1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বর্জনের মুখে ঢাকা অ্যাপারেল সামিট!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ঢাকা অ্যাপারেল সামিট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের বড় পাঁচটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান৷ গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমই চেষ্টা করছে, তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে৷

https://p.dw.com/p/2Y8s1
বাংলাদেশের এক গার্মেন্টস কর্মী
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images

২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনের এই অ্যাপারেল সামিট হবে ঢাকার একটি হোটেলে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সামিট উদ্বোধন করার কথা৷

যে পাঁচটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল সামিট থেকে নাম প্রত্যাহার করেছে সেগুলো হলো, এইচ অ্যান্ড এম, ইন্ডিটেক্স (জারা), সি অ্যান্ড এ, নেক্সট  ও চিবো৷ আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের জোট ‘এথিক্যাল ট্রেডিং ইনিশিয়েটিভ’ এবং ‘ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন’ নিজেদের ওয়েবসাইটে বিবৃতি দিয়ে শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর অ্যাপারেল সামিট বর্জনের কথা জানিয়েছে৷ এই উদ্যোগ পোশাক খাতে শ্রমিক অধিকার ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ বাড়াবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়৷

ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইনের মিরিয়াম ভ্যান হিউটেন রয়টার্সকে জানান, ‘‘নেতৃস্থানীয় পোশাক ব্র্যান্ডগুলি ঢাকা অ্যাপরেল সামিট বয়কটের মাধ্যমে বিজিএমইএ এবং বাংলাদেশ সরকারকে পরিষ্কারভাবে এই বার্তাই দিতে চায় যে, আটক ব্যক্তিদের মুক্তি না দিলে, তাদের বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে এবং ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের হয়রানি বন্ধ না করলে তারা পোশাক শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য আয়োজিত এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে না৷’’

এইচ অ্যান্ড এম, ইন্ডিটেক্স (জারা), সি অ্যান্ড এ, নেক্সট ও চিবোর মতো বড় ব্র্যান্ড, যারা সব কাপড়ই বাংলাদেশে উৎপাদন করে থাকে, এদের অ্যাপারেল সামিট বর্জন করাটা নজিরবিহীন ঘটনা৷ ব্র্যান্ডগুলো প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে কয়েকশ’ কোটি ডলারের পোশাক কিনে থাকে৷

গত ডিসেম্বরে বেতন বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনের পর প্রায় দেড় হাজার শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে দাবি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের৷ অনেক নেতা-কর্মীকে আটক এবং বেশ কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়নের কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও তাদের দাবি৷

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিজিএমই ভবনে গার্মেন্টস মালিক, শ্রম মন্ত্রনালয় ও শ্রমিকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে৷ জানা গেছে, আশুলিয়ায় যে দেড় হাজার শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের সবার পাওনা দিয়ে দেয়া হবে৷ তারা চাইলে নিজ কারখানায় কাজেও যোগ দিতে পারবেন৷ আর মামলায় যেসব শ্রমিক ও শ্রমিক নেতা আটক আছেন, তাদের জামিনের ব্যবস্থা করা হবে৷ এর ফলে যেসব ক্রেতা অ্যাপারেল সামিট বর্জনের কথা বলেনছেন, তারা সামিটে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘‘আশা করছি, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশি ক্রেতাদের মনে যেসব প্রশ্ন বা সন্দেহ ছিল, তা দূর হবে৷ এবং বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) আয়োজিত ‘ঢাকা অ্যাপারেল সামিটে অংশ নেবে৷’’

সেখানে উপস্থিত শ্রমিক নেতা ও ‘ইন্ডাষ্ট্রি অল’-এর চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘‘২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় শুরু হওয়া ‘ঢাকা অ্যাপারেল সামিট'  সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের স্বার্থে এর আগের দিন শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষে আয়োজিত ঢাকা অ্যাপারেল ওয়ার্কার্স সামিট কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে৷’’

‘‘কয়েকটি ক্রেতার সামিট বর্জনের সিদ্ধান্ত পোশাক শ্রমিকদের তেমন উপকারে আসবে না’’

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কয়েকটি ক্রেতার সামিট বর্জনের সিদ্ধান্ত পোশাক শ্রমিকদের তেমন উপকারে আসবে না৷ আমরা চাই, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ুক৷ এজন্য ক্রেতাদের বেশি দামে পোশাক কিনতে হবে৷ কিন্তু তারা দাম বাড়াতে রাজি হচ্ছে না৷ তাদের কারণে অ্য্যাপারেল সামিট ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা শ্রমিকদেরও ক্ষতি ডেকে আনবে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আশুলিয়ায় যে দেড় হাজার শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের একাংশের চাকরির ব্যবস্থা করেছি আমরা৷ তাদের পাওনা মিটানোর ব্যবস্থা হচ্ছে৷ মামলারও সমাধান হবে৷’’

বিজিএমইএ-র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান রয়টার্সকে বলেন, ‘‘ডিসেম্বরে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা আইন-বহির্ভূত সমাবেশ করেছে৷ তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের ফলে প্রকৃত শ্রমিকরা নয়দিন কাজ করতে পারেনি৷ এমন অবস্থায় আমরা কী করতে পারতাম? আমরা সরকারের দ্বারস্থ হয়েছি৷’’

পাঠক, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সামিট বর্জন নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান