1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রশ্নের মুখে সাংবাদিকতা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২০ জুলাই ২০১৩

বাংলাদেশে রাজনৈতিক নাশকতার নিখুঁত ভিডিও ফুটেজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ প্রশ্ন উঠেছে টেলিভিশন চ্যানেল কিভাবে কোনো নাশকতার চিত্র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পায়৷ পুলিশ বলছে, এক শ্রেণির সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতেই এটা ঘটছে৷

https://p.dw.com/p/19Axt
Activists from Bangladesh's Jamaat-e-Islami set fire to a pile of cotton material on a street during the first day of a two-day-long strike to protest against the decision by the country's war crimes tribunal to deliver judgement in the cases involving their top leaders in Dhaka March 3, 2013. Bangladesh deployed troops on Sunday to a town where eight people were killed in clashes between police and Islamist party supporters protesting against the conviction of party leaders on charges stemming from the country's 1971 independence war. Bangladesh has been rocked by protests and counter-protests since January, when a tribunal set up by the government to investigate abuses during the war of independence against Pakistan handed down its first conviction, sentencing a leader of the Jamaat-e-Islami party in absentia to death. REUTERS/Andrew Biraj (BANGLADESH - Tags: POLITICS CIVIL UNREST CRIME LAW)
Bangladesch Proteste Jamaat-e-Islamiছবি: Reuters

প্রশ্নটি উঠছিল গত এক বছর ধরেই৷ তবে গত ছয় মাস ধরে বিষয়টি আরো বেশি করে আলোচিত হচ্ছে৷ প্রশ্ন হলো, কিভাবে সাংবাদিকরা নিয়মিতভাবে হরতালের সময় গাড়ি পোড়ানোসহ নাশকতার নিখুঁত চিত্রগুলি পাচ্ছেন? পেট্রোল বোমা নিয়ে হেঁটে যাওয়া থেকে শুরু করে গাড়ি থামানো, আগুন ধরানো এবং তা পুড়ে যাওয়া – কোনো কিছু বাদ যায় না৷ আর জামায়াতের ডাকা হরতালে পিকেটারদের এমনিতে চোখে না পড়লেও বেসরকারি টেলিভিশনের খবরে তাদের নাশকতার নিখুঁত চিত্র পাওয়া যায়৷

টেলিভিশনে এ ধরনের ঘটনার খবর সংগ্রহ করা কয়েকজন সাংবাদিক স্বীকার করেন যে এ ব্যাপারে তাঁদের আগে থেকেই খবর দেয়া হয়৷ শুধু তাই নয়, সে সব সাংবাদিকরা ক্যামেরা নিয়ে না যাওয়ায় পর্যন্ত পিকেটাররা নাশকতার ঘটনা ঘটায় না৷ এমনকি যদি ক্যামেরা না যায়, তাহলে নাশকতার ঘটনা ঘটানো পর্যন্ত হয় না৷ শুধু টেলিভিশন নয়, পত্রিকার ফটো সাংবাদিকদেরও নাকি নাশকতা সম্পর্কে আগে থেকেই খবর দেয়া হয়৷ বৈশাখী টেলিভিশনের সিনিয়র বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিষয়টি তাঁদের নজরেও এসেছে৷ তবে সবাইকে যে খবর দেয়া হয়, তা নয়৷ নাশকতা সৃষ্টিকারীরা তাদের বিশ্বস্ত সাংবাদিকদের খবর দেয়৷ আর সেই সাংবাদিকদের ধারণ করা ফুটেজ অথবা ছবিই পরে ধার করে নেন অন্যরা৷ এভাবেই চলছে৷

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, তাঁদের কাছে প্রমাণ আছে যে সাংবাদিকরা ক্যামেরা নিয়ে যাওয়ার পর নাশকতার কাজ শুরু হয়৷ তাঁদের সঙ্গে নাকি আগে থেকেই যোগাযোগ করে জানানো হয়, কোথায় এবং কখন নাশকতা করা হবে৷ শুধু তাই নয়, পুলিশ টের পেয়ে যাওয়ায় সমঝোতার ভিত্তিতে নাশকতার স্থানও পরিকর্তন করা হয় অনেক সময়৷ তাই হরতালে পুলিশ এখন সাংবাদিকদের, বিশেষ করে টেলিভিশন সাংবদিকদের অনুসরণ করেন৷ তাতে পুলিশ সুফলও পায়, জানান মনিরুল ইসলাম জানান৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টেলিভিশন সাংবাদিকতা' বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, সাংবাদিকতার এই প্রবণতা গ্রহণযোগ্য নয়৷ এটা অপরাধীদের সঙ্গে এক ধরনের সহযোগিতা৷ কোনো ঘটনা পেয়ে গেলে তা ধারণ করা সাংবাদিকতা৷ কিন্তু কেউ যদি কোনো সাংবাদিককে খবর দিয়ে কাউকে হত্যা করে আর সেই সাংবাদিক যদি পুলিশকে খবর না দিয়ে হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ ধারণ ও প্রচার করেন, তা কোনো বিবেচনাতেই সাংবাদিকতা হতে পারে না৷ সাংবাদিকদের এ থেকে বিরত থাকা উচিত৷ নয়ত যাঁরা এর সঙ্গে যুক্ত তাঁরা অইনি ব্যবস্থার মুখে পড়তে পারেন৷

Symbolbild Kamera Deutsche Welle
এমনকি যদি ক্যামেরা না যায়, তাহলে নাশকতার ঘটনা ঘটানো পর্যন্ত হয় না (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/dpa

বৈশাখী টেলিভিশনের সিনিয়র বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতার এই প্রবণতা সবাইকে মিলে বন্ধ করতে হবে৷ কারণ প্রতিযোগিতার এই সময় কোনো একক প্রতিষ্ঠান তা করতে পারবে না৷ তিনি মনে করেন, এই প্রবণতা বন্ধে সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলোরও সোচ্চার হওয়ায় প্রয়োজন৷ তিনি জানান, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর এই প্রবণতা শুরু হয়েছে৷ অনেক সময় নাশকতা যারা করে, তারাই আবার তা ক্যামেরায় ধারণ করে পাঠিয়ে দেয়৷ আর কোনো কোনো টেলিভিশন চ্যানেল তা নিজস্ব ফুটেজ হিসেবে প্রচারও করে৷

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলামের কথায়, তাঁরা সাংবাদিকদের অনুরোধ করছেন তাঁরা যেন কোনোভাবেই কোনো অপরাধীর সহায়ক শক্তিতে পরিণত না হন৷ কেউ যদি সে রকমটা করেন এবং তার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে, বলেন মনিরুল ইসলাম৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য