1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তরাষ্ট্রে ম্যান্ডেলা ছিলেন সন্ত্রাসী!

৬ ডিসেম্বর ২০১৩

তার ১৪ বছর আগে তিনি হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট, নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন তারও এক বছর আগে, অথচ তখনও নেলসন ম্যান্ডেলা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ছিলেন নিছক এক ‘সন্ত্রাসী', ভাবা যায়!

https://p.dw.com/p/1AUBi
George Bush Senior und Nelson Mandela
ছবি: AFP/Getty Images

সময় বদলায়, বদলে যায় ইতিহাস৷ নেলসন ম্যান্ডেলা আসলেই এক ইতিহাসের রূপ বদলে দেয়া নাম৷ নইলে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কেন তিনি থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায়? ম্যান্ডেলার বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামী জীবনের কথা যাঁরা জানেন, তাঁরা নিশ্চয়ই এটাও জানেন যে সংগ্রামের বড় একটা সময় জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার তখনকার বর্ণবাদী সরকারের মিত্র৷ সে কারণে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বর্ণবাদের অভিশাপ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার অশ্বেতাঙ্গদের মুক্ত করতে নামা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)-র শীর্ষস্থানীয় সব নেতার মতো ম্যান্ডেলাও ছিলেন প্রিটোরিয়া সরকার এবং ওয়াশিংটনের চক্ষুশূল৷ সন্ত্রাসীদের তালিকায় সে কারণেই রাখা হয়েছিল ম্যান্ডেলার মতো এক মানবতাবাদীর নাম৷

কিন্তু ২৭ বছরের কারাজীবনে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে আনার পরিকল্পনা থেকে এএনসিকে বের করে আনেন ম্যান্ডেলা৷ হিংসার পথ ছেড়ে তাঁর অহিংসার পথে আসার পেছনে মহাত্মা গান্ধীর জীবন বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল৷ সময়ে বিশ্ব রাজনীতিতেও এসেছিল পরিবর্তন৷ পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছিল যুক্তরাষ্ট্রেও৷ তাই যে দেশে ম্যান্ডেলার নাম একটা সময় পর্যন্ত প্রকাশ্যে, শ্রদ্ধাভরে উচ্চারণ করা ছিল অস্বাভাবিক, সে দেশেই আশির দশকে ডেমোক্র্যাট দলের প্রয়াত সেনেটর টেড কেনেডির উদ্যোগে বর্ণবাদ বিরোধী বিল উত্থাপন করা হয়৷ বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন সফল করায় সেই উদ্যোগ বড় ভূমিকা রেখেছিল৷

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল৷ টেড কেনেডির উদ্যোগে আনা বর্ণবাদ বিরোধী বিলের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি৷ সেই বিল অনুযায়ী দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে আপত্তি ছিল তাঁর৷ রেগান বলেছিলেন, তিনি মনে করেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে দক্ষিণ আফ্রিকায় অশ্বেতাঙ্গদের ওপর নির্যাতন আরো বাড়বে৷

তবে প্রেসিডেন্টের এই মতামত যুক্তরাষ্ট্রে তখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়নি৷ কংগ্রেসে রেগানের ‘ভেটো' হালে পানি পায়নি৷ যুক্তরাষ্ট্র অতীতের পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে সার্বিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর৷ তাতে খুব চাপে পড়েছিল বর্ণবাদী সরকার, এক সময় ম্যান্ডেলার এএনসির কাছে হার মানতে হয়েছিল বর্ণবাদীদের, দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেছিল শ্বেতাঙ্গ এবং অশ্বেতাঙ্গদের সহাবস্থানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি৷

এই পরিবর্তনে এক পর্যায়ে সরাসরি ভূমিকা রাখলেও যুক্তরাষ্ট্রের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায় কিন্তু ২০০৮ সাল পর্যন্ত ছিল ম্যান্ডেলার নাম৷ ততদিনে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া হয়ে গেছে, ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হয়ে মেয়াদও শেষ করে ফেলেছেন সেই ১৯৯৯ সালে৷ ম্যান্ডেলা তখন অবসর জীবনে৷ তখনও তাঁর ‘সন্ত্রাসী' থাকার বিষয়টি গোচরে আসা মাত্রই নড়েচড়ে বসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন৷ তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় ম্যান্ডেলাসহ এএনসির অন্য সব নেতার নাম৷ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তখন সেনেটর৷ তালিকা থেকে ম্যান্ডেলার নাম বাদ দেয়ার পর তিনি বলেছিলেন, ‘‘অবশেষে বিলটি পাস হলো বলে আমি খুব খুশি৷''

এসিবি/জেডএইচ (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য