1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানব-সৃষ্ট ট্র্যাজিডি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৫ অক্টোবর ২০১৩

সাম্প্রতিক দুটি বিপর্যয় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো যে, পুরো প্রস্তুতি থাকলে পাইলনের মতো সামুদ্রিক ঝড়-ঝঞ্ঝার সফল মোকাবিলা সম্ভব৷ সেটা না থাকলে মধ্য প্রদেশে মন্দির ট্র্যাজিডির মতো মানব-সৃষ্ট বিপর্যয় আটকানো কখনই সম্ভব নয়৷

https://p.dw.com/p/19zI7
Residents wade through a flooded road after Cyclone Phailin hit Gopalpur in Ganjam district in the eastern Indian state of Odisha October 13, 2013. India's strongest storm in 14 years left a trail of destruction along the country's east coast on Sunday, but little loss of life was reported after close to a million people took refuge in shelters. Cyclone Phailin was expected to dissipate within 36 hours, losing momentum as it headed inland after making landfall on Saturday from the Bay of Bengal, bringing winds of more than 200 kph (125 mph) to rip up homes and tear down trees. REUTERS/Ahmad Masood (INDIA - Tags: ENVIRONMENT DISASTER)
ছবি: Reuters

২০০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার বেগে ভারতের ওড়িষা ও অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়া সামুদ্রিক ঝড় পাইলনে মারা গেছেন ২৫ জন, তার মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ায়৷ পাশাপাশি মধ্য প্রদেশে মন্দির ট্র্যাজিডিতে মারা গেছেন এখনও পর্যন্ত ১১৫ জন পুণ্যার্থী৷

হিসেব দুটো ঠিক মেলানো যাচ্ছে না, তাই না? কী করে সম্ভব হলো এটা? সম্ভব হলো, প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধে এবার সতর্ক ছিল সরকার আগে থেকেই৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সফল সমন্বয়, প্রয়োজনীয় বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা এবং আবহাওয়া দপ্তরের সঠিক পূর্বাভাষই এই সাফল্যের চাবিকাঠি৷

আবহ দপ্তরের সতর্ক বার্তা পাবার দু-এক দিনের মধ্যেই ৯ লাখ লোককে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপদ স্থানে৷ তাঁদের থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়৷ দুর্গত এলাকাগুলির রাস্তাঘাট থেকে ভাঙা গাছপালা সরিয়ে ত্রাণ সামগ্রী যাতায়াতের পথ পরিষ্কার রাখা হয়৷ ওড়িষার ত্রাণ কমিশনার পি.কে মহাপাত্র জেলা ও স্থানীয় প্রশাসন স্তরের উঁচু তলা থেকে নীচু তলার অফিসার ও কর্মচারীদের দায়বদ্ধতা চিহ্নিত করে দেন৷ পূর্ব-প্রস্তুতির অন্যতম শর্ত এই দায়বদ্ধতা৷ তাঁর কড়া নির্দেশ, কর্তব্যে গাফিলতি হলে কঠোর শাস্তি পেতে হবে৷ ফলে সব কাজ সুষ্ঠুভাবে হয়৷ জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয় ন্যূনতম৷ ১৯৯৯ সালে অনুরূপ সামুদ্রিক ঝঞ্ঝায় পূর্ব-প্রস্তুতি না থাকার কারণে মারা গিয়েছিল বহু লোক৷

REFILE - CLARIYING SPELLING OF STATE A man carries his children as he returns to his village with others after Cyclone Phailin hit Girisola town in Ganjam district in the eastern Indian state of Odisha October 13, 2013. India's strongest storm in 14 years left a trail of destruction along the country's east coast on Sunday, but little loss of life was reported after close to a million people took refuge in shelters. Cyclone Phailin was expected to dissipate within 36 hours, losing momentum as it headed inland after making landfall on Saturday from the Bay of Bengal, bringing winds of more than 200 kph (125 mph) to rip up homes and tear down trees. REUTERS/Adnan Abidi (INDIA - Tags: ENVIRONMENT DISASTER)
আবহ দপ্তরের সতর্ক বার্তা পাবার দু-এক দিনের মধ্যেই ৯ লাখ লোককে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপদ স্থানেছবি: Reuters

মধ্য প্রদেশের দাতিয়া জেলায় স্থানীয় সিন্ধ নদীর তীরে দুর্গা মন্দিরে দশমির দিন পুণ্যার্থীদের বিশাল সমাগম হয়৷ ঐ মন্দিরে যেতে গেলে পার হতে হয় সিন্ধ নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতু৷ পার হতে গিয়ে কেউ গুজব ছড়ায় ভিড়ের চাপে সেতুটি ভেঙে পড়ার উপক্রম৷ আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় পুণ্যার্থীদের মধ্যে৷ ভিড়ে পদপৃষ্ট হয়ে মারা যায় ১১৫ জন, তার মধ্যে ১৭টি শিশু৷ এই ধরণের মানব-সৃষ্ট বিপর্যয় নতুন নয়৷ এর আগেও বহুবার এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ ঐ একই এলাকায় ২০০৬ সালে জলস্ফীত সিন্ধ নদীতে ভেসে গিয়েছিলেন জনা পঞ্চাশেক তীর্থযাত্রি৷ তাঁদের দ্রুত উদ্ধার করার ব্যবস্থা ছিল না সেখানে৷ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির আরো দৃষ্টান্ত আছে রাজস্থানের যোধপুর, উত্তরাখন্ডের হরিদ্বার এবং দক্ষিণের সাবারিমালায় পদপৃষ্ট হয়ে মারা যান বহু লোক৷ তবু কর্তৃপক্ষ তা থেকে আদৌ শিক্ষা নেয়নি৷

জানা কথা, ধর্মস্থানগুলিতে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হয়৷ সংকীর্ণ প্রবেশপথ বা আবদ্ধ জায়গায় এত লোকের ভিড়ে গুজব ছড়ালে বা না ছড়ালে যে কোনো মুহূর্তে বিপদ ঘটার আশঙ্কা থাকে৷ বিপদকালে মানুষের বিচারবুদ্ধি লোপ পায়৷ সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আগে থেকে না নেয়াটা ক্ষমার অযোগ্য৷

এদিকে এই মর্মান্তিক মানব-সৃষ্ট বিপর্যয় নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দোষারোপ৷ সব বিপর্যয় বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যা হয়, রুটিন মাফিক তদন্ত কমিটি আর কিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ৷ কমিটির রিপোর্ট ধামাচাপা পড়ে যায় অথবা রিপোর্টের সুপারিশ দিনের আলো দেখতে পায় না ৷ অপেক্ষা করতে থাকে আরোকটা বিপর্যয়ের জন্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য