1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিকল্প খুঁজে পাচ্ছে না বিএনপি, অবরোধ-হরতালে ক্লান্ত তারাও

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৬ মার্চ ২০১৫

এর মধ্যে ঢাকার পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে, সারাদেশের অবস্থাও আগের মতো নেই৷ মাঝে-মধ্যে বাসে আগুন বা পেট্রোল বোমার খবর পাওয়া গেলেও, বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে না৷

https://p.dw.com/p/1Erb3
Bildergalerie Bangladesch Unruhen
ছবি: DW/M. Mamun

শুক্রবার সফল হবে না ভেবেই গণমিছিলের কর্মসূচিও দেয়া হয়নি৷ বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, ‘‘আমাদের তো আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই৷ আর হরতাল-অবরোধেরও কোনো বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে না৷ তাই হরতাল-অবেরোধ ছাড়া আর কী করতে পারি আমরা?''

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৬ই জানুয়ারি থেকে সারাদেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন৷ এরপর যুক্ত হয় সাপ্তাহিক বন্ধের দু'দিন শুক্র ও শনিবার বাদ দিয়ে টানা হরতাল৷ তবে এই হরতাল-অবরোধের তেমন কোনো প্রভাব এখন আর নেই৷ রাজধানী ঢাকার জীবনযাত্রা স্বাভাবিক৷ সারাদেশের জনজীবনও স্বাভাবিক হয়ে আসছে৷ কিন্তু আতঙ্ক আছে৷ মাঝেমধ্যেই পেট্রোল বোমা হামলা হচ্ছে এখনো৷ যদিও মাঠে নেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা৷

ধারণা করা হচ্ছিল, শুক্রবার বিকেলের সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া হরতাল-অবরোধ শিথিল করে নতুন কোনো কর্মসূচি দেবেন৷ বিএনপি নেতারা বিকল্প কর্মসূচি হিসেবে গণমিছিলের কথাও বলেছিলেন৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি৷ খালেদা জিয়া অবরোধ-হরতাল অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সরকারকে সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন৷

বিএনপির একাধিক নেতা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরাও মনে করছি অবরোধ-হরতাল আর তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না৷ কিন্তু বিকল্প কোনো কর্মসূচির কথাও চিন্তা করা যাচ্ছে না৷ কারণ গণমিছিল বা সমাবেশ বা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে হলে নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকা দরকার৷ হামলা মামলা এবং গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আত্মগোপন করে আছেন৷''

বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভী আটক হন আন্দোলনের শুরুতেই৷ এরপর থেকে আরেক যুগ্ম সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ অজ্ঞাত স্থান থেকে বিবৃতির মাধ্যমে আন্দোলনের ঘোষণা দিতেন৷ গত সপ্তাহ থেকে তিনি নিখোঁজ৷ এখন বরকত উল্লাহ ভুলু দলীয় কর্মসূচি জানাচ্ছেন৷ তাও একই স্টাইলে, অজ্ঞাত স্থান থেকে৷ বিএনপি নেতারা বলেন, ‘‘ইলিয়াস আলীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি৷ সালাহ উদ্দিন আহমেদের কী পরিণতি হবে তা কেউ বলতে পারে না৷ হাইকোর্টের নির্দেশের পরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে আদালতে হাজির করতে পারেনি৷ এখন বরকত উল্লাহ ভুলুর কী হয় তা দেখার বিষয়৷'' তারা বলেন, ‘‘এরপর হয়ত যে নেতা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন, তাঁকেই নিখোঁজ করে দেয়া হবে৷''

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে একটি আন্দোলন চললে তার গতি সমসময় এক থাকে না৷ মানুষ বাইরে বের হচ্ছে৷ যানবাহন কিছু হলেও চলছে৷ তাই বলে আন্দোলন ব্যর্থ বলা যাবে না৷ এই সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ মেয়াদে আন্দোলন চালাতে হবে৷ কারণ সরকার দমন-পীড়ন চালাচ্ছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বিকল্প কর্মসূচি দিতে হলে নেতা-কর্মীদের চাপমুক্ত করতে হবে৷ কিন্তু এই সরকার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হামলা অব্যাহত রেখেছে৷ বাইরে বের হয়ে কর্মসূচি পালনের সুযোগ রাখছে না৷ তাই সময় না আসা পর্যন্ত হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যেতেই হবে৷''

আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘কেউ কেউ সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি গুহার মধ্য থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করছে৷ আমার কথা গুহার মধ্য থেকে কর্মসূচিও তো ঘোষণা করতে দেয়া হচ্ছে না৷ সালাহ উদ্দিন আহমেদকে নিখোঁজ করে দেয়া হয়েছে৷ এখন নতুন যাঁরা বিবৃতির মাধ্যমে কর্মসূচি দিচ্ছেন বা দেবেন, তাঁদের কী পরিণতি হয় কে বলতে পারে?''

তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরকার এমন কঠোর অবস্থানে গেছে যে প্রকাশ্য গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করা যায় না৷ তাই গোপনে বা বিবৃতির মাধ্যমে কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে৷ গণমিছিল বা সমাবেশ তো এই সরকার করতে দেবে না৷ নেতা-কর্মীরা বাইরে বের হলে তো তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হবে৷''

বিএনপির টানা হরতাল-অবরোধের সোমবার ছিল ৬৯ দিন৷ আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘বিকল্প কর্মসূচি আমরা খুঁজে পাচ্ছি না এটা ঠিক নয়৷ সেই কর্মসূচি পালনের সুযোগ দিচ্ছে না সরকার৷''