পুরুষদের ফ্যাশনও কিছু কম যায় না!
বিশেষ করে এই জুন মাসে মিলান থেকে প্যারিস অবধি নানা ফ্যাশন শো আর রানওয়েতে পুরুষদের ফ্যাশনে লেটেস্ট ট্রেন্ড কি হতে চলেছে, তা দেখতে পাওয়া যাবে৷ নামকরা কোম্পানির লোগো থাকা চাই, নাকি জাম্পসুট হলেই চলবে?
মেরা জুতা হ্যায় জাপানি
আজ আর শুধু জুতো নয়, সাজপোশাকেও জাপানি ঢেউ লেগেছে৷ এবারের গ্রীষ্মে ইউরোপের ফ্যাশন শো-গুলোতে জাপানি কিমোনোর প্রভাব চোখে না পড়ে উপায় ছিল না৷ পুরুষদের ফ্যাশনে আগামী বসন্তে নাকি কিমোনো বা কিমোনো গোত্রীয় জামাকাপড় অপরিহার্য৷ ফ্যাশন উইকস-এর কয়েক সপ্তাহে যে ট্রেন্ড সৃষ্টি হয়, তার জেরে পরের বছর লক্ষ লক্ষ পিস বিক্রি হয় – এই হলো নিয়ম৷
‘ইস্টার্ন লুক’ বলতে বোঝায় রাশিয়া কি জর্জিয়া...
নব্বই-এর দশকের সোভিয়েত-পরবর্তী ফ্যাশনের ট্রেডমার্ক ছিল তার সস্তার রঙচঙে সব প্রিন্ট, যার নান্দনিক গুণাগুণ নাকি জেনেশুনেই একটু নিম্নশ্রেণির হতো৷ ফ্যাশন ট্রেন্ডটা আসলে শুরু হয় রাশিয়ার গশা রুবচিনস্কি ও জর্জিয়ার দেমনা গোয়াসালিয়া-র মতো ডিজাইনারদের দিয়ে৷ পরে সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে৷ আর আজ তো ইনস্টাগ্রাম স্যাভি মিলেন্নিয়াল প্রজন্মের ঐ ‘লো ক্লাস এস্থেটিকস’ ছাড়া দিন কাটে না...
দ্য নেম অফ দ্য গেম
এক কথায় লোগো বা কোম্পানির প্রতীক, এককালে যাকে ট্রেডমার্ক বলা হতো৷ লোক দেখানোর জন্যই তো লোগো৷ নব্বই-এর দশকের প্রবণতাটি দৃশ্যত আবার ফিরতে চলেছে৷ মজার কথা, নামকরা কোম্পানির লোগোর অনুকরণে তৈরি ভুল বানান ও ছবির লোগো সস্তার জামাকাপড়ে ছেপে তা কম দামে বিক্রি করার ফ্যাশন শুরু হয়েছিল মিলেনিয়ামের পর পর৷ বড় কোম্পানিরাই তা রোখার চেষ্টা করেছিল৷ আজ আবার তারাই নিজেদের পণ্য নিজেরাই ‘প্যারডি’ করছে!
শ্রেণীবিভেদ
ফ্যাশন ব্যাপারটা ওপরমহলের মানুষদের জন্য, খেটে খাওয়া মানুষদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই – এটা ভাবলে কিন্তু ভুল হবে৷ প্রথমত পশ্চিমি দুনিয়ায় তথাকথিত ‘ওয়ার্কিং ক্লাস’ বিত্তশালী না হলেও, স্বচ্ছল – তাঁরাও ফ্যাশনেবল জামাকাপড় কিনতে পছন্দ করে৷ কাজেই গার্মেন্টস বেচার লো-কস্ট চেইন আউটলেটগুলোয় জাম্পসুট, হাফহাতা শার্ট বা কার্গো প্যান্ট বিক্রি হয় ঠিক হাই ফ্যাশনের মতোই৷
জীবন থেকে চুরি করাই হলো ফ্যাশনের কাজ
জীবন, মানে হালে যাকে লাইফস্টাইল বলা হয়৷ আজকের দুনিয়ায় আসল ট্রেন্ড হচ্ছে হেল্থ৷ সুস্থ থাকা, নিয়মিত দৌড়ঝাঁপ করা, খাওয়াদাওয়ার দিকে, ওজনের উপর নজর রাখা৷ কাজেই অ্যাক্টিভওয়্যার এখন জিম ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে, ফ্যাশন ডিজাইনাররা সিন্থেটিক ম্যাটেরিয়েলের তৈরি শর্টস, লেগিংস, টপ ইত্যাদি সংগ্রহে রাখতে শুরু করেছেন৷ আর্বান সাবকালচার বা শহুরে অবসংস্কৃতি যা শুরু করে, ফাস্ট ফ্যাশন শীগগিরই তার ল্যাজ ধরে ফেলে৷
সুটবুটের দিন যায়নি...
সুট ছাড়া মেনস ফ্যাশন কোনোকালে সম্ভব ছিল না, আজও সম্ভব নয়৷ তবে তার চেহারা বদলে গেছে৷ জ্যাকেট, শার্ট, ভেস্ট, প্যান্ট বা ট্রাউজার্স – এসব আছে বটে, কিন্তু যেন অ্যাক্টিভওয়্যারের সঙ্গে মিশে গেছে৷ আজ অনেকে সুটের সাথে স্নিকার্স পরেন, হাতে ব্রিফকেসের বদলে কাঁধে ঝোলানো থাকে ব্যাকপ্যাক – এককালে যাকে রাকস্যাক বলা হতো৷ সব মিলিয়ে, এলিগান্স বা সৌখিনতা নয়, কেয়ারলেসনেস বা অগোছালো ভাব – ঐ কেয়ারফুলি কেয়ারলেস আরকি!