1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিলিপাইন্সের পৌঁছাচ্ছে ত্রাণ

১১ নভেম্বর ২০১৩

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ফিলিপাইন্সের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ পাঠিয়েছে৷ কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে ত্রাণ দিতে বাধার মুখে পড়ছেন কর্মীরা৷ অন্যদিকে ঝড় এবার আঘাত হেনেছে ভিয়েতনাম ও চীনে৷

https://p.dw.com/p/1AFAU
A worker stands near World Food Programme (WFP) relief goods near Subang airport in Kuala Lumpur November 10, 2013, to be sent to victims of super typhoon Haiyan in the Philippines. The Philippine Red Cross estimated that more than 1,000 people were killed in the coastal city of Tacloban and at least 200 in hard-hit Samar province when one of the strongest typhoons ever to make landfall slammed into the country. Local officials estimate at least 10,000 people have died the city of Tacloban alone. REUTERS/Samsul Said (MALAYSIA - Tags: DISASTER)
ছবি: Reuters

সুপার টাইফুন হাইয়ানের ধ্বংসের চিহ্ন এখনও ফিলিপাইন্সের টাকলোবান শহরের প্রতিটি কোনায়৷ লাখো মানুষ খোলা আকাশের নীচে, ত্রাণের অপেক্ষায়৷ কিন্তু ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা দিয়ে চলছে লুটপাট৷ এই পরিস্থিতি সামলাতে ফিলিপাইন্সে কয়েকশ সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করেছে সরকার৷ শুধু তাই নয়, আরো নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো৷ রবিবার টাকলোবান শহর পরিদর্শন করে এ ঘোষণা দেন তিনি৷

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি

ফিলিপাইন্সের জাতীয় পুলিশ-বাহিনীর মুখপাত্র সোমবার এবিএস-সিবিএন টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, স্থানীয় পুলিশবাহিনী লুটপাটকারীদের হামলার শিকার হচ্ছেন, এমনকি তাঁদের পরিবারও বাদ যাচ্ছে না৷ সেনা মুখপাত্র কর্নেল রেমন জাগালা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, সামারে চার হাজার সেনা আছে৷ কিন্তু তাঁদের অনেকেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ তাই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বিপুল পরিমাণ নিরাপত্তারক্ষী পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি৷

ধ্বংসের মাঝেও প্রাণের স্পন্দন

টাকলোবানের চারপাশে যখন ধ্বংসচিহ্ন ছাড়া আর কিছুই নেই, তখন এক শিশুর জন্ম কিছুটা হলেও বেদনা ভুলিয়ে দিয়েছে স্বজন হারাদের৷ টাকলোবানের বিমানবন্দরে ২১ বছর বয়সি এমিলি ওর্তেগা একটি কন্যা শিশুর জন্ম দেন৷ নাম রেখেছেন বি জয়৷ ১০ হাজার মানুষ যেখানে নিহত, সেখানে এই প্রাণের স্পন্দনে হাসি ফুটেছে অনেকের মুখে৷ তবে শিশুটির জন্মকে অলৌকিক হিসেবেই দেখছেন তাঁর মা৷ কেননা ঝড় আঘাত হানার সময় তিনি একটি শরণার্থী শিবিরে ছিলেন৷ ঝড় আঘাত হানার পর পানির তোড়ে ভাসতে থাকেন তিনি৷ এরপর পৌঁছে যান বিমানবন্দরে, যেখানে সেনা চিকিৎসকদের সহায়তায় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন৷

A relative holds newly born baby Beatriz as her mother recuperates at a makeshift birthing clinic in Tacloban city in central Philippines November 11, 2013. Dazed survivors of super Typhoon Haiyan that swept through the central Philippines killing an estimated 10,000 people begged for help and scavenged for food, water and medicine on Monday, threatening to overwhelm military and rescue resources. REUTERS/Erik De Castro (PHILIPPINES - Tags: DISASTER ENVIRONMENT
এমিলি ওর্তেগা একটি কন্যা শিশুর জন্ম দেন৷ নাম রেখেছেন বি জয়ছবি: Reuters

দুর্গত এলাকায় পৌঁছাচ্ছে ত্রাণ

হাইয়ান আঘাত হানায় ফিলিপাইন্সের ৬ লাখ ২০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা অন্তত ৯৫ লাখ বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিতে ত্রাণ পাঠাতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো৷ ম্যানিলার মার্কিন দুতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ব্রায়ান গোল্ডবেক অবিলম্বে ত্রাণ কাজে ১ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন৷ এরই মধ্যে ত্রাণ নিয়ে মার্কিন একটি বিমান ফিলিপাইন্সে পৌঁছেছে৷ সেই দলে আছে ৯০ জন মার্কিন নৌ-বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্য৷

ব্রিটেন ৯৬ লাখ ইউরোর ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে৷ ম্যানিলার জার্মান দূতাবাস জানিয়েছে, এর মধ্যে ২৩ টন খাদ্য সহায়তা এবং উদ্ধারকারী দল দুর্গত এলাকায় কাজ করছে৷

অস্ট্রেলিয়া ১ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে৷ এর মধ্যে জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসা সহায়তা, জাতিসংঘের ত্রাণ তহবিলে সহায়তা এবং অস্ট্রেলিয়ার বেসরকারি সংস্থাগুলোকে উদ্ধারকাজে সাহায্যের উপকরণ কেনায় সহায়তা করা হবে৷

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, লেটে ও সামার প্রদেশে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান নির্ধারণে ২০ লাখ ডলার বরাদ্দ দিচ্ছে তারা৷ এছাড়া তারা ৪০ টন বিস্কুট এবং উদ্ধারকাজের জন্য সবধরনের যন্ত্রপাতি সরবরাহও করবে৷ জরুরিভিত্তিতে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ১০ ডলার www.wfpusa.org বা AID লিখে ২৭৭২২ এই নম্বরে ম্যাসেজ করে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি৷

ইউনিসেফ জানিয়েছে, কোপেনহেগেন থেকে ৬৬ টন ত্রাণ পাঠানো হয়েছে৷ এছাড়া পানি বিশুদ্ধিকরণ উপকরণসহ অন্যান্য দ্রব্য মঙ্গলবার পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে তারা৷ কেউ সাহায্য করতে চাইলে তাদের unicef.org/support – এই ঠিকানায় অর্থ সাহায্য পাঠাতে বলেছে ইউনিসেফ৷

জাপান এরইমধ্যে ২৫ সদস্যের একটি মেডিক্যাল দল পাঠিয়েছে৷ তাইওয়ান ২ লাখ ডলার অর্থ সাহায্য পাঠাচ্ছে৷ এছাড়াও বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো সাহায্য পাঠানো শুরু করেছে৷

ভিয়েতনাম ও চীনের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত

ফিলিপাইন্সে ১০ হাজার মানুষের প্রাণ নিয়ে ঘূর্ণিঝড় হাইয়ান দুর্বল হয়ে সোমবার সকালে আঘাত হেনেছে ভিয়েতনামে৷ কুয়াংনিনহ প্রদেশে স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটায় ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে হাইয়ান৷ ঝড়ের প্রভাবে কোথাও কোথাও গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে৷ ভিয়েতনাম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে বাড়ি-ঘর ঠিক করতে গিয়ে নিহত হয়েছে ১০ জন৷

ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সোমবার সকালে চীনের গুয়াংসির নিংমিং কাউন্টিতে আঘাত হানে ঝড়টি৷ ঝড়ের প্রভাবে হাইনান প্রদেশে তিন জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৯ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সোমবার৷ ঝড়ে বেশ কিছু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে৷ এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গুয়াঙসি এবং গুয়াংডং প্রদেশ৷

এপিবি/ডিজি (এপি,ডিপিএ,এএফপি,রয়টার্স)