1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিরক্ষা চুক্তি কি হচ্ছে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৭ মার্চ ২০১৭

এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে দিল্লির মূল আগ্রহ ঢাকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি৷ এর জন্য বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহয়তা দিতে প্রস্তুত ভারত৷ তবে বাংলাদেশ প্রাধন্য দিচ্ছে তিস্তার পানিবন্টন চুক্তির ওপর৷

https://p.dw.com/p/2YicL
Indien und Bangladesch regeln jahrzehntealten Grenzstreit
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এর খবরে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত এমন একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি চাইছে যার আওতায় প্রশিক্ষণ, সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি এবং দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়৷' নিজস্ব সূত্রের বরাত দিয়ে এতে আরও বলা হয়, ‘প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে, তবে এখনও চূড়ান্ত হয়নি৷ বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার জন্য ভারত ৫০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত  ঋণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত৷ চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে এটি হবে প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ঋণ-সহযোগিতা৷

গত বছরের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে দু'টি সাবমেরিন কিনেছে, যা স্বাভাবিকভাবেই ভারতের জন্য অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি করে৷ বলা বাহুল্য, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সামরিক সরঞ্জামও সরবরাহ করে চীন৷ গত বছর বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে ২৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ-সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি৷ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর ঢাকা সফরে এ ব্যাপারে কয়েকটি চুক্তিও সই হয়৷

দক্ষিণ-এশিয়াভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলছে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত কয়েকটি চুক্তি এবং তাদের কাছ থেকে সাবমেরিন কেনার পর ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তার প্রশ্নে উদ্বিগ্ন ভারত৷ সেই উদ্বেগ দূর করতেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে প্রতিরক্ষা চুক্তির তোড়জোড় করছে ভারত৷ হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ‘প্রতিরক্ষা খাতে চীন-বাংলাদেশ নৈকট্য বাড়ছে৷ আর এ কারণেই বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির ব্যাপারে ভারত উঠেপড়ে লেগেছে৷'

আব্দুর রশিদ

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি যদি সহযোগিতামূলক হয় তাহলে তা উভয় দেশের জন্যই ভালো হবে৷ বাংলাদেশ যদি আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম ভারতের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেরাই তৈরি করতে পারে তাহলে তা অনেক কাজে দেবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের দিক বিবেচনা করলেও এর গুরুত্ব আছে৷ ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে একটা অবস্থান তৈরি করতে পারে৷ এর মাধ্যমে সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একক কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘নো হার্ম পলিসি মেনে যদি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়, তাহলে তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই৷''

কিন্তু বিপরীতে বাংলাদেশ চায় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি৷ বাংলাদেশের জন্য তিস্তার পানি বণ্টন খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ তিস্তার পানির সুষম বণ্টন বাংলাদেশের ১৮ বছরের দাবি৷ কিন্তু এই পানি চুক্তিটি করার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নেই৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সম্মতি ছাড়া কেন্দ্র সরকার চুক্তিটি করতে পারবে না৷

২০১১ সালে ভারত এ চুক্তি করতে সম্মত হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চরম বিরোধিতার কারণে এ চুক্তি করা সম্ভব হয়নি৷ এরমধ্যে একাধিকবার ভারত সরকারের সর্ব্বোচ্চ পর্যায় থেকে আশ্বাস দেওয়ার পরও এ চুক্তি কবে হতে পারে, তা বলতে পারছে না ভারত৷

প্রসঙ্গত, অনেক দেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার বিষয় থাকলেও বাংলাদেশ পৃথিবীর কোনো দেশের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেনি৷ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোজ পারিকর গত ৩১ অক্টোবর দু'দিনের সফরে যখন ঢাকায় আসেন, তখন ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঢাকা-দিল্লি সামরিক চুক্তির বিষয়টি সামনে আসে৷

তখন মনোজ পারিকর বাংলাদেশের সিনিয়র রাজনৈতিক, বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য