1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বছরে ২০ লাখ মানুষের দেহে বাসা বাঁধছে যক্ষা

৩১ মার্চ ২০১০

টিবি অর্থাৎ যক্ষ্মারোগ এখনও বেশ কিছু দেশে মৃত্যুর একটা বড় কারণ৷ এমন ধরণের যক্ষ্মারোগও আছে যেগুলো ওষুধপত্রের ক্রিয়া প্রতিরোধ করতে সক্ষম৷ ফলে এ রোগ বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে পড়েছে৷

https://p.dw.com/p/MipV
ছবি: picture-alliance/ dpa

এই হুমকির মাঝেই বিজ্ঞানীরা জানালেন, তাঁরা একটি ওষুধ বের করেছেন যা কিনা টিবি সংক্রামক পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই তা নিরাময় করতে সক্ষম হবে৷

এই ওষুধ যদি পুরোপুরি কার্যকর প্রমাণিত হয় তাহলে ৫০ বছরের মধ্যে তা হবে যক্ষ্মারোগের মোকাবিলায় অত্যন্ত বড় রকমের এক সাফল্য৷ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাকটেরিয়া বিশেষজ্ঞ নিক ওয়েস্ট জানিয়েছেন, সিডনি শহরের সেন্টেনারি ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের বের করা এই ওষুধ সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারবে বলে তাঁরা মনে করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘একটি প্রোটিন নিয়ে আমরা পরীক্ষা করেছি যা যক্ষ্মারোগের জীবাণুর বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য৷ আর এই প্রোটিনকে বাধা দেয়ার উপযুক্ত একটি ওষুধ বের করার ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা সফল হয়েছি৷ এই ওষুধের কার্যকরিতার পূর্ণ ছবিখানা আগামী মাসগুলোতে খুঁজে বার করাটাই এখন আমাদের লক্ষ্য৷''

বিজ্ঞানী নিক ওয়েস্ট বলেন, ইতিহাসে এই প্রথম সংক্রামক নয় বা সুপ্ত টি.বি রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে৷ প্রতি বছর যক্ষ্মারোগের সংক্রমণে বিশ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটে৷ এই মৃত্যু সম্ভবত ঠেকাতে পারবে নতুন ওষুধ৷ অস্ট্রেলিয়ার এই বিজ্ঞানী জানান, ‘‘যক্ষ্মারোগ রুখতে আমরা যে অ্যান্টি বায়োটিকস ব্যবহার করে থাকি তা সুপ্ত টিবির বিরুদ্ধে কার্যকর নয়৷ যখন রোগটা সচল হয়ে পড়ে তখনই শুধু তা প্রয়োগ করা যেতে পারে৷ সমস্যাটা হল সুপ্ত টিবিধারী প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত হবে এবং তার সংক্রমণ ঘটবে৷''

Tuberkulose-Patient
ছবি: AP

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সেন্টেনারি ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, পরীক্ষাকাজ পুরোপুরি সফল হলে এই ওষুধই হবে ১৯৬২ সালের পর টিবির প্রথম নতুন চিকিৎসা৷ পরিসংখ্যান বলে যে, বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা অর্থাৎ দুশো কোটি মানুষের দেহে টিবি রোগ সংক্রামিত৷ বিশেষ করে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে খুবই দ্রুত৷ ওষুধ প্রতিরোধক যক্ষ্মার কেস প্রায় অর্ধেক ঘটছে ভারত আর চীনে, জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও৷

ভারতে জনস্বাস্থ্যের জন্য যক্ষ্মা অত্যন্ত বড় রকমের এক সমস্যা৷ সারা দুনিয়ায় যক্ষ্মা কেসের এক-পঞ্চমাংশই ঘটছে ভারতে৷ প্রতি বছর ২০ লক্ষ মানুষের দেহে বাসা বাঁধছে টিবি রোগ৷ তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে প্রতি বছর টিবি রোগে৷ ফলে যক্ষ্মারোগের মোকাবিলায় চালু রয়েছে নানা কৌশল৷ দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে ভারত প্রয়োগ করে চলেছে ডাইরেক্টলি অবসার্ভড ট্রিটমেন্ট বা ডটস৷ এতে কিছু সুফলও ফলেছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশক্রমে ভারতে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সংশোধন ঘটিয়ে ডটস চিকিৎসার প্রসার ঘটানো হয়েছে৷

বাংলাদেশে যক্ষ্মারোগের ক্ষেত্রে পরিস্থিতিটা কীরকম? বিশেষজ্ঞ ডঃ উত্তম কুমার বড়ুয়ার মতে, বাংলাদেশে যক্ষ্মারোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনক৷ তিনি বলেন, দেশের নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝেই এ রোগের প্রকোপ বেশি৷

অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা নতুন যে ওষুধ বের করার কথা জানিয়েছেন, তার পূর্ণ কার্যকরিতা প্রমাণিত হলে বাংলাদেশ ও ভারতের মত দেশগুলোও লাভবান হবে সন্দেহ নেই৷

প্রতিবেদক: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন