1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বরফ হোটেল টানে পর্যটকদের

সনিয়া কাউন/এসবি২০ মার্চ ২০১৫

জেমস বন্ড-এর একটি ছবিতে বরফের তৈরি একটি বিশাল অট্টালিকা দেখা গিয়েছিল৷ তবে শুধু কল্পনা নয়, বাস্তবেও বরফ ও তুষার দিয়ে তৈরি হোটেলে রাত কাটানো সম্ভব৷ সুইডেনের এমন একটি হোটেল অসংখ্য পর্যটক আকর্ষণ করে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1Et2a
Schweden Eishotel in Jukkasjarvi
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Ehlers

সুইডেনে সুমেরু বৃত্তের ২০০ কিলোমিটার উত্তরে শীতকালের দৃশ্য৷ জমে যাওয়া টর্নে নদীর উপর দিয়ে নিজের গ্রাম ইয়ুকাসইয়েরভি-র দিকে হেঁটে চলেছেন আনা ও্যলুন্ড৷ বিশ্বের প্রথম ও বৃহত্তম ‘আইস হোটেল'-টি এখানেই অবস্থিত৷

ফটোগ্রাফার হিসেবে এই গ্রামের সঙ্গে আনার একটা বিশেষ সম্পর্কে রয়েছে৷ অনেক বছর ধরে তিনি এখানে সৃজনশীল কাজে অন্যদের সাহায্য করেছেন, নিজেও শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন৷ ২০১৩ সালে তিনি এই হোটেলের ছবির একটি সংকলন প্রকাশ করেন৷ আনা বলেন, ‘‘একদিকে এখানকার মানুষের খোলামেলা মন, তাদের উষ্ণতা – অন্যদিকে তুষার ও বরফভরা পরিবেশ আমার জন্য জাদু সৃষ্টি করে৷ আমি তাই এ বিষয়ে একটি বই তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম৷ বাকি বিশ্বকে এই জায়গাটি সম্পর্কে আমার অনুভূতি দেখাতে চেয়েছিলাম৷''

Iglu
ইগলু’তে বাস করার মজাই আলাদা!ছবি: AP

হোটেলের ৬০টি বরফ কামরার প্রত্যেকটি আলাদা করে ডিজাইন করেছেন শিল্পীরা৷ লাইট-ডিজাইনার-রাও হাত লাগিয়েছেন৷ বিছানার তোশক ও হরিণের চামড়া কম্বল ছাড়া বাকি সব কিছুই বরফ দিয়ে তৈরি৷

ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত হোটেলটি চালু থাকে৷ প্রতি বছর প্রায় ৫০,০০০ অতিথি সেখানে রাত কাটান৷ কেউ বলেন, ‘‘অসাধারণ স্থাপত্য! ঠান্ডা সত্ত্বেও সুন্দর৷ আমার বেশ ভালো লাগে৷'' তাইওয়ানের পর্যটক দলের এক সদস্য বললেন, ‘‘সত্যি ‘কুল'৷ অসাধারণ৷ এটার আমাদের প্রথম বার৷ জানেন তো, তাইওয়ানে তুষার নেই৷ তাই আমাদের কাছে রোমাঞ্চকর৷''

Grönland Eisschmelze
গ্রিনল্যান্ডে কিন্তু বরফ গলছে...ছবি: Ian Joughin/University of Washington

প্রায় ১০০ জন কর্মী প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নতুন করে ‘আইস হোটেল' তৈরি করেন৷ তার জন্য প্রায় ৫,০০০ টন তুষার ও বরফ লাগে৷

প্রতি মরসুমে গোটা বিশ্ব থেকে ১০০-রও বেশি ডিজাইনের প্রস্তাব আসে৷ প্রত্যেকেই একটি করে ঘরের ডিজাইন করতে চান৷ ২০১২ সালে আনা-ও এমন সুযোগ পেয়েছিলেন৷ আনা বলেন, ‘‘এটা সত্যি হাড়ভাঙা খাটুনির কাজ৷ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নয়, সাধারণত ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খাটতে হয়৷ অর্থাৎ দিনের পর দিন প্রায় একটানা কাজ করে নির্দিষ্ট ঘরের কাজ শেষ করলে শিল্পী হিসেবেও দায়িত্ব শেষ হবে৷''

১৯৮৯ সালে ‘আইস হোটেল'-এর কাহিনি শুরু হয়৷ বরফ-শিল্পীদের এক ওয়ার্কশপ-এ একটি ইগলু তৈরি করা হয়, যা বার বা পানশালা হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছিল৷ সারা রাত পার্টির পর কয়েকজন অতিথি তার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন৷ তারপর সাফল্যের কাহিনি শুরু হয়৷

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনেকেই এই উদ্যোগের নকল করছে৷ যেমন নরওয়ের উত্তরে ‘সোরিসনিভা ইগলু হোটেল' চলতি মরসুমে এই নিয়ে ১৭ বার তৈরি করা হলো৷ এর থেকে আরও কিছুকাল আগে তৈরি হয়েছিল ফিনল্যান্ডের ‘লাইনিয়ো স্নো ভিলেজ'৷ সেখানে বরফের তৈরি একটি রেস্তোরাঁও রয়েছে৷

শুধু সুমেরু অঞ্চলে নয়, আল্পস ও পিরেনিস পর্বতেও এমন শীতল হোটেল রয়েছে৷ যেমন অ্যান্ডোরা-র ‘গ্রান্ডভালিরা স্নো হোটেল' অতিথিদের জন্য বরফের মধ্যে হোয়ার্লপুল-এর ব্যবস্থা করেছে৷

তবে প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও ইয়ুকাসইয়েরভি-র আইস হোটেল এখনো সবচেয়ে বেশি দর্শক আকর্ষণ করে চলেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য