1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিরে দেখা ২০১০ -জার্মানি ও ইউরোপ

৩০ ডিসেম্বর ২০১০

শ্রোতাবন্ধুরা, সারা বছর আমরা জার্মানি ও ইউরোপের নানা তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি৷ বছর শেষে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিষয়ের দিকে নজর দেয়া যাক আরেক বার৷

https://p.dw.com/p/zrPm
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে মন্ত্রী রাইনার ব্র্যুডারলে(ডানে)ছবি: AP

জার্মানির অর্থনীতি

বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট সত্ত্বেও জার্মানির অর্থনীতি ক্রমশ চাঙা হয়ে উঠছে, এই আভাস দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা৷ খোদ অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী রাইনার ব্র্যুডারলে বলেছেন যে, অর্থনীতিতে উজ্জীবন দেখা দিয়েছে জোরেশোরেই৷

Dossierbild 1 Griechenland Krise Flaggen
রাজধানী এথেন্সে গ্রীসের সবচেয়ে বড় ব্যাংকের সামনে গ্রীসের পতাকার(ডানে) সঙ্গে উড়ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা( বামে)ছবি: AP

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতি উদ্ধার কর্মসূচিতে কয়েকটি দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে চাঙা করার জন্য জোটভুক্ত দেশগুলি ঐক্যমতে পৌঁছেছে৷ গ্রিসের পর আয়ারল্যান্ড এই উদ্ধার কর্মসূচির মাধ্যমে লাভবান হবে৷

আফগানিস্তান নীতি

জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেস্টাগ আফগানিস্তানে জার্মানির সৈন্যসংখ্যা এখনকার ৪,৫০০ থেকে ৫,৩৫০-এ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে৷ এই মিশন চালানোর ম্যান্ডেট রয়েছে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷ ম্যান্ডেট বাড়াতে হবে তার আগেই৷ তারপর থেকে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব ধাপে ধাপে আফগান বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হবে৷ তবে ঐ দেশে জার্মান সৈনিকদের মিশন কবে শেষ হবে তার কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে৷ আশা করা হচ্ছে ২০১১ সালের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান থেকে জার্মান সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হবে৷ শেষ হবে ২০১৪ সাল নাগাদ৷

উঠে যাচ্ছে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ

জার্মান তরুণদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ আর থাকছেনা৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কার্ল থেয়োডর সু গুটেনব্যার্গ জানিয়েছেন, ২০১১ সালের ১লা মার্চ থেকে কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আর সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবেনা৷ জার্মান সেনা বাহিনী গড়ে উঠবে শুধু স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে৷ সেনা সংখ্যা ২ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে কমিয়ে ১ লক্ষ ৮৫ হাজারে আনা হবে ধীরে ধীরে৷ উল্লেখ্য ১৯৫৭ সালে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের আইন চালু হয়েছিল৷

অভিবাসী নিয়ে বিতর্ক

জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বুন্ডেসব্যাঙ্কের বোর্ডের অন্যতম পরিচালক থিলো জারাসিন আগষ্টের শেষে একটি বই প্রকাশ ক'রে সারা দেশে বিতর্কের ঝড় তোলেন৷ বইটিতে তিনি মন্তব্য করেন, সংখ্যায় বেড়ে উঠতে থাকা অশিক্ষিত মুসলিম অভিবাসীরা জার্মান সমাজে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী না হওয়ায় জার্মানির দৈন্যদশা ঘটছে৷ একদিন জার্মানিতে মুসলমানেরা নাকি সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী হয়ে যেতে পারে৷ তাঁর কথা: ‘‘আমরা আমাদের নিজ দেশে বহিরাগত জনগোষ্ঠীর মত হয়ে যেতে পারিনা৷'' উল্লেখ্য জার্মানিতে বর্তমানে ৪০ লক্ষেরও বেশি মুসলমান বাস করে৷ এদের অধিকাংশই তুর্কি বংশোদ্ভূত৷

জার্মানির ইহুদি নেতারা জারাসিন-এর এই সব কটুক্তির তীব্র সমালোচনা করে বলেন যে, তাঁর মন্তব্য নাৎসিদের ভাবধারার সঙ্গে মিলে যায়৷ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও এই বক্তব্যের জন্য জারাসিন-এর কঠোর সমালোচনা করেন৷

বাভারিয়ার মুখ্যমন্ত্রী হর্ষ্ট জেহোফারের তুর্কি ও আরব অভিবাসীদের নিয়ে একটি কটুক্তি ছিল যেন অগ্নিতে ঘৃতাহুতি৷ তিনি মন্তব্য করেন, জার্মানির তুর্কি ও আরব অভিবাসীর আর প্রয়োজন নেই, কারন তারা অন্যান্যদের মতো এদেশের সমাজে সম্পৃক্ত হতে সমর্থ হয়না৷ এই বিষয়টি নিয়ে প্রচার মাধ্যমগুলিও সরব হয়ে ওঠে৷ মুক্তমনা মানুষেরা কঠোর সমালোচনা করেন এই ধরনের বর্ণ ও জাতি বৈষম্যমূলক মন্তব্যের৷

ইউরোভিশন

ইউরোপীয় সংগীত প্রতিযোগিতা ইউরোভিশনের মুকুট জিতলেন জার্মানির ১৯ বছর বয়েসি লেনা মায়ার লান্ডরুট৷ ৫৫ বছরের ইউরোভিশনের ইতিহাসে জার্মানির এটা দ্বিতীয় দফা জয়৷ এর আগে ১৯৮২ সালে জার্মানির নিকোল এই সম্মান বয়ে এনেছিল৷ ইউরোভিশনের চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়ার পর আবেগে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন লেনা৷ এই পর্বে অংশ গ্রহণ করেছিলেন ২৫টি দেশের প্রতিযোগীরা৷

Flash-Galerie Loveparade Duisburg 2010 Massenpanik
জার্মানির ডুইসবুর্গে অনুষ্ঠিত লাভ প্যারেডে দূর্ঘটনাছবি: AP

লাভ প্যারেড

জার্মানিতে লাভ প্যারেড কনসার্টের আনন্দ এবার বিষাদে পরিণত হলো৷ প্রচন্ড ভীড়ে পদদলিত হয়ে ২১ জন নিহত হন৷ আহতের সংখ্যা ছিল কয়েকশ৷ জার্মানির ডুইসবুর্গ শহরে এ বছরের ২৪ জুলাই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে৷ উল্লেখ্য, রাজধানী বার্লিনে ১৯৮৯ সালে প্রথম ‘লাভ প্যারেড' সংগীত উৎসব শুরু হয়৷এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় কনসার্ট৷ গান আর নাচ এর মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই লাভ প্যারেড কনসার্ট মূলত একটি আনন্দময় উৎসব হয়ে থেকেছে৷ এই ট্র্যাজিক ঘটনার পর লাভপ্যারেড আদৌ আর হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন এখন৷

বিশ্বকাপ ফুটবল

২০১০ ছিল বিশ্বকাপ ফুটবলের বছর৷ দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত এই খেলা জার্মান দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছিল কয়েকটি মাস৷ বিভিন্ন স্থানে বিশাল স্ক্রিন দিয়ে ব্যবস্থা করা হয়েছিল পাবলিক ভিউংয়ের৷ আর্জেন্টিনা ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে তরুণ জার্মান টিমদের জয় ছিল দেখার মত৷ বিশ্বকাপে জার্মানি জয় করে তৃতীয় স্থান৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক