পৃথিবীর বুকে মঙ্গল অভিযান!
মানুষ মঙ্গলগ্রহ অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ কিন্তু তার মহড়া তো চাই! মঙ্গলগ্রহের সঙ্গে মিল থাকার কারণে বিজ্ঞানীরা অস্ট্রিয়ার এক হিমবাহে সেই কাজ চালাচ্ছেন৷
আমাডি-১৫
অস্ট্রিয়ার মহাকাশ ফোরাম এই নামে কাউয়ার্ন উপত্যকার হিমবাহে দুই সপ্তাহের প্রকল্প শুরু করেছে৷ বার্লিনের কারমেন ক্যোলার ও স্পেনের ইনিয়োগো মুনিয়োস ‘মহাকাশচারী’ হিসেবে তাতে অংশ নিচ্ছেন৷ বিশ্বের অন্য কোথাও নাকি এমন ‘মঙ্গল’-জনক পরিবেশ পাওয়া যায় না৷
ভারী পোশাক
স্পেস সুটের নিজস্ব ওজনই ৪৮ কিলো! অগ্নিনিরোধক সিন্থেটিক ফাইবার ‘কেভলার’ দিয়ে তৈরি এই বিশেষ পোশাকে অ্যালুমিনিয়ামের স্তরও রয়েছে৷ কারমেন জানালেন, এই পোশাক পরে ওঠাবসা করা খুবই কঠিন৷ শুধু এই পোশাক পরার অধিকার পেতে তাঁকে ৫ মাসের প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে৷ কারমেন পেশায় গণিতবিদ ও আবহাওয়াবিদ৷
মঙ্গলের মতোই বরফ ও নুড়িপাথরে ঢাকা
গ্রীষ্মে এই হিমবাহের উপরিভাগ জমাট বরফ ও নুড়িপাথরের স্তরে ঢাকা থাকে৷ ফলে মঙ্গলগ্রহের মতোই সেখানে চলাফেরা করা কঠিন৷ তবে এমন ‘আদর্শ পরিবেশ’ পেয়ে গবেষকরা আহ্লাদিত৷ তার উপর এবার দুটি ‘মার্স-রোভার’-ও পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে৷ বড় পাথরের টুকরোও এই যানকে থামাতে পারে না৷
পিস্টেনবুলি-র বদলে রোভার
রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে যে গাড়িটি চালানো হচ্ছে, সেটি অবিকল ‘অপারচুনিটি’ রোভার-এর মতো দেখতে৷ ২০১২ সালে ‘কিউরিয়সিটি’ মহাকাশযান মঙ্গলগ্রহে নামার পর প্রায় ১১ বছর ধরে এই রোভার সেখানে কাজ করে চলেছে৷ তবে পৃথিবীর বুকে এমন পরীক্ষা চালানো অনেক সহজ৷ মঙ্গলগ্রহে সিগনালের আদানপ্রদান করতে ২০ মিনিট লেগে যায়৷
দাঁতের ব্যথা হলেই মুশকিল!
মঙ্গলগ্রহে মানুষের অভিযান চলবে প্রায় ৩ বছর ধরে৷ এই সময়ে কত কিছুই না ঘটে পারে৷ ফলে বিজ্ঞানীরা অনেক দৈনন্দিন সমস্যা নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছেন৷ যেমন মহাকাশে হঠাৎ দাঁতে ব্যথা হলে কী হবে? কোনো চিন্তা নেই৷ মহাকাশযানের থ্রিডি প্রিন্টার নকল দাঁত বানিয়ে দেবে৷ তবে হ্যাঁ, শরীর ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে৷
বাষ্প দিয়ে স্নান
প্রায় ১৯টি দেশের ১০০ গবেষক এমন অভিযানের নানা দিক নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন৷ ১২টি বিভিন্ন পরীক্ষা কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে৷ যেমন বাষ্প দিয়ে স্নান করার এক শাওয়ারের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা৷ এতকাল মহাকাশে ভিজে টিস্যু দিয়েই শরীর পরিষ্কার করতে হতো৷
মহাকাশযানের বদলে কেবেল কার
যন্ত্রপাতি, সাজসরঞ্জাম ও মানুষ স্কি-লিফট-এ করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই হিমবাহের উপর পাঠানো হচ্ছে৷ আসল মঙ্গল অভিযানে গন্তব্যে পৌঁছাতে লাগবে প্রায় এক বছর৷ তখন মাঝপথে হেলমেট খুলে জিরিয়ে নেবার উপায় থাকবে না বলেই মনে হয়৷
মঙ্গলগ্রহে তুষারপাত হয় না
গ্রীষ্মের মাসগুলিতেই গবেষকদের এই প্রকল্পের কাজ সারতে হবে৷ তার ঠিক পরেই হিমবাহে বরফ পড়তে শুরু করবে৷ মার্স রোভারও তখন এমন গুঁড়ো বরফের উপর অচল হয়ে পড়বে৷ এই অভিযান সম্পর্কে আরও জানতে উপরে ডানদিকের লিংক ক্লিক করুন৷