তলায় এই মাটির ঠিক নীচে স্টোরেজ থাকবে৷ তবে গোটা প্রক্রিয়া চালু রাখতে মাটির উপরেও জলাধারের প্রয়োজন পড়বে৷ জলের পরিমাণ বাড়া-কমার কারণে সেই জলাধারের আয়তন বড় হতে পারে৷ তীরের একটি অংশে সমান পরিমাণ জল রাখা যেতে পারে, সঙ্গে একটু বাগান৷ তখন এই এলাকার ভোল পালটে যাবে৷''

কয়লার বিদায় ও বায়ুশক্তির আগমন হচ্ছেই৷ উলরিশ শ্রাইবারের স্বপ্ন বাস্তব হলে বাগানে ঘেরা জলাধারের তীরে মানুষ বসবাস করবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য