1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জিনাত, Zinat,Bangladesh, Dinajpur, Uttarbangla

৮ জুলাই ২০১০

দিনাজপুরের লেখিকা এবং সাংবাদিক জিনাত রহমান প্রমাণ করে দিয়েছেন – বাল্য বিবাহ হলেও তাঁর সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি৷ তিনি দৈনিক ‘উত্তর বাংলা'র নির্বাহী সম্পাদক, দিনাজপুর লেখিকা সংঘের সভানেত্রী৷

https://p.dw.com/p/ODme
জিনাত, Zinat,Bangladesh, Dinajpur, Uttarbangla
রাত জেগে নিজেই পত্রিকার পেস্টিং তদারকি করছেন জিনাতছবি: DW/Mahfuzur Rahman

বাংলাদেশে অল্প বয়সে যে মেয়ের বিয়ে হয়, তার ভবিষ্যৎ যে খুব উজ্জ্বল হয় এমন নয়৷ এর ব্যতিক্রমও আছে৷ তাঁদেরই একজন জিনাত রহমান পেয়েছেন গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে ‘বিজয়ী নারী'র পুরস্কার৷ সম্প্রতি বন শহরে আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সম্মেলনেও অংশগ্রহণ করেন তিনি৷

জিনাত পেশায় একজন সাংবাদিক, কলামিস্ট৷ একই সঙ্গে উন্নয়কর্মী, উপন্যাসিক ও ছোট গল্পকার৷ বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর লেখালেখি রয়েছে তাঁর৷ এ নিয়ে কাজও করে যাচ্ছেন৷

জিনাত রহমানের জন্ম নারায়ণগঞ্জে৷ লেখালেখির জন্য বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি৷ ২০১০ সালে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে ‘বিজয়ী নারী'র পুরস্কার পেয়েছেন৷ প্রতি বছর গ্রামীণফোন দশ জন নারীকে এই পুরস্কার দিয়ে থাকে৷ পুরস্কার সম্পর্কে তাঁর অনুভূতি: ‘‘প্রথমে আমি পত্রিকায় এর বিজ্ঞাপন দেখি৷ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে সব মহিলারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, তাদের কষ্টের কথা সংগ্রামের কথা লেখার জন্য৷ আমি ভাবি যে আমি নিজেওতো একজন সংগ্রামী নারী৷ তখন আমি লেখা জমা দেই৷ লেখাটি নির্বাচিত হলে গ্রামীণফোন আমাকে তা জানায়৷ এরপর তারা আমার বায়োডাটা থেকে শুরু করে আমার বিভিন্ন পুরস্কার, আমার সংগ্রাম – সবকিছু সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চায়৷ তখন এসব তথ্য আমি ই-মেলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেই৷ পাঠানোর পরে আমাকে একটি তারিখ দেওয়া হয়৷ সেই তারিখে ঢাকার শেরাটন হোটেলে আমি এই পুরস্কার গ্রহণ করি৷''

জিনাত, Zinat,Bangladesh, Dinajpur, Uttarbangla
দৈনিক উত্তরবাংলার দপ্তরে কর্মব্যস্ত জিনাতছবি: DW/Mahfuzur Rahman

লেখালেখির শুরু যেভাবে

গ্রামে বড় হয়েছেন, অনেক ছোটবেলায় বিয়ে হয়েছিল জিনাত রহমানের৷ এরপরও ঘর-সংসার, স্বামী সন্তানের পাশাপাশি লেখালেখি বা সাংবাদিকতার কাজে তিনি ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন৷ কীভাবে শুরু হল ? প্রেরণা, উৎসাহ পেলেন কোথা থেকে ? জিনাত হেসে বললেন, ‘‘আমিতো সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনাও করিনি, জেনারেল লাইনেই পড়াশোনা করেছি৷ আমার শ্বশুর ইত্তেফাকে কাজ করতেন৷ তাঁর হাত ধরেই আমার এই পেশায় আসা৷ তিনি একজন কবিও ছিলেন৷ নাম নূরুল আমিন৷ তাঁর হাত ধরেই আমি লেখালেখির জগতে এসেছি৷''

গ্রামে বাল্য বিবাহ এখনো টিকে আছে

বাল্য বিবাহের শিকার হয়েছিলেন জিনাত রহমান৷ কিন্তু তারপরও তিনি পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন৷ নিজের ভেতর যে স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন তিনি৷ তাঁর স্বপ্ন গ্রাম বাংলার নারীদের সুশিক্ষা৷ আর সেজন্যই তিনি তাঁর গ্রামে একটি স্কুল এবং মসজিদ প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেছেন৷ প্রশ্ন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বাল্য বিবাহ কি এখনো টিকে আছে ? জিনাত রহমান জানালেন, ‘‘ শহরে যদিও অনেকটাই কমে গেছে, বিভিন্ন এনজিও বা সরকারও বাল্য বিবাহ রোধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ কিন্তু গ্রামে এখনো এটা আছে৷ বাল্য বিবাহ নিয়ে গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন জায়গায় আমি কাজ করছি, সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি, বাল্য বিবাহ রোধ করার জন্য আমি পুলিশ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছি– প্রশ্ন করেছি, কেন অল্প বয়সে মেয়েদের দিয়ে দিচ্ছ ? এর অবশ্য একমাত্র কারণ হল, নারীর শিক্ষার অভাব, অর্থনৈতিক মুক্তি নেই৷ নিরাপত্তার কারণেই দেখা যাচ্ছে গ্রামে বাল্য বিবাহ এখনো টিকে আছে৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক