1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকার চুপ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৬ মে ২০১৫

বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া৷ মিয়ানমারও দাবি করেছে, তারা ২০৮জনকে ফেরত পাঠাবে৷ তবে এ নিয়ে বাংলাদেশের কোনো প্রস্তুতি এখনো দৃশ্যমান নয়৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ব্যাপারে সরকারেরই উদ্যোগ নেয়া উচিত্‍ ছিল৷

https://p.dw.com/p/1FWe9
Indonesien Rohingya Flüchtlinge
ছবি: Reuters/R. Bintang

আগামী দু- তিন সপ্তাহের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সে দেশের অভিবাসন কর্মকর্তা৷ ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে আট শতাধিক এবং উত্তর সুমাত্রায় ৫৬ জন বাংলাদেশি রয়েছেন৷

জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অভিবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তা মির্জা ইস্কান্দার বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের সরকার দেশটির সব নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ এ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করবে ইন্দোনেশিয়া৷''

তিনি বলেছেন,‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে তা সম্ভব নয়৷ দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশিদের প্রত্যার্পন করা হবে৷''

তবে ইন্দোনেশিয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেশটিতে থাকতে দেবে৷ তৃতীয় কোনো দেশ তাঁদের আশ্রয় না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকতে পারবে মিয়ানমার ছেড়ে আসা রোহিঙ্গারা৷ সপ্তাহ খানেক আগে সুমাত্রা দ্বীপের পূর্বাঞ্চল থেকে স্থানীয় জেলেরা আট শতাধিত বাংলাদেশি ও এক হাজার রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে৷

বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর এই ঘোষণার পর থেকে এখনো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি৷ তবে সার্বিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন , ‘‘পাচারকারীদের সঙ্গে যাঁরা অবৈধভাবে বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করেছে, তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করা হবে৷''

থাইল্যান্ডে গণকবরের সন্থান পাওয়ার পর সেখানে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল গিয়েছে৷ তবে ইন্দোনেশিয়ায় এখনো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি দল যায়নি৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে সে দেশেরে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচেছ৷ উদ্ধারকৃতদের বাংলাদেশি পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কোনো আপত্তি নেই বলেও জানানো হয়েছে৷

আর ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহায়তা চাওয়া হবে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ মাধ্যমকে কিছু জানায়নি৷ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ও অনেকটা চুপচাপ৷ প্রবাসী কল্যাণ সচিব ইফতেখার হায়দারকে অনেক চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি৷ তবে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ায় উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের ফেরত আনার আগে তাঁদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চায় সরকার৷ সেজন্য একটি প্রতিনিধি দল সেখানে পাঠানো হবে৷ তবে বিষয়টি নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চায়না বাংলাদেশ সরকার৷

এদিকে সাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ২০৮ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমার৷ গত শনিবার এ ঘোষণা দেয়া হয়৷

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ৪২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ভারপা্রপ্ত অধিনায়ক মেজর আবু রাসেল সিদ্দিকি জানিয়েছেন, ২১শে মে বঙ্গোপসাগরের মিয়ানমার জলসীমায় ২০৮ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে মিয়ানমারের নৌবাহিনী৷ মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তিদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছে৷ উদ্ধারকৃতরা বর্তমানে মিয়ানমার নৌবাহিনীর হেফাজতে আছেন৷ মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) চিঠি দিয়ে বিষয়টি বিজিবিকে জানিয়েছে৷

রোববার কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মো. খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার গিয়েছে৷ উদ্ধারকৃতদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্যই গিয়েছেন তাঁরা৷ জানা গেছে, যাঁদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে তাঁদের ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকারের আপত্তি নেই ৷ তবে বাংলাদেশ সতর্কতা অবলম্বন করছে৷ কোনোভাবে যাতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি বলে চালিয়ে না দেয়া হয়- সে বিষয়ে সজাগ থাকতে চায় সরকার৷

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটা চুপচাপ ভাব আছে৷ এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ থাইল্যান্ডে গণকবর আবিস্কার হওয়ার পরই বাংলাদেশ সরকারের সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল, কারণ, দেশের নাগরিকরা কেথাও কোনো বিপদে পড়লে তাঁদের বিপদ থেকে উদ্ধার করা সরকারের দায়িত্ব৷ সরকার সেটা না করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী করে তা দেখার অপেৰা করছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকারেরই উচিত্‍ ছিল ইন্দোনেশিয়ায় উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি নাগারিকদের ফেরত আনার ঘোষণা দেয়া৷ এখন সরকারের উচিত্‍ নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বাংলাদেশিদের দ্রুত ফেরত আনা৷ আর থাইল্যান্ডের পর এখন মালয়েশিয়াতেও গণকবর পাওয়া গেছে৷ তাই আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ৈ অথবা ওইসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে যেসব বাংলাদেশি পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে গিয়ে বিপদে আছেন, তাঁদের তালিকা করে দ্রুত দেশে ফেরত আনা উচিত৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান