1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রি রাইডার এফা ভাল্কনার

কির্স্টিন শুমান/এসি১২ মে ২০১৬

ফ্রি-রাইডিং মানে বরফের বাঁধা ‘পিস্টে' বা ঢাল ছেড়ে, পাহাড়ের দুর্গম খাড়া ঢাল দিয়ে স্কি-তে চড়ে বিদ্যুৎগতিতে নামা – আছাড় খেয়ে হাড়গোড় না ভেঙে৷ এর নাম স্পোর্ট!

https://p.dw.com/p/1IlpP
ছবি: DW

ফ্রান্সের শামোনি-র চারপাশের আল্পস পাহাড়ি৷ এফা ভাল্কনার এখানে দু'হাজার ছয়'শ মিটার উচ্চতা থেকে স্কি করতে শুরু করবেন৷ এটা হলো ফ্রি রাইড ওয়ার্ল্ড টুরের দ্বিতীয় পর্যায়৷ অস্ট্রিয়ার মেয়ে এফা৷ এখানে নামবেন উঁচু উঁচু পাথর আর খাড়াই ঢালের ওপর দিয়ে৷ স্কি ফ্রি-রাইডার এফা ভাল্কনার বললেন, ‘‘পাহাড়ের ওপর খুব ভালো লাগে৷ আজকের মতো ঠান্ডা একটা দিনে সুন্দর বরফের ওপর স্কি করতে দারুণ লাগে৷''

এফা ভাল্কনার হলেন স্কি ফ্রি-রাইডিং-এর স্টার – বাঁধা ‘পিস্টে' বা কোর্স ছেড়ে বরফে ঢাকা পাহাড়ের ঢালে স্কি করে থাকেন৷ অতীতে ফ্রি রাইড ওয়ার্ল্ড টুরের একাধিক স্টেজে জিতেছেন ৩৬ বছর বয়সি এফা; ২০১৫ সালে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন৷ ফ্রি রাইড স্কিইং-এ তাঁর যে শুধু স্পিডটাই ভালো লাগে, এমন নয়৷ এফার মতে, ‘‘এ যেন পাহাড়টাকে বোঝা, যাতে জানতে পারি, আমি যে শিলাখণ্ড থেকে ঝাঁপ দেব, সেটা কোথায়; আমি যে পথ দিয়ে নামব বলে ভেবেছি, সেটাই বা কোথায়৷ আবার সেই একই পথ উল্টো দিক থেকে৷ আমি পাহাড়টাকে অন্যদিক থেকে দেখছি, ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছি৷ ওপর থেকে স্বভাবতই ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অন্যরকম দেখায়৷ নীচে সহজ-সরল শিলাখণ্ড, ওপরে একটা ছোট রোল-ওভার৷ এখন কোথায় ড্রপ-ইন, সেটা সঠিকভাবে খুঁজে বার করতে হবে৷''

অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন এফা ভাল্কনার

ফ্রি-রাইড ওয়ার্ল্ড টুর

ফ্রি-রাইডিং-এ বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতা হলো এই ফ্রি-রাইড ওয়ার্ল্ড টুর, এফা যাতে ২০১০ সাল থেকে অংশ নিচ্ছেন৷ প্রতিযোগিতার পাঁচটি স্টেজের আয়োজন করা হয় পাঁচটি দেশে৷ শুধুমাত্র স্টার্ট আর ফিনিশ ঠিক করে দেওয়া থাকে৷ মাঝের রুটটা ঠিক করেন ফ্রি-রাইডার স্বয়ং৷ রেফারিরা প্রতিটি দৌড় দেখেন ও নম্বর দেন৷ এ বছরও মহিলাদের মধ্যে এফা ভাল্কনারের জেতার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি৷ ফ্রি-রাইড ওয়ার্ল্ড টুরের চিফ রেফারি ব্যার্টি দ্যন্যর্ভো জানালেন, ‘‘স্বভাবতই এ বছরেও এফার জেতার সম্ভাবনা খুব ভালো৷ এফা প্রতিভাবান; প্রায় কখনোই পড়ে যায় না; খুব স্পিডে নামে৷ ওর টেকনিক খুব ভালো৷ ও খুব ভালো লাফাতে পারে৷ কাজেই এ বছর আবার জেতার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তার সবই ওর আছে৷''

এফা ভাল্কনারের জন্ম ১৯৭৯ সালে সালৎসবুর্গের দক্ষিণে৷ তিন বছর বয়সেই স্কি খেলতে শুরু করেন৷ ১৯৯৫ সালে ইউরোপীয় কাপে অস্ট্রিয়ার প্রতিনিধি৷ ছ'বছর আগে ফ্রি-রাইডিং-এ আসেন৷ বার বার দুর্ঘটনায় পড়ে চোট খেলেও, কোনোমতেই ফ্রি-রাইডিং ছাড়তে রাজি নন৷ অন্যদিকে রয়েছে তাঁর অ্যাম্বিশান৷ এফা বললেন, ‘‘আমি খেলাটাকে খুব আন্তরিকভাবে নিই, হয়ত অন্যদের চাইতে বেশি আন্তরিকভাবে৷ যেমন আমি গ্রীষ্মেও প্রচুর প্র্যাকটিস করি৷ শীতেও দিনে চার থেকে ছয় ঘণ্টা প্রিপারেশন করি৷ সালৎসবুর্গে যে অলিম্পিক কেন্দ্র আছে, সেখানে আমি সপ্তাহে পাঁচ-ছ'বার গিয়ে চার থেকে ছ'ঘণ্টা ট্রেনিং করি৷ সেটা খুব সহজ নয়৷ মাঝেমধ্যে খুবই বোরিং, যেমন ওয়েটস নিয়ে ট্রেনিং৷''

জীবিকা অর্জন

ফ্রি-রাইডিং থেকে যে সব মহিলা জীবিকা অর্জন করতে পারেন, এফা তাদের মধ্যে পড়েন৷ তবে মহিলাদের পারিশ্রমিক বা পুরস্কার পুরুষদের মতো নয়৷ পুরুষরা স্পন্সরিং আর বিজ্ঞাপন থেকে দশগুণ বেশি রোজগার করে থাকেন৷ এফা বলেন, ‘‘মহিলাদের ক্ষেত্রে....ফিল্মে পার্ট পাওয়াটা খুব জরুরি৷ শুধু ওয়ার্ল্ড টুরেই নয়; এছাড়া যে সব স্কি-ফিল্ম তৈরি হয়, সেগুলোতেও৷ ওদিকে অ্যামেরিকার বড় বড় প্রোডাকশন কোম্পানিগুলোর ৯৫ শতাংশ হলেন পুরুষ আর পাঁচ শতাংশ মহিলা৷ মহিলাদের বাদ দিয়েই প্রায় সব কিছু করা হয়৷ কাজেই কিছু পেতে হলে আমাদের অনেক বেশি কষ্ট করতে হয়৷''

এফার জবাব হলো ফ্রি-রাইডিং প্রতিযোগিতায় সাফল্য, ২০১৫ সালে যা তিনি করে দেখিয়েছেন৷ লিগামেন্ট ছিঁড়ে দু'বছর ইনজিওর্ড থাকার পর প্রথমবার নেমেই মহিলাদের ফ্রি-রাইড ওয়ার্ল্ড টুর জিতেছেন এফা৷ এফা বললেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি যে আমি জিতব৷ আমার লক্ষ্য ছিল, প্রথম পাঁচজনের মধ্যে আসা৷ পরে যখন জিতলাম, তখন আমার চোখে জল এসে গিয়েছিল৷''

এফা ভাল্কনার হলেন এমন একজন মহিলা, যিনি উৎসাহ আর শৃঙ্খলা সম্বল করে পুরুষদের পেটোয়া খেলায় একেবারে সামনের সারিতে পৌঁছে গেছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য