1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাশের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ

১ মে ২০১৪

নারায়ণগঞ্জে সাত ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক৷ প্রতিবাদের পাশাপাশি প্রতিকারের দাবিও উঠছে সব মহল থেকে৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলিতে আজও এ বিষয়ে লেখার ছড়াছড়ি৷

https://p.dw.com/p/1Brzw
Bangladesch - Landesweiter Streik
ছবি: Getty Images

সামহয়্যার ইন ব্লগে দিলীপ গোস্বামীর লেখার শিরোনাম ‘অপহরণ ভাইরাসে আক্রান্ত দেশ'৷ বাংলাদেশে অপহরণ এবং হত্যার ঘটনা এবারই প্রথম ঘটেনি৷ বরং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার এবং প্রশাসনের ব্যর্থতা শঙ্কিত করে তুলেছে সবাইকে৷ দিলীপ গোস্বামীর লেখাতেও প্রকাশিত হয়েছে সেই আতঙ্ক৷ তাঁর লেখার শুরুটা এরকম, ‘‘বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ৷ বিশ্বের মানচিত্রে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে যার জন্ম৷ পরাধীনতার বন্দীদশা থেকে এক মহাবিপ্লব ও ঐতিহাসিক মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে আনা যার অঙ্গীকার৷ অর্থনৈতিক মুক্তি, ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা যার স্বপ্ন৷ ব্রিটেনের সাথে, পাকিস্তানের সাথে, স্বদেশি স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথে যে জাতি এত লড়াই সংগ্রাম করে ৪৩টা বছর পেরিয়ে এল, সে কিনা শেষে পড়লো অপহরণ ভাইরসের কবলে৷ অপহরণ করে মুক্তিপন আদায়, কোনো সরকার বা রাষ্ট্রের কাছ থেকে দলীয় বন্দিদের মুক্ত করতে অতীতে আমরা বিমান ছিনতাই বা অপহরণকারী সুইসাইড স্কোয়াডকে দেখেছি৷ যারা অপহরণের পরে সদম্ভে তাদের দাবি আদায়ের কথা বলেছে৷ সেখানে অপহরণকারীদের একটা বীরোচিত আস্ফালন দেখেছি৷ তাদের উদ্দেশ্যটাও পরিষ্কার হয়ে গেছে৷ আমাদের দেশে এখন অপহরণের নামে কি ঘটছে৷ তারপর প্রথম প্রথম লোকজন নিখোঁজ হলে রাজনৈতিক কারণ বলে চালিয়ে দেয়া হতো৷ নিখোঁজের স্বজনরা তেমন ধারণা নিয়ে অপেক্ষা করতো হয়ত বা কোনো একদিন নিখোঁজ মানুষটা ফিরবে৷''

তারপর এখন অপহরণের যে রূপ বদলেছে এবং অপহরণ যে দিন দিন বেড়ে চলেছে তা-ও পরিসংখ্যান সমেত লিখেছেন দিলীপ গোস্বামী, ‘‘এখন আর তেমনটি হচ্ছে না৷ দিন দিন অপহরণের ঘটনা অদৃশ্য ভাইরাসের মতো বেড়ে চলেছে৷ বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুসারে গত চার মাসে ভালুকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, নোয়াখালী, উল্লাপাড়া চট্টগ্রাম ও ধামরাইয়ে ৫৩ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন৷ একইভাবে বিগত ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ২৬৮ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে৷ এর মধ্যে ৪৩ জনের লাশ উদ্ধার ও ২৪ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে ১৪ জনকে৷ কিন্তু ১৮৭ জনের কোনো সন্ধানই মেলেনি৷ নিখোঁজদের বিষয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একটিমাত্র সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে৷''

Symbolbild Tatort
‘২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ২৬৮ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, এর মধ্যে ৪৩ জনের লাশ উদ্ধার ও ২৪ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে’ছবি: Getty Images

তারপর সামহয়্যার ইন ব্লগের এ ব্লগার যা লিখেছেন, তা বাংলাদেশের প্রতিটি শান্তিপ্রিয় মানুষেরই মনের কথা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ কিভাবে নিরাপদে থাকবে সেই প্রশ্ন সবার কাছে৷ যদিও অনেকের কাছে এখনও বিষয়টা স্পষ্ট নয়৷ ভাইরাস অসুখের মতো এটা যে মহামারীর রূপ নেবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়? আমরা জাতি হিসেবে আতঙ্কিত৷ রাষ্ট্রের কাছে এখুনি সকলে যথাযথ নিরাপত্তা চায়৷''

সামহয়্যার ইন ব্লগে তারেক উজ জামানও লিখেছেন একই বিষয়ে৷ ‘গুম হয়ে যাওয়া প্রিয়জনের লাশগুলো খুঁজে পাচ্ছি পুলিশের সহযোগিতায়' – এই শিরোনামের লেখাটিতে ফুটে উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বর্তমান সরকারের প্রতি ক্ষোভ৷ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ৷ মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে দীর্ঘজীবী করুক৷ উনার কারণে আজ আমরা আমাদের গুম হয়ে যাওয়া স্বজনদের মৃতদেহগুলো বনে, জঙ্গলে, খালে, বিলে, নদীতে হলেও পাচ্ছি৷ আমরা সেগুলো সৎকারও করতে পারছি৷''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য