1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘পুরুষরা নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদে বাধ্য করে'

১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সোমবার ছিল যৌনাঙ্গচ্ছেদ বিরোধী বিশেষ আন্তর্জাতিক দিবস৷ এই দিনে জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী যৌনাঙ্গচ্ছেদ বন্ধের জোর আহ্বান জানায়৷ ডয়চে ভেলে তানজানিয়া আর গিনি-বিসাউয়ের উপর এই প্রতিবেদনটি করেছে৷

https://p.dw.com/p/2XIv8
ছবি: picture-alliance/dpa/Unicef/Asselin

গত ৬ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হয় ইন্টারন্যাশনাল ডে অব জিরো টলারেন্স অব ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন৷ তো সারা বিশ্বে যখন যৌনাঙ্গচ্ছেদ বন্ধের দাবি জোরালো হচ্ছে, তখন তানজানিয়া আর গিনি-বিসাউয়ের পরিস্থিতি কেমন?

কিলিমাঞ্জারো পর্বতের খুব কাছে তানজানিয়ার মানইয়ারা গ্রাম৷ ২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ঘটনা৷ এক দাদী ছুরি দিয়ে তার নাতনীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ করেছেন৷ দুই সপ্তাহেও রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় ঐ মেয়েটির হাসপাতালে মৃত্যু হয়৷ তার বয়স ছিল ১৭ বছর৷ তানজানিয়ায় নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ নিষিদ্ধ হয়েছে ২০ বছর আগে৷ কিন্তু এমন কিছু ঘটনা থেকেই বোঝা যায়, নিষিদ্ধ হলেও নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ এখনো বন্ধ হয়নি৷

তানজানিয়ার উত্তর পশ্চিমের মারা অঞ্চলের পুলিশ কর্মকর্তা সমু নাসোনগোমা ডয়চে ভেলেকে জানালেন, তাঁরা নতুন নতুন ঘটনার খবর পাচ্ছেন৷ যৌনাঙ্গচ্ছেদ করায় অনেককে গ্রেপ্তারও করেছেন, কিন্তু আদালতে সবাই রেহাই পেয়ে যায়৷

যৌনাঙ্গচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে মিমুতি নামে একটি সংগঠন৷ সংগঠনের প্রধান রোজ নিজিলো জানালেন, তানজানিয়ার উত্তরাঞ্চলের ২৫ শতাংশেরও বেশি নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ হয়েছে৷ গত দুই বছর ধরে এফজিএম বা নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা৷ যৌনাঙ্গচ্ছেদ অবৈধ হওয়ার পরও প্রত্যন্ত ও যাযাবর গোষ্ঠীর মধ্যে এর প্রচলন খুব বেশি বলেও জানালেন তিনি৷ যৌনাঙ্গচ্ছেদের ফলে যে মানবদেহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এ বিষয়ে মাসাই এবং অন্যান্য আদিবাসী গোষ্ঠী অবহিত নয়৷ তাঁদের ধারণা, এটা তাঁদের সংস্কৃতির অংশ এবং এর ফলে একজন মেয়ে নারীতে পরিণত হয়৷

নিষেধাজ্ঞার পরও গিনি-বিসাউয়ে চলছে যৌনাঙ্গচ্ছেদ

২০১১ সাল থেকে আফ্রিকার এই দেশটিতে নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ নিষিদ্ধ৷ কিন্তু মুসলিমদের একটি অংশ এখনো তা চালিয়ে যাচ্ছে৷ দেশটিতে ৪০টি আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস এবং মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক মুসলিম৷ রাজধানী মিসরা'র মুসলিমদের প্রধান ইসাইয়া জেলো ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘গিনি-বিসাউয়ের ৯৫ শতাংশ মুসলমান বিশ্বাস করেন, ইসলামে নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের কথা বলা হয়েছে৷ এই দেশে হাজার বছর ধরে ইসলামিক আদিবাসীদের মধ্যে এই প্রথা চলে আসছে৷'' জেলো নিজেও বিশ্বাস করেন, নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ করা উচিত৷

২০১১ সাল থেকে আফ্রিকার এই দেশটিতে নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ নিষিদ্ধ
২০১১ সাল থেকে আফ্রিকার এই দেশটিতে নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ নিষিদ্ধছবি: Weltfriendensdient e.V.

তবে দেশটির সাবেক পরররাষ্ট্র মন্ত্রী ফাতুমাতা ডিজো এই প্রথার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তাঁর মতে, গিনি-বিসাওয়ের পুরুষরা নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদে বাধ্য করে৷ তারাই প্রচার করে, এটা নাকি ধর্মীয় অনুশাসন৷ অনেকে এমনও প্রচার করে যে, কোরানে যৌনাঙ্গচ্ছেদের কথা বলা হয়েছে৷ বেশিরভাগ নারীই তাদের কথা বিশ্বাস করেন, কেননা, তাঁরা নিজেরা পড়তে, লিখতে জানেন না৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গিনি-বিসাউয়ের অর্ধেক নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে৷ তবে বিভিন্ন সংগঠনের প্রচারণার কারণে ১৪৬ টি গ্রামে বিভিন্ন সম্প্রদায় নারীদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ বন্ধে সম্মত হয়েছে৷ তবে এজন্য শিক্ষা এবং সচেতনতা খুব জরুরি বলে মনে করেন ফাতুমাতা৷

প্রতিবেদন: আন্তোনিও কাসকাইস/এপিবি

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য