1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পৃথক তেলেঙ্গানা কি সমস্যা বাড়াবে?

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১ আগস্ট ২০১৩

অন্ধ্রপ্রদেশকে ভেঙে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের সবুজ সংকেত দিয়ে কংগ্রেস জোট সরকার গোটা দেশে ছোট ছোট রাজ্য গঠনের আন্দোলনে যে ইন্ধন জোগাল, তাতে কংগ্রেসের রাজনৈতিক ফায়দা যতটুকু হবে তার চেয়ে ক্ষতি হবে বেশি৷

https://p.dw.com/p/19Hsr
Telangana Joint Action Committee (T-JAC) activists carry large rocks as they taunt police during a pro-Telangana protest in Hyderabad on June 14, 2013. The T-JAC and Telangana Rashtra Samiti (TRS) party has called for the 'Chalo Assembly' programme to demand the UPA government to announce statehood for Telangana in the southern Indian state of Andhra Pradesh. AFP PHOTO / Noah SEELAM (Photo credit should read NOAH SEELAM/AFP/Getty Images)
ছবি: NOAH SEELAM/AFP/Getty Images

তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় আজ থেকে ৬০ বছর আগে৷ তা নিয়ে কেন্দ্রের কোনো সরকারই তেমন মাথা ঘামায়নি৷ সাড়ে তিন বছর টালবাহানার পর অবশেষে ভারতের দক্ষিণী রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশকে ভেঙে আলাদা তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের সবুজ সংকেত দেয় কেন্দ্রের কংগ্রেস-জোট সরকার৷ কিন্তু কেন? কারণটা সহজবোধ্য৷ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের ভোটব্যাংক৷

প্রশ্ন হলো সেটা কি পূরণ হবে? হলে কতটা? অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে ৪২টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২০০৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৩টি আসন৷ বিভাজনের পর তেলেঙ্গানা-বিরোধী শিবিরের ভোট কি ধরে রাখতে পারবে কংগ্রেস? অন্যান্য রাজ্যে আলাদা রাজ্য গঠনের সমর্থকদের ভোটব্যাংক কী ধরে রাখতে পারবে কংগ্রেস? তাহলে লাভের গুড় তো পিঁপড়েই খাবে৷ রাজ্য কংগ্রেসের অনেক সাংসদ ও বিধায়ক পৃথক তেলেঙ্গানা গঠনের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন৷

দ্বিতীয়ত, পৃথক তেলেঙ্গানা গঠনের সিদ্ধান্ত অনুঘটকের ভূমিকা নিতে চলেছে৷ বিভিন্ন রাজ্য থেকে স্লোগান উঠছে আরো রাজ্য চাই৷ দাবি উঠছে গোর্খাল্যান্ড, বোড়োল্যান্ড, বিদর্ভ, বুন্দেলখন্ড, হরিৎপ্রদেশ ও জম্মু৷ সেটা কি সামলাতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার? পৃথক রাজ্যের দাবিতে আবহাওয়া ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে৷ সহিংসতার অশনিসংকেত স্পষ্ট৷ বিভিন্ন রাজ্যে গন্ডগোলের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে, বিশেষ করে অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশে৷

গোর্খাল্যান্ডের দাবি তেলেঙ্গানা থেকে পুরানো৷ প্রথম দাবি উঠেছিল ইংরেজ আমলে আজ থেকে ১০৭ বছর আগে৷ দার্জিলিং এবং ডুয়ার্স অঞ্চলে নেপালি ভাষাভাষী গোর্খা জনগোষ্ঠী নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র রাজ্যের দাবি করেছিল৷ ৮০-দশকে সুভাষ ঘিসিং-এর নেতৃত্বে গোর্খাল্যান্ড নামে পৃথক রাজ্যের আন্দোলন সহিংসতার চেহারা নেয়৷ দেশের ২৯-তম রাজ্য হিসেবে তেলেঙ্গানার জন্ম হলে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকে নতুন করে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের ডাক দেন৷ এর পরিণাম কী হবে জানা নেই৷

আসামকে টুকরো করে পৃথক বোড়োল্যান্ডের দাবিতে জোরেসোরে আওয়াজ তুলেছে বোড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট এবং বোড়ো স্টুডেন্ট ইউনিয়ন৷ দাবি উঠেছে মহারাষ্ট্রের কয়েকটি জেলা নিয়ে আলাদা বিদর্ভ রাজ্য গঠনের৷ আন্দোলনকারীদের যুক্তি বিদর্ভ কার্যত শুখা অঞ্চল৷ বিকাশ থেকে বঞ্চিত এই অঞ্চলের নিত্যসঙ্গি দারিদ্র্য৷ ঐ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য তাই পৃথক রাজ্য গঠন জরুরি৷ উল্লেখ্য ১৯৫৬ সালে মধ্যপ্রদেশের মারাঠি ভাষাভাষী ৮টি জেলাকে ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন নীতিতে মহারাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল৷

প্রস্তাব উঠেছে উত্তরপ্রদেশকে ভেঙে চারটি রাজ্য করার৷ সবথেকে জোরালো দাবি রাজ্যের ২২টি জেলা নিয়ে হরিৎপ্রদেশ গঠনের৷ পৃথক বুন্দেলখন্ড রাজ্যের স্বপ্ন বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর৷ তাঁর শাসনকালে ঐ দিশায় কিছুটা কাজও উনি করেছিলেন৷ ক্ষমতা হারানোর পর শাসকদল এসপি তাতে কান দেয়নি৷ কংগ্রেস অবশ্য বুন্দেলখন্ডের সমর্থক৷ অন্যদিকে জম্মু এবং কাশ্মীরকে দুটি আলাদা রাজ্য করার দাবি তুলেছে শিবসেনা৷ পাশাপাশি লাদাখের বৌদ্ধ সম্প্রদায় চাইছে স্বশাসন৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বলা বাহুল্য তার বিরোধী৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা রসিকতা করে বলেছেন, কংগ্রেস যতটা খেয়ে হজম করতে পারবে, তার চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেছে৷ ফল, বদহজম৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য