1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুরনো দিনের মনোরঞ্জন

২৮ জুন ২০১০

মানে আজ যাকে এন্টার্টেনমেন্ট বলা হয়৷ একেবারে ছোটবেলা থেকে ভাবলে দেখি, মনোরঞ্জন এন্টার্টেনমেন্ট হতে গিয়ে যে বস্তুটি হারিয়েছে, সেটি হল আমেজ৷ নাকি স্মৃতি সততই সুখের?

https://p.dw.com/p/O4fq
বই বদলেছে, পড়ুয়া একই আছেছবি: DW / Harun-ur-Rashid Swapan

একেবারে ছোটবেলায় মা দুপুরে ঘুম পাড়ানোর সময় হয় গল্প বলতেন, নয়তো পড়ে শোনাতেন, যেমন অবন ঠাকুরের ‘নালক' কি ‘বুড়ো আঙলা'৷ সে যেন গল্প শোনা, গল্প বলার হাতেখড়ি৷ ব্রতকথা শুনেছি দিদিমণি, মানে মা'র মায়ের কাছ থেকে৷ আর শুনেছি মাতৃপক্ষের দেশের বাড়ি বসিরহাটের নানা গল্প - সুন্দরবনের আবাদ এবং ‘আবাদে'-দের গল্প - হয়তো তাদের দেখেও থাকতে পারি৷

গল্প পড়া শুরু হয় ছোটদের মাসিক পত্রিকা শিশুসাথী, শুকতারা, সন্দেশ ইত্যাদি দিয়ে৷ ধারাবাহিক নারায়ণ গাঙ্গুলির ‘চারমূর্তি', ‘চারমূর্তির অভিযান' বার হতে দেখেছি৷ ছোটদের হাসির গল্পের জন্য ছিলেন শিব্রাম চক্কোত্তি আর আশা দেবী৷ লীলাদি, মানে লীলা মজুমদারের ‘দিন-দুপুরে'-র সঙ্গে পরিচয় পরে৷ পুজোর সময় ছিল ছোটদের জন্য মোটা মোটা সঙ্কলন, যেমন দেব সাহিত্য কুটিরের৷ তার অলঙ্করণের কথা ভাবলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়: আমরা বাঙালীরা কি এ্যাতোই বড়লোক, এ্যাতোই রসবোধসম্পন্ন ছিলাম?

পিতৃদেবের বই লেখার কল্যাণে হঠাৎই রবি ঠাকুরের সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেল - ক্লাশ সেভেনে৷ তারপর শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র৷ ‘বড়দের বই'-এর মধ্যে সবার আগে পড়েছি তারাশঙ্কর৷ বিভূতিভূষণ, সতীনাথ ইত্যাদি তীর্থ করার মতো করে এসেই সে-আমলের সেই সব ‘সাহেব-বিবি-গোলাম' থেকে শুরু করে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম' - দড়ি দিয়ে বাঁধলাম গোত্রীয় উপন্যাস৷ এই সব পাঠ্য-অপাঠ্য বই, মা'র পরিভাষায় যেগুলোকে বলা হতো নাটক-নবেল, সেগুলো আসতো মা'রই কলেজের লাইব্রেরি থেকে, যেখানে মা পড়াতেন৷ আসলে ছুটির দিনে দিবানিদ্রায় সাহায্য করার জন্য৷ গোগ্রাসে গিলতাম কিন্তু আমরা ভাই-বোনেরা৷ এখনও মনে আছে, বড়দের বই পড়ছে বলে ছোট ভাই - যে এখন ক্যানাডায় আছে - তার কান টেনে ধরেছিলাম৷ সে কাঁচুমাচু হয়ে বলল: ‘মারছিস কেন, দাদা? ও আমি পড়ে দেখেছি৷ ও'তে বড়দের কিছু নেই৷'

এ'ও বোধহয় মানুষ হবার এক পন্থা৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম