রোজার সময় জিনিস-পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বন্ধু আবদুল্লাহেল ফরিদ জানিয়েছেন, ‘‘রোজার সময় যোগানের চেয়ে চাহিদা খুব বেশি৷ উদাহরণস্বরূপ, মানুষের হয়ত এক মাসে ২ কেজি পেয়াজে চলে, কিন্তু রোজার আগে তারা ১০ কেজি কেনে৷ তেল হয়ত অন্যান্য সময় ৫ লিটার লাগে, কিন্তু রোজার আগে ১৫ লিটার এক সাথে কেনে৷ এভাবে প্রকৃত প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কেনার ফলে প্রতিটা পণ্যের অস্বাভাবিক চাহিদা সৃষ্টি হয় আর তাতেই দামটা বেড়ে যায়৷''
পাঠক রায়হান শ্রাবনও তাঁর সাথে একমত৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘হ্যাঁ, এটাও একটা বড় কারণ, আমরাও দোষী৷''
মাসুদ হাসানের পরামর্শ, ‘‘সম্ভব হলে যে আইটেমগুলোর দাম বেশি তা এড়িয়ে চলা যেতে পারে৷ বেগুনি, পেঁয়াজু, ছোলা এগুলো না খেলেই হয়!''
এডউইন অধিকারী রোজার মাসে যারা বেশি মুনাফা করবে, তাদের ‘নাস্তিক' বলে মন্তব্য করেছেন৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
জার্মানিতে তুর্কি মুসলমানই বেশি
জার্মানিতে প্রায় ৪০ লাখ মুসলমানের বসবাস৷ তাঁদের মধ্যে প্রায় ২,৫ মিলিয়নই তুর্কি বংশোদ্ভূত৷ বাকিরা এসেছেন দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশ থেকে৷ জার্মানির বিভিন্ন শহরে অনেক মসজিদ রয়েছে এবং এর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
সেনাবাহিনীতে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা
জার্মান সেনাবাহিনীতে রয়েছে প্রায় হাজার খানেক মুসলমান সৈন্য৷ বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে রোজার সময় মুসলমান সৈন্যদের জন্য রাতেও ক্যান্টিন খোলা রাখা হয়৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
রোজার মাস ত্যাগের মাস
রোজার মাস ত্যাগের আর সংযমের মাস৷ রোজা শুরু হওয়ার ঠিক আগের দিন কোলনে একটি তুর্কি ‘বেকারি’ থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে মিষ্টিজাতীয় লোভনীয় খাবারগুলো৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
তারাবির নামাজ
জার্মানির মসজিদগুলোতে সারা বছরই নামাজ পড়া ও ইবাদত করা হয়৷ তবে রোজার মাসে স্বাভাবিকভাবেই বিশেষ আয়োজন থাকে৷ প্রতিদিনই পড়া হয় তারাবির নামাজ৷ কোলনের একটি মসজিতে তারাবির নামাজে অংশ নেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমানরা৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
ইফতার খাওয়া
সারাদিন রোজা রাখার পর, অন্যান্য দেশের মতো জার্মানির বিভিন্ন মসজিতে ইফতারের আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং যে কেউ এই ইফতারে অংশ নিতে পারেন৷ ইফতারের জন্য অনেকেই বাড়ি থেকে প্রচুর খাবার পাঠিয়ে দেন, যাতে রোজাদাররা ভালোভাবে ইফতার করতে পারেন৷ তুর্কি মসজিদগুলোতে অনেকেই শুধু খেজুর আর দুধ দিয়ে রোজা ভেঙে নামাজ পড়েন এবং পরে সবাই মিলে ইফতার করেন৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
মুসলমান মহিলারা
অনেক সময় আলাদাভাবে শুধু মহিলাদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়ে থাকে৷ তাঁরা একত্রে নামাজ পড়েন এবং ধর্মীয় নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকেন৷ সেই আলোচনায় স্থান পায় অভিবাসী পরিবারের নানা সমস্যার কথাও৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
রোজার সময় ভিড় কম
জার্মানিতে রয়েছে প্রচুর তু্র্কি রেঁস্তোরা৷ এই রেঁস্তোরার মালিকের ভাষায়, অন্য সময় অনেক ভিড় হলেও রোজার মাসে মানুষ কম আসে৷ রোজার সময় আলাদাভাবে রাতের খাবার তৈরি করা হচ্ছে ছবিতে৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
বাঙালি মসজিদ
বন শহরে বাঙালিদের উদ্যোগে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে শুধু বাঙালি মুসলমান নন অন্যান্য দেশের মুসলমানও আসেন নামাজ পড়তে এবং রোজার সময় ইফতার করতে৷
-
জার্মানিতে রোজার মাস
বার্লিনের মসজিদ
এই মসজিদটি বার্লিন শহরে, যেখানে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা, বিশেষকরে রোজার সময় একত্রিত হয়ে নামাজ পড়েন, কোরান পড়েন এবং দোয়া করেন সবার মঙ্গল ও শান্তির জন্য৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
আশিক হোসেন রিঙ্কুর মতে, রোজার সময় জিনিস-পত্রের দাম রোধ করতে পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের সৎ হতে হবে৷
রোজার মাস মানেই সংযমের মাস৷ তাই জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কে হালদারের পরামর্শ, ‘‘মজাদার খাবার আর ভুড়িভোজ বাদ দিয়ে আমাদের নিত্যদিনের খাবার খেলে এ সব ব্যবসায়ীরা সোজা হয়ে যেতে পারে৷''
বাস্তববাদী পাঠক শ্রাবণ রায়হান বলেন, ‘‘সরকার এ ক্ষেত্রে কিছুই করতে পারে না, কেননা বর্তমান রাজনীতিতে ব্যবসায়ীরাই বেশি৷ আর ব্যাবসা মানেই যে বাড়তি লাভের ধান্দা, এটা সবাই জানে৷ কথা সেই একটাই, শর্ষেতেই ভূত আছে৷ তাই যতই জনগণ যতই লাফঝাপ করুক না কেন কোনো লাভ নাই৷''
জিনিস-পত্রের দাম বাড়ার কারণকে বন্ধু হাসনাত রায়হান কিন্তু সরকারকেই দায়ী করছেন৷ তিনি বলছেন, ‘‘সরকারের মরণ হলে ভালো হয়৷''
মো. হাবিবুর রহমান অবশ্য দাম বাড়ার জন্য সরকারকেই দায়ী করেছে৷ সরকার নাকি এ ব্যাপারে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ