1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

'বড় রকমের প্রাকৃতিক বিপর্যয় মুক্ত ছিল ২০০৯'

২ জানুয়ারি ২০১০

২০০৯ বছরটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে কম ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে পার হয়েছে৷ কিন্তু এখনও জলবায়ুর পরিবর্তন হুমকি হয়ে আছে, বলছে মিউনিখের পুনর্বিমা কোম্পানি ‘মিউনিখ রি’৷

https://p.dw.com/p/LIsr
২০০৯-এ ইটালির আবরুজ্জো অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সহাবস্থান কর্মসূচিছবি: AP

মিউনিখ রি জানিয়েছে, অন্য বছরের তুলনায় পুরো বছরে প্রাকৃতিক বিপর্যয় কম হয়েছে তা নয় তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল কম৷ কিন্তু এখনও জলবায়ুর পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী হুমকি স্বরূপ৷ আর কোপেনহেগেনের জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের ব্যর্থতা এটাই নিশ্চিত করেছে যে ভবিষ্যতে এর ফলে ব্যয়ভার বৃদ্ধি পাবে৷

মিউনিখ রি আরও জানায়, বিগত দশকের থেকে ২০০৯ সালে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণহানির সংখ্যাও কম এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি নয়৷

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বার্ষিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে বিমা কর্তৃপক্ষ জানান, ২০০৯ সালে ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণীঝড়ের মত ৮৫০ টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটেছে৷ তবে, ২০০৮ সাল থেকে ২০০৯ সালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল কম কারণ সাঙ্ঘাতিক বড় আকারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ তেমন ঘটেনি৷ তাছাড়া উত্তর আটলান্টিকে হারিকেন মৌসুমটা তেমন প্রবল হয়ে দেখা দেয় নি৷

মিউনিখ রি'এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় দশ হাজার, যেখানে গত দশ বছরে গড়ে প্রতি বছর এর সংখ্যা ছিল প্রায় পঁচাত্তর হাজার৷ সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিল ইন্দোনোশিয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্প৷ তার মাত্রা ছিল ৭.৬৷ এর ফলে সুমাত্রা দ্বীপের পাদাং শহরে বারোশ লোকের প্রাণহানি হয়৷ এশিয়ায় ফিলিপাইনস, ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ানে ঘূর্ণীঝড়ে আরও বেশ কয়েক হাজার মানুষ মারা যায় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়৷

এবছর অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷তবে, বিমাকৃত ক্ষতির অংক দাঁড়ায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ ২০০৮ সালে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ ক্ষতির দিক থেকে সেটা ছিল এক রেকর্ড৷

বিদায়ী বছরের গোড়াতে স্পেন আর দক্ষিণ পশ্চিম ফ্রান্সে আঘাত হানে শীতকালীন ঘূর্ণীঝড় ক্লাউস৷ ২৩ থেকে ২৫ শে জানুয়ারি ঘন্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় ঐ ঝড়৷ দশ লাখেরও বেশি মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না৷ অর্থনৈতিক ক্ষতির অংক ছিল ৫.১ বিলিয়ন ডলার৷ বিমাকৃত ক্ষতির অংক ছিল তিন বিলিয়ন ডলার৷

মিউনিখ রি কোম্পানির কার্যনির্বাহী বোর্ডের সদস্য টরস্টেন ইয়েভোরেক বলেন, ১৯৫০ সালের পর থেকে জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তিনগুন বেড়েছে৷ তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, তা সত্ত্বেও কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলন কোন সাফল্য অর্জন করতে পারলো না৷

ইয়েভোরেক বলেন, খুব তাড়াতাড়ি একটি চুক্তি করা উচিৎ যা গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা কমাবে কারণ আবহাওয়ার প্রতিক্রিয়া হয় ধীরে এবং যা করা সম্ভব হলো না তা পরবর্তী দশকের জন্য বোঝা হয়ে থাকবে৷ জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কীরকম হতে পারে সে সম্পর্কে আগাম কোন সুস্পষ্ট ধারণা না থাকায় অর্থনীতিবিদরা তা কয়েক ট্রিলিয়নে পৌঁছে যাওয়ার আশংকা করছেন৷

প্রতিবেদক: আসফারা হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক