1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানের সমস্যার পাহাড় বড় করছে জনসংখ্যাও

২৪ জুলাই ২০১০

২৫ বছর আগেও পাকিস্তানে জনসংখ্যা ছিল বাংলাদেশের চেয়ে কম৷ অথচ এখন তা বেশি৷ ১৭ কোটি ৩০ লাখ লোক নিয়ে বিশ্বের জনবহুল ছয়টি দেশের একটি হলো দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি৷

https://p.dw.com/p/OTXZ
Bevölkerung in pakistan
পাকিস্তানের লোক সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেছবি: AP

পাকিস্তানের পপুলেশন কাউন্সিলের অনুমান, আগামী ২০৩০ সালে জনসংখ্যা ২৪ কোটি ছাড়াবে৷ আর তা সমস্যাসঙ্কুল দেশটির সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলবে৷

চার বছর আগের জরিপ বলছে, পাকিস্তানে প্রতি নারী গড়ে চারটি করে সন্তান প্রসব করে৷ জন্মহার কমাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে মনে করছেন ডা. জুলফিকার আলী ভুট্টা৷ তিনি আগা খান ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান৷

জুলফিকার বললেন, ‘‘পরিবার পরিকল্পনা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক কর্মসূচি আছে সত্য, তবে তা কার্যকর নয়৷ আর এই জন্যই জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি রোধ করা যাচ্ছে না৷ প্রজনন হার এখন অনেক বেশি৷ যে পরিমাণ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী প্রয়োজন, তা মিলছে না৷ আর শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের অনগ্রসরতাও একটা বড় কারণ৷''

সরকারি জরিপ বলছে, অনেক পাকিস্তানিই জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে চান না৷ তারা মনে করেন, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়৷ আবার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত ওষুধপত্র এবং পরিবেশ ভালো না থাকায় সেখানে যেতেও অনেকের অনীহা আছে৷ এর জন্য সরকারি দপ্তরের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকেও দায়ী করলেন পপুলেশন কাউন্সিলের পরিচালক জেবা এ সাত্তার৷

Schulmädchen
পাকিস্তানে প্রতি নারী গড়ে চারটি করে সন্তান প্রসব করে৷ছবি: picture alliance / dpa

‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে ঠিকঠাক রাখার দায়িত্ব যাদের ওপর, তারা সঠিকভাবে তা পালন করছে না৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উদাসীন৷ এনজিওগুলো কাজ করলেও তা যথেষ্ট নয়৷ আমি বলবো, জন্ম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এখন আগের মতো তৎপরতা দেখাচ্ছে না৷'' বলছিলেন ডা. জেবা৷

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান এই বছরই একটি নীতি প্রণয়ন করেছে৷ যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে, প্রজনন হার তিন এ নামিয়ে আনা৷ এর ফলে ১৮ বছরের আগে গর্ভধারণ করে, এমন নারীর সংখ্যা দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার আশা করা হচ্ছে৷ তবে এই নীতি অনুযায়ী কাজ হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে ডা. জুলফিকারের৷

তার কথায়, ‘‘নীতিটি হয়তো কাগজে-কলমেই থাকবে৷ আর জনসংখ্যা বাড়বে আগের গতিতেই৷ এই বছরই আদমশুমারি হওয়ার কথা রয়েছে৷ তাতেই সব কিছু প্রকাশ হবে৷ ১৯৯৮ সালের পর আর আদম শুমারি হয়নি৷ ফলে অনক পুরনো উপাত্ত নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়৷''

জনসংখ্যা বৃদ্ধি যে বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে, সে বিষয়ে সতর্কবার্তা দিলেন ডা. জেবা৷ তিনি বলেন, ‘‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটা বিশাল চাপ হয়ে আসছে আমাদের জন্য৷ পানি, আবাসনসহ বিভিন্ন সমস্যা এখনি পোহাতে হচ্ছে৷ এরপর কর্মসংস্থান সঙ্কট প্রকট হয়ে দাঁড়াবে৷ আগামী ২০ বছরে কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা ৭ কোটিতে দাঁড়াবে৷ এত লোক কাজ করবে কোথায়?''

রাজনৈতিক সংঘাত রয়েছে, আছে জঙ্গি সমস্যাও৷ এতসব সমস্যার মধ্যে জনসংখ্যা সমস্যাটি বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে পাকিস্তানে৷ দেখার বিষয় হলো, সরকার এই সমস্যা সমাধানে কীভাবে কাজ করে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক