1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রকৃতি সংরক্ষণ

৩ মে ২০১৩

প্যারাগুয়ের ৯৬ শতাংশ জমি বেসরকারি মালিকানায় থাকায় এমনকি প্রতিবেশী দেশের লোকজনও সেই জমি কিনে ফেলছে৷ প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্যকে বাঁচাতে উপজাতীয় নেতারা নিজেদের জমি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/18QFy
ছবি: Friends of the Earth

বিপন্ন প্রাকৃতিক সম্পদ

রাজধানী আসুনসিয়ন থেকে বিমানে দু'ঘণ্টা যেতেই শুরু হয় খেত, মাঠঘাট৷ আগে এখানে ঘন জঙ্গল ছিল, যা ক্রমেই আরো তাড়াতাড়ি উধাও হতে দেখেছেন ‘গুইরা প্যারাগুয়ে' নামের প্রকৃতি সংরক্ষণ সংগঠনের আলব্যার্তো ইয়ানোস্কি৷ প্রতিদিন হারিয়ে গেছে প্রায় এক হাজার হেক্টার জঙ্গল৷ যার আয়তন প্রায় ব্রিটেনের সমান৷ জঙ্গল কেটে তৈরি হয় গরু চরানোর মাঠ৷

ইয়ানোস্কি আর তার সহকর্মীরা নিয়মিতভাবে পরখ করেন, কতটা জঙ্গল কাটা বা পোড়ানো হয়েছে৷ তারপর স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবির সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখেন৷ এলাকার ওপর দিয়ে পাঁচ ঘণ্টা ওড়ার পর কঠিন উপলব্ধি হয় তাঁদের৷ জীববিজ্ঞানীরা যতটা আশঙ্কা করেছিলেন, তার চেয়েও বেশি জঙ্গল কাটা হয়েছে৷

ইয়ানোস্কি বললেন, ‘‘প্যারাগুয়েতে গরু চরানোর জমির চাহিদা বিরাট৷ পাশের আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের মতো দেশ থেকেও অনেক খামার-মালিক এখানে আসেন জমি কিনতে, কেননা তাদের নিজের দেশে জমির দাম বেশি৷ ওদিকে গরুর মাংসের উৎপাদনে প্যারাগুয়ে আজ বিশ্বে ন'নম্বর৷ রাজধানী আসুনসিয়ন হলো দেশের অর্থনীতির কেন্দ্র৷''

19.03.2013 DW Magazine Global 3000 Klima Paraguay
উপজাতিদেরর জনজীবন হুমকির মুখে

জমির যথেচ্ছ ব্যবহার

প্যারাগুয়ের ৯৬ শতাংশ জমি বেসরকারি মালিকানায়৷ কাজেই তা সহজে কেনা বা বেচা সম্ভব৷ দেশের পূর্বাঞ্চলে তার ফল দেখতে পাওয়া যায়৷ এককালে এখানে ‘রেইনফরেস্ট' ছিল, যেখানে প্রায় বিশ হাজার বিভিন্ন ধরনের গাছপালা পাওয়া যেত৷ আজ সে সব গাছপালার ৯০ শতাংশ উধাও হয়ে গেছে৷ যা বাকি আছে, ইয়ানোস্কি ও তাঁর সংগঠন তা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, প্রায় বিশজন কর্মী নিয়ে৷ জঙ্গল কাটার হিসেব রাখছেন৷ নিজে জঙ্গল মহল কিনছেন, যেমন এখানে সান রাফায়েলে৷

আলব্যার্তো ইয়ানোস্কির সংগঠন সাত হাজার হেক্টার জঙ্গল কিনেছে ও আরো কিনবে, এই অঞ্চলের সুবিশাল প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্যকে বাঁচানোর প্রচেষ্টায়৷ জঙ্গল তো শুধু গাছপালা আর জীবজন্তুর জন্যই নয়৷ জঙ্গলে মানুষও বাস করে৷ যেমন ইউসেবিও চাপারো৷ সে একজন ‘কাসিক', ম্-বিয়া গুয়ারানি-দের নেতা৷ এই উপজাতির ২৫টি পরিবার এই জঙ্গলেই বাস করে৷ এখানেই তারা খাবার-দাবার, ঘর তৈরির মালমশলা, জড়িবুটি, তাদের যা কিছু প্রয়োজন, খুঁজে পায়৷

চাপারোর গুয়ারানিরা সরকারের কাছ থেকে মাত্র দশ বর্গকিলোমিটার জঙ্গল পেয়েছে৷ মহলটা আলব্যার্তো ইয়ানোস্কির পরিবেশ সংরক্ষণ সংগঠনের জমির লাগোয়া৷ গুয়ারানিরা আলব্যার্তোর সঙ্গে মিলে আরো জঙ্গল কিনতে চায়৷ উপজাতীয় নেতা ইউসেবিও চাপারো বললেন, ‘‘আমরা অন্যভাবে বাঁচতে পারব না৷ জঙ্গলে শিকার করা, শিকড়বাকড় খোঁজা, মধু বানানো, এই হলো আমাদের ঐতিহ্য৷ অন্য কোথাও গেলে আমরা সে সব করতে পারব না৷''

কিন্তু জমির দাম চড়া, তা সে জঙ্গুলে হলেও৷ ম্-বিয়া গুয়ারানিরা ভুট্টার দানা আর মধু বেচে সেই জমি কেনার টাকা সংগ্রহ করবে৷ এ ভাবে পরিবেশ সংরক্ষণকারী আর উপজাতির মানুষেরা মিলে প্যারাগুয়ের শেষ দশ ভাগ রেইন ফরেস্ট বাঁচানোর চেষ্টা করবে৷

এসি/ডিজি